পৌষ-দুপুরে: বহরমপুর। ছবি: গৌতম প্রামাণিক
টানা তিন দিন দেখা মেলেনি সূর্যের। বৃহস্পতি, শুক্রবার ভোরে এক পশলা বৃষ্টিও হয়েছে। মেঘলা আকাশ আর তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ছিল হিমেল হাওয়া। শনিবার সকালে হালকা রোদ উঠলেও ঠান্ডা আরও জাঁকিয়ে পড়তে শুরু করেছে। গরম পোশাকেও যেন বাগ মানছে না শীত। একটু উষ্ণতার খোঁজে তাই কেউ রাস্তার পাশেই আগুন জ্বেলে সেঁকে নিচ্ছেন হাত-পা। কেউ আবার চা শেষ হয়ে গেলেও ঠায় দাঁড়িয়ে থাকছেন চায়ের দোকানের উনুনের পাশে। ঘর গরম রাখতে কেউ ছুটছেন হিটারের দোকানে। কেউ আবার মাসের শেষেও একটু ‘ঝুঁকি’ নিয়েই কিনে ফেলেছেন গিজার।
খাগড়ার অনিমেষ দত্ত বলছেন “ভেবেছিলাম, এ বারেও জানুয়ারির মাঝামাঝি ঠান্ডাটা জাঁকিয়ে পড়বে। কিন্তু শেষ ডিসেম্বরও যে এমন ভেলকি দেখাবে, বুঝতে পারিনি। মাথা থেকে পা পর্যন্ত শীতপোশাকে মুড়ে ফেলেও ঘরে শান্তি পাচ্ছিলাম না। বাধ্য হয়ে রুম হিটারটা কিনেই ফেললাম।’’ পঞ্চাননতলার ফিরদৌসি বেগমও উষ্ণতার খোঁজে একই পথে হেঁটেছেন। ফিরদৌসি বলছেন “এখনও প্রায় দু’মাস শীত থাকবে। ঠান্ডা যদি এমনই থাকে তা হলে বেশ কষ্ট পেতে হবে। সেটা ভেবে একটা রুম-হিটার কিনেই নিলাম।’’
পৌষের বিরাট ব্যাটিংয়ের বহর দেখে গোরাবাজারের রতন দে-র মতো অনেকেই গিজার কিনতে বাধ্য হয়েছেন। এত বছর জল গরম করে কাজ চালিয়ে নিলেও রতন এখন বলছেন, ‘‘মাসের শেষে কিছু টাকা বেরিয়ে গেল ঠিকই, কিন্তু এই ঠান্ডায় আর পেরে উঠছিলাম না। তাই বহু ভেবে গিজারটা কিনেই ফেললাম।’’
এ বছর ঠান্ডা জাঁকিয়ে পড়তেই শীতের পোশাক, রুম হিটার, গিজার বিক্রিও বেড়েছে বলেই জানাচ্ছেন বহরমপুরের ব্যবসীয়ারা। কাদাইয়ের একটি দোকানের মালিক নিতাই বসাক বলেন “রুম হিটার কিংবা গিজারের পাশাপাশি ওয়াশিং মেশিনের চাহিদাও বেড়েছে।’’
শহরের দোকান, মলের পাশাপাশি বাইরে থেকে এসে যাঁরা শীতবস্ত্রের পসরা সাজিয়ে বসেছেন তাঁদের অস্থায়ী দোকানেও দেদার ভিড় হচ্ছে। খাগড়ার এক বস্ত্র ব্যবসায়ী প্রবীণ গুলগুলিয়া বলছেন “শীতের পোশাক প্রত্যেক বছরেই বিক্রি হয়। এ বার অনেক আগে থেকেই শীতপোশাকের বিক্রি বেড়েছে।’’ গোরাবাজারের ব্যবসায়ী সৌরভ সাহা শীতের সময় লেপ, তোশক, কম্বল, বালাপোশ বিক্রি করেন। তিনি বলছেন, “লেপ তৈরি করতে সময় লাগে। ফলে এখন কম্বলের চাহিদা বেড়ে গিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy