প্রতিযোগিতার আগে করমর্দন মধুর। মাস্ক নেই কারও। নিজস্ব চিত্র।
জনসংযোগ বাড়াতে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন নতুন নয়। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় জঙ্গীপুরের সাংসদ থাকাকালীন জনসংযোগ বাড়াতে চালু করেছিলেন ‘কামদাকিঙ্কর ফুটবল টুর্নামেন্ট’। সেই পথে হাঁটছেন বর্তমান শাসকদলের নেতা-নেত্রীরাও। কিন্তু করোনাকালে সেই প্রতিযোগিতায় মাস্ক পরা মুখ বা সামাজিক দূরত্ববিধির তেমন দেখা মিলল না।
মঙ্গলবার থেকে নওদায় শুরু হয়েছে ‘সভাধিপতি কাপ।’ যার উদ্যোক্তা জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোশারফ হোসেন ওরফে মধু-ই। মোশারফ নিজের ব্লক নওদার বিভিন্ন মাঠে প্রায় এক মাস ধরে চলবে এই টুর্নামেন্ট। দশটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বিভিন্ন মাঠে অনুষ্ঠিত হবে খেলা। আর প্রতিটি দল তৈরি করেছে সেই এলাকার পঞ্চায়েত। বিভিন্ন মাঠে খেলা দেখতে মাঠের চারপাশে ভিড় জমাচ্ছেন ক্রীড়াপ্রেমী দর্শকও। খেলার মাঠে সব মতাদর্শের লোকেরাই হাজির থাকেন। ফলে তাদের মন টানতে সুযোগ হাতছাড়া করতে নারাজ শাসকদলের নেতা-নেত্রী, জনপ্রতিনিধিরা।
বিরোধীদের দাবি ভোট বৈতরণী পার হতে শাসকদল বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। নওদা ব্লক কংগ্রেস সভাপতি সুনীল মণ্ডল বলেন, ‘‘খেলার মাঠে ভিড় দেখে বোঝার উপায় নেই যে, করোনা আবহে খেলা হচ্ছে। করোনা বিধি মেনে স্কুল বন্ধ। ইদ পালন করা যায়নি। কিন্তু ভর্তি মাঠে ফুটবল হচ্ছে। শাসকদলের নেতারা যা-ই করুন প্রশাসনের নজরে সেগুলো আসে না।’’
সভাধিপতি মোশারফ হোসেন বলেন, ‘‘আমরা মাস্ক পরেই মাঠে খেলা দেখতে আসার জন্য প্রচার করেছি। তবুও উৎসাহী দর্শক খেলার মাঠে ভিড় করেছেন। সেক্ষেত্রে দুরত্ব বজায় রাখা মুশকিল হয়ে পড়ছে।’’ মোশারফ বলেন, ‘‘করোনা আবহে মানুষ কার্যত একঘেয়ে জীবনে ব্যাজার হয়ে পড়েছে। যুব সম্প্রদায়কে মাঠমুখী করতে এবং প্রতিটি অঞ্চলের মানুষকে ভাল ফুটবল খেলা উপভোগ করার সুযোগ করে দিতেই এই টুর্নামেন্ট।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আমরা মানুষের সঙ্গে থেকে মানুষের কাজ করি। ফলে জনসংযোগ বাড়াতে আমাদের এসবের প্রয়োজন নেই।’’
মঙ্গলবার নওদার শ্যামনগর হাইস্কুল মাঠে শুরু হয় এই টুর্নামেন্ট। টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন সভাধিপতি মোশারফ হোসেন ছাড়াও ভারতীয় ফুটবল দলের প্রাক্তন খেলোয়াড় রহিম নবী, মেহতাব হোসেন ও দীপঙ্কর রায়। ওই দিন মাঠে ছিলেন মধু ঘনিষ্ঠ জেলা পরিষদের সদস্য সঞ্জয় হালদার, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিশ্বজিৎ ঘোষ ও একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানকে। তবে ওই দিন খেলার মাঠে দেখা যায়নি নওদারই বাসিন্দা জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা সাংসদ আবু তাহের খান, স্থানীয় বিধায়ক সাহিনা মমতাজকে।
তৃণমূলের জেলার এক শীর্ষ নেতা বলেন, ‘‘‘দাদা’ এখন গেরুয়া শিবিরে। তাই নিজের পায়ের তলার মাটি শক্ত করতে মরিয়া হয়ে সভাধিপতি পাড়ায় পাড়ায় ফুটবলে মেতেছেন। করোনা বিধিও মানছেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy