তৈরি হয়েছে বাড়ি। নিজস্ব চিত্র।
এই হাসপাতালে কয়েক বছর আগেই সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে মেডিক্যাল কলেজ তৈরির পরিকল্পনা হয়েছিল। তা বাস্তবায়িত হয়নি, উল্টে ধুবুলিয়া যক্ষ্মা হাসপাতালে বিঘের পর বিঘে জমি দখল হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ।
সেখানে সকলের চোখের সামনে দিব্যি একের পর এক বাড়ি তৈরি হয়ে যাচ্ছে, এমনকি ধুবুলিয়া ৮ নম্বর কলোনি লাগোয়া এলাকায় লোকজন রীতিমতো জমিতে সরষে ও নানা রকম আনাজের চাষ করছেন।
রেল বস্তি থেকে উচ্ছেদ হয়ে আসা বহু লোক অস্থায়ী আবাস তৈরি করে হাসপাতালের জমি দখল করে বসেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শাসকদলের কিছু স্থানীয় নেতার সাহায্যে তাঁরা ভোটার তালিকায় নাম তুলে ফেলেছেন। অভিযোগ, তাঁদের অনেকেই এমন দাবি করছেন যে, ভোটার কার্ড তৈরি হয়ে গেলে আর তাঁদের জমি থেকে উচ্ছেদ করে সরকার ওই জায়গায় কোনও প্রকল্পই করতে পারবে না।
স্থানীয় তৃণমূল নেতা প্রসেনজিৎ গুহ এ ব্যাপারে বলেন, ‘‘বিষয়টি সত্যিই উদ্বেগজনক। এ নিয়ে হাসপাতালের সুপারকে একাধিক বার জানানো হয়েছে। কিন্তু উনি নিরুত্তাপ। অবৈধ দখলদারদের উৎখাতের ব্যাপারে তাঁর কোনও হেলদোল নেই।’’ সুপার বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে না-চাইলেও রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ওই হাসপাতাল নিয়ে অন্য পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। কিছু দিনের মধ্যেই কাজ শুরু হবে। দখলদারদের বিষয়টি শুনেছি। আমরা হাসপাতালের জমি পাঁচিল দেওয়ার কাজ শুরু করব। বেআইনি দখলদারদের সেই সময় উৎখাত করা হবে।’’ স্থানীয় বিধায়ক তথা কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাসের কথায়, ‘‘ ওখানে খাদ্য দফতরের বড় গুদাম হবে। মেডিক্যাল কলেজ তৈরির প্রক্রিয়াও এখনও পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। ফলে জমি দখল হলে সমস্যা হবেই। কেউ যাতে ওখানকার জমি দখল করতে না-পারে সে বিষয়ে পদক্ষেপ করা হবে।’’
প্রায় পাঁচ দশক আগে ধুবুলিয়াতে যক্ষ্মা হাসপাতাল তৈরি হয়। ভারতে যক্ষ্মা রোগের প্রাবল্য মারাত্মক। যক্ষ্মার চিকিৎসায় কেন্দ্র আলাদা গুরুত্ব দিচ্ছে। কিন্তু এই প্রায় সাড়ে সাতশো শয্যার যক্ষ্মা হাসপাতাল ধুঁকছে। এই মুহূর্তে জনা পনেরো রোগী সেখানে ভর্তি। হাসপাতালের একাধিক ভবন ভেঙে পড়ছে। এখন যেহেতু যক্ষ্মার চিকিৎসা বাড়িতে বসেই ডটস প্রক্রিয়ায় হয়ে যায়, তাই রোগীকে বেশিদিন হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয় না। সরকার চাইছে, প্রায় ৩০০ একর জমিতে তৈরি ওই যক্ষ্মা হাসপাতালে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে (পিপিপি মডেল) মেডিক্যাল কলেজ বা অন্য কোনও প্রতিষ্ঠান তৈরি হোক। এক লপ্তে এতটা জায়গা জাতীয় সড়কের ধারে পাওয়া কঠিন। প্রশাসনিক কর্তারাই জানিয়েছেন, উদ্বাস্তু-অধ্যুষিত ধুবুলিয়ায় এত দিনেও তেমন কোনও উন্নয়ন হয়নি। হাসপাতালের জমিতে কোনও প্রতিষ্ঠান তৈরি হলে এলাকার হাল পাল্টে যাবে। এর জন্য যত দ্রুত সম্ভব সরকারকে দখলদার ওঠাতে অভিযান চালাতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy