Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Krishnanagar

ইটের রাস্তাই নেই, পুরবাসীর মুখে অন্য কথা

রাজ্যের প্রাচীন পুরসভাগুলির একটি। সেই সঙ্গে জেলা সদরও। তবু ইটের রাস্তায় পিচ পড়েনি বহু ওয়ার্ডে।

১৯ নম্বর ওয়ার্ডের নির্মলনগরে।

১৯ নম্বর ওয়ার্ডের নির্মলনগরে।

সুস্মিত হালদার
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:৫৬
Share: Save:

রাজ্যের প্রাচীন পুরসভাগুলির একটি। সেই সঙ্গে জেলা সদরও। তবু ইটের রাস্তায় পিচ পড়েনি বহু ওয়ার্ডে। বর্ষাকাল এলে পিছলে পড়ে যাওয়ার ভয়ে থাকেন অনেকে। মোটরবাইক, সাইকেল নিয়ে যাতায়াত এড়িয়ে চলেন। তেমনই অভিযোগ পুরবাসীদের একাংশের। অভিযোগ, বিভিন্ন ওয়ার্ডের ভিতর দিয়ে চলে যাওয়া রাস্তার বেহাল অবস্থা নিয়েও।

জেলার রাজনৈতিক মহলের ধারণা পুরভোটে বিষয়টি নিয়ে বিরোধীরা সরব হতে পারে। কেউ কেউ এক ধাপ এগিয়ে বলছেন, এলাকা দেখে উন্নয়ন হওয়ায় এই অবস্থা। পুরসভা অবশ্য তা মানতে নারাজ। কর্তৃপক্ষের দাবি, পুর-এলাকায় সব রাস্তাই পিচের। ইটের রাস্তার কোনও খবর তাঁদের কাছে নেই। রাস্তা সংস্কার না হওয়ার অভিযোগও ঠিক নয়। কোথাও কোনও সমস্যা সঙ্গে সঙ্গে তা সারাই করা হয়।

১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাচ্চুপল্লির বাসিন্দাদের একাংশ অবশ্য বৃষ্টি নামলে চিন্তায় পড়েন। তাঁরা জানান, ওয়ার্ডের অনেক রাস্তাই এখনও ইটের। পিচ পড়েনি। বর্ষাকালে পিছল রাস্তায় সাইকেল নিয়ে পড়ে যাওয়ার ভয় রয়েছে। তাঁদের দাবি, রাস্তা পিচ দিয়ে তৈরি করে দেওয়া হোক। ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ঘূর্ণীর বিন্দুপাড়া লেনের বাসিন্দাদের একাংশও জানাচ্ছেন, ইটের রাস্তায় পিচ পড়েনি সেখানেও। এখন আবার সেই ইটের চিহ্নও খুঁজে পাওয়া কঠিন। চারাবাগান, জংলিতলা, মদন মাঠ এলাকার রাস্তায় এখনও পিচ পড়েনি। ২ নম্বর ওয়ার্ডের ঘরামিপাড়া, আনন্দনগর, পাঁচবেড়িয়া, মেছুয়াপাড়ার রাস্তাতেও পিচ পড়েনি বলে দাবি বাসিন্দাদের একাংশের।

অভিযোগ রয়েছে রাস্তার সংস্কার নিয়েও। পুরবাসীদের একাংশ জানান, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের ডন বসকো স্কুলের সামনে দিয়ে যে রাস্তা গিয়েছে স্থানে স্থানে সেটির পিচ উঠে গিয়েছে। একই অবস্থা ১৪ নম্বর ওয়ার্ডেও। সংস্কার না হওয়ায় ওই ওয়ার্ডের এক বেসরকরি নার্সিংহোম থেকে অক্ষয় বিদ্যাপীঠ স্কুল পর্যন্ত রাস্তাটি, অনন্তহরি মিত্র রোড, আমিনবাজার মোড় থেকে রায়পাড়ার উপর দিয়ে ক্ষৌণিশপার্ক পর্যন্ত রাস্তাটি বেহাল হয়ে পড়েছে। ১৩, ১৪ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের ভিতরের রাস্তাটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। স্টেশন থেকে বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত একটা বড় অংশের মানুষ এই রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করেন। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মিলন সরকার বলছেন, “মানলাম নতুন বসতি এলাকার রাস্তা না হয় পিচের হয়নি। কিন্তু শহরের প্রধান ওয়ার্ড গুলোর ভিতরের রাস্তার অবস্থা কেন এমনটা হবে? পুরসভার উচিত বিষয়টিতে গুরুত্ব দেওয়া। রাস্তাগুলো সংস্কার করা।”

পুর-কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন, শহরের সব রাস্তাই পিচের অথবা সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই করা। কোথাও ইটের রাস্তা নেই। তাঁদের যুক্তি, শহরের প্রান্তিক এলাকায় নতুন বসতি হচ্ছে। সেই বসতিতে যে রাস্তা আছে তার কিছু ইটের হতে পারে। সেই সব বসতির কোনও কোনওটি পঞ্চায়েত এলাকার মধ্যে পড়ে। অনেকেই ভুল করে তা পুর এলাকা বলে মনে করেন। কাউন্সিলরদের একাংশের দাবি, পঞ্চায়েত এলাকা হওয়ায় তাঁরা সেই সব রাস্তায় পিচ ফেলতে পারেননি। আর মূল শহরের রাস্তাগুলি বেহাল বলে মানতে নারাজ তাঁরা। তাঁদের দাবি, সেই সব রাস্তা ‘ম্যাস্ট্রিক্স’ দিয়ে তৈরি। যদি কোথাও সামান্য সমস্যা হয়, তা হলে সঙ্গে সঙ্গে তা সংস্কার করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE