বাজেয়াপ্ত টোটো। নিজস্ব চিত্র
টোটো চুরির তদন্তে নেমে সাগরদিঘি থানার পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে ফের একজনকে গ্রেফতার করল সাগরদিঘির জগদ্দল গ্রাম থেকে। ধৃতের নাম আনসারুল শেখ। তার বাড়ি থেকে ওইদিন রাতেই উদ্ধার হয়েছে আরও ৭টি চোরাই টোটো। এই নিয়ে এক সপ্তাহে সাগরদিঘিতে ১২টি চোরাই টোটো উদ্ধার করল পুলিশ।
গত শনিবার রাতে সাগরদিঘির চারগাছি গ্রাম থেকে চোরাই টোটোর বেচাকেনার কারবারে যুক্ত থাকার অভিযোগে সেলিম চৌধুরী নামে একজনকে প্রথম গ্রেফতার করেছিল সাগরদিঘি থানার পুলিশ। তার বাড়িতে তল্লাশিতে মেলে ৫টি টোটো। তাকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদেই জানা যায় জগদ্দলের আনসারুলের নাম। পুলিশ জানায়, আনসারুলের ভাই টোটো চালক। তাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। আনসারুল নিজে একজন ইলেকট্রিসিয়ান হিসেবে গ্রামে পরিচিত। মাঝেমধ্যেই গ্রামে পুরনো টোটো এনে বিক্রিও করত সে সস্তায়। সে প্রতিবেশীদের বলত, অন্য জায়গা থেকে কিনে এনে টোটোগুলি বিক্রি করে। অনেকেই এরকম গাড়ি কেনাবেচা করে বলে গ্রামের লোকজনও কিছু সন্দেহ করেননি। তারই সুযোগ নিয়ে বাড়িতেই টোটো চুরি চক্রের কারবার ফেঁদে বসেছিল সে। পুলিশের দাবি, আনসারুলই টোটো চুরি চক্রের মূল পাণ্ডা। বেশ কিছুদিন ধরেই খবর ছিল সাগরদিঘি থানার পুলিশের কাছে এই চোরাই টোটোর কারবারের। তাই পুলিশের নজরদারি ছিলই। গত শনিবার সুনির্দিষ্ট ভাবে পুলিশের কাছে খবর আসে, একটি চোরাই টোটো বিক্রির জন্য চারগাছির সেলিম বাড়ি থেকে বেরিয়ে জগদ্দল গ্রামের পথে যাচ্ছে। সাগরদিঘি থানার পুলিশ তখন সেই রাস্তায় যাওয়ার পথে খালি টোটো চালিয়ে আসতে দেখে সেলিমকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে সে দাবি করে টোটোটি তারই। পরে পুলিশ সেলিমকে আটক করে তার বাড়ি নিয়ে যায়। বাড়ির উঠোনে তখন পরপর রাখা নীল রঙের চারটি টোটো। তা দেখে পুলিশ টোটোর চোরাই কারবার সম্পর্কে নিশ্চিত হয়। গ্রামের মধ্যে একেবারে সাদামাটা জীবনযাপন করা যুবক যে চুরি চক্রে জড়িত, তা বিশ্বাসই করতে পারেননি সেলিমের পড়শিরা। বছর দুই আগে সে কাজের জন্য সৌদি আরবেও গিয়েছিল। কয়েকমাস সেখানে থেকে অসুস্থ হয়ে পড়ায় দেশে ফিরে আসে। গ্রামে ফিরে সেই প্রথম টোটো কিনে এনে চালাতে শুরু করে। টোটো চালক হিসেবে সবাই চিনত তাকে। তাই চোরাই টোটোর কারবারে জড়িত থাকার ঘটনায় তাকে হাতেনাতে পুলিশ গ্রেফতার করায় অবাক হয়ে যান চারগাছি গ্রামের বাসিন্দারা। সেলিমের সঙ্গী হিসেবে আনসারুলকে গ্রেফতার ও তার বাড়ি থেকে ৭টি চোরাই টোটো উদ্ধারের ঘটনাতেও জগদ্দল গ্রামের মানুষজন হতবাক। সে পুরনো টোটো বেচাকেনা করে বলেই এতদিন সকলে জানতেন। জঙ্গিপুরের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, টোটো চুরি করে বিক্রির এই কারবারে সাগরদিঘিতে দু’জন ধরা পড়ল এ পর্যন্ত। উদ্ধার হয়েছে ১২টি চোরাই টোটো। চোরাই টোটো আরও কোথায় কাকে বিক্রি করা হয়েছে তার খোঁজ চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy