Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

রাজেশের ফোন হাতে চায় পুলিশ

গোপালনগর গ্রামের কালীতলা পাড়ার রাজেশ দিনমজুরি করতেন। স্থানীয় সূত্রের খবর, গ্রামেরই মেয়ে প্রিয়াঙ্কা ঘোষের সঙ্গে তাঁর প্রণয়ের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। কিন্তু প্রিয়াঙ্কার বাড়ির লোক তা মানতে পারেননি।

রাজেশ রায়। নিজস্ব চিত্র

রাজেশ রায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
হোগলবেড়িয়া  শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:৪৮
Share: Save:

নিহতের বাড়ির লোক তাদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করায় বাবা-মা ও নাবালিকা মেয়েকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কিন্তু হোগলবেড়িয়ার গোপালনগর গ্রামের বছর পঁচিশের রাজেশ রায় যে খুনই হয়েছেন তা পুলিশ হলফ করে বলতে পারছে না। বরং রাজেশের মোবাইল ফোনের খোঁজ চলছে। কিন্তু অভিযুক্ত আর কাউকে বুধবার রাত পর্যন্ত পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি।

গোপালনগর গ্রামের কালীতলা পাড়ার রাজেশ দিনমজুরি করতেন। স্থানীয় সূত্রের খবর, গ্রামেরই মেয়ে প্রিয়াঙ্কা ঘোষের সঙ্গে তাঁর প্রণয়ের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। কিন্তু প্রিয়াঙ্কার বাড়ির লোক তা মানতে পারেননি। রাজেশের মা পুলিশকে জানিয়েছেন, সোমবার সন্ধ্যায় একটি ফোন পেয়ে তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। পরে প্রিয়াঙ্কার দাদা ও বাবা তাঁদের বাড়িতে এসে চড়াও হন। তাঁদের অভিযোগ ছিল, প্রিয়াঙ্কাকে আর রাজেশ পালিয়ে গিয়েছেন। তাঁদের খোঁজে লোকজন বাইক নিয়ে বেরিয়েছে। এর পরে রাত ৩টে নাগাদ তাঁদের কাছে খবর পেয়েই রাজেশের বাড়ির লোকেরা গ্রামের নয়ন দেবনাথের আমবাগানে গিয়ে গাছ থেকে ওড়নার ফাঁসে তাঁর মৃতদেহ ঝুলতে দেখেন।

রাজেশের পরিবারের তরফে প্রিয়াঙ্কা, তাঁর বাবা প্রভাস, মা মনা, দাদা পীয়ূষ, কাকা সুভাষ ও অমর ঘোষ-সহ আট জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। তার ভিত্তিতে মঙ্গলবারই পুলিশ প্রিয়াঙ্কা ও তাঁর বাবা-মাকে গ্রেফতার করে। এ দিন তেহট্ট আদালতে তোলা হলে প্রিয়াঙ্কার বাবা-মাকে পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রিয়াঙ্কা নাবালিকা হওয়ায় তাকে জুভেনাইল কোর্টে হাজির করানো হয়েছিল। পুলিশ সূত্রের খবর, সেখান থেকে তাকে হোমে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ২৪ সেপ্টেম্বর তাকে ফের আদালতে তোলা হবে।

খুনের মামলা শুরু হলেও দু’একটি বিষয়ে ধন্দ রয়েছে তদন্তকারীদের। যেমন, সন্ধ্যায় প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ তুলে প্রভাস ও তাঁর ছেলে যেখানে রাজেশদের বাড়ি চড়াও হলেন, সেখানে প্রিয়াঙ্কার নামে খুনে যুক্ত থাকার অভিযোগ কতটা টিকবে? প্রিয়াঙ্কার বাবা প্রভাস ঘোষ নিজে প্রতিবন্ধী। দাঁড়াতে পারেন না। তাঁর পক্ষে খুন করা কতটা সম্ভব? তবে তিনি খুনের ষড়যন্ত্রে অবশ্যই শামিল হতে পারেন। এমন কি হতে পারে যে কোনও চাপের মুখে প্রিয়াঙ্কার ওড়না গলায় জড়িয়ে আত্মহত্যা করেছেন? নাকি তাঁকে খুন করে টাঙিয়েই দেওয়া হয়েছে? কেননা ঘটনাস্থলে প্রিয়াঙ্কার সাইকেল আর দু’টি মোটরবাইক পেয়েছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রের খবর, আপাতত প্রভাস আর মনাকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হচ্ছে। তবে দু’টি মোবাইল ফোন খুঁজে পেলে তদন্ত অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। রাজেশের মা ভক্তিলতা রায় পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর ফোন কেড়ে নিয়ে গিয়েছে প্রয়াঙ্কার বাবা-দাদা। সেটির এখনও হদিস মেলেনি। পাওয়া যায়নি রাজেশের মোবাইল ফোনও। অন্তত সেটি খুঁজে পেলেও ‘কল লিস্ট’ পরীক্ষা করে বোঝা যাবে, কার ফোন পেয়ে রাজেশ তড়িঘড়ি বাড়ি ছেড়ে বেরিয়েছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rajesh Roy Murder Mobile Phone
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE