—ফাইল চিত্র।
যে জনপদ থেকে নদিয়া জেলার নামকরণ হয়েছে বলে পণ্ডিতেরা অনেকে মনে করেন, সেই চৈতন্যধাম নবদ্বীপ কি ক্রমশ প্রশাসনিক দিক থেকে গুরুত্বহীন হয়ে পড়ছে?
প্রশ্নটা উঠছে অনেক দিন ধরেই। স্বাধীনতার পরে দেশের আইনসভার প্রথম সাধারণ নির্বাচনে নদিয়া জেলার এক মাত্র লোকসভা আসনটি নবদ্বীপ নামেই ছিল। কিন্তু পরবর্তী কালে নবদ্বীপ লোকসভা কেন্দ্রের কোনও অস্তিত্ব রইল না।
নবদ্বীপকে মহকুমা করার দাবিও বহুকালের। সেই সাতের দশক থেকে এ নিয়ে কম দৌড়াদৌড়ি হয়নি। কিন্তু নিট ফল শূন্য। উল্টে চৈতন্য জন্মস্থানের দাবিদার হয়ে আত্মপ্রকাশ করছে গঙ্গার পূর্বপাড়ের নবীন জনপদ মায়াপুর। এ বিষয়ে সত্য উদ্ঘাটনের তেমন উদ্যোগ কোনও তরফেই হয়নি এত দিনেও।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জেলা সফরের প্রাক্কালে এই সব উত্তরহীন প্রশ্নগুলি ফের উত্থাপন করে নজর টানার জন্য সোশ্যাল মিডিয়াকে বেছে নিয়েছেন নবদ্বীপের কিছু মানুষ। সোমবার সকালে নবেন্দু সাহা নামে এক নাগরিক ফেসবুকে নবদ্বীপ কেন্দ্রিক এক গ্রুপে একটি পোস্ট দেন। তাতে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দু’টি আবেদন জানানো হয়েছে। প্রথম আবেদন: ‘‘...প্রশাসনিক গুরুত্ব দিয়ে নবদ্বীপকে আলাদা মহকুমার মর্যাদা দিলে ভাল হয়।’’ দ্বিতীয় বক্তব্য: ‘‘নবদ্বীপধাম শ্রীচৈতন্যদেবের জন্মস্থান। মায়াপুর বা প্রাচীন মায়াপুর এ সব তৈরি করা নাম। শ্রীচৈতন্যদেব জন্মগ্রহণের সময়ে এমন নামে কোনও জায়গা বা গ্রাম কিছুই ছিল না সবই কল্পিত। ...নবদ্বীপ নিয়ে ইতিহাসভিত্তিক, পুরাতত্ত্বের নজরে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় ভাবে যাতে সমীক্ষা হয় তার নির্দেশ দিতে অনুরোধ জানাই।”
সোমবার সকালে দেওয়া এই পোস্ট সন্ধ্যা পর্যন্ত শতাধিক মানুষ ‘লাইক’ করেছেন। ‘শেয়ার’ করেছেন অনেকে। পক্ষে-বিপক্ষে নানা মন্তব্যও পোস্ট হয়েছে। তবে বেশির ভাগ মানুষই ওই দু’টি আবেদনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
বছর কয়েক আগে এমনই এক প্রশাসনিক সভায় নবদ্বীপে এসে এই শহরকে ‘হেরিটেজ সিটি’ করার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ চলছে। পুরপ্রধান বিমানকৃষ্ণ সাহা বলেন, “হেরিটেজ সিটির জন্য আমাদের তরফে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের কাজ শেষ। এখন ফাইল গিয়েছে খড়্গপুর আইআইটি-র হাতে।”
নবেন্দুদের মতে, শ্রীচৈতন্যের জন্মস্থানে অষ্টাদশ শতকে দেওয়ান গঙ্গাগোবিন্দ সিংহের তৈরি করা পাথরের একটি বড় মন্দির ছিল। গঙ্গার গতি পরিবর্তন ও ভাঙনে তলিয়ে যাওয়া সেই মন্দিরের স্থিতি সরকারি ভাবে উদ্ধার করা প্রয়োজন। নবদ্বীপে ইতিহাস গবেষণার জন্য সবই মজুত আছে। ঐতিহাসিক সমীক্ষার কাজে কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy