Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

রাজীবের সামনেই কোন্দল

জেলা-পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পাওয়ার পর এই প্রথম নদিয়ায় এসেছিলেন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় সূত্রের খবর, তাঁর মূল উদ্দেশ্য ছিল, তৃণমূলের অন্দরের ফাটল আটকে বিজেপি-র মোকাবিলায়্য নতুন করে চাঙ্গা করে তোলা

তখনও চলছে বৈঠক। শনিবার কল্যাণীতে। ছবি: প্রণব দেবনাথ

তখনও চলছে বৈঠক। শনিবার কল্যাণীতে। ছবি: প্রণব দেবনাথ

মনিরুল শেখ 
কল্যাণী শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৯ ০১:১৪
Share: Save:

জেলা-পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পাওয়ার পর এই প্রথম নদিয়ায় এসেছিলেন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় সূত্রের খবর, তাঁর মূল উদ্দেশ্য ছিল, তৃণমূলের অন্দরের ফাটল আটকে বিজেপি-র মোকাবিলায়্য নতুন করে চাঙ্গা করে তোলা। কিন্তু শনিবার তাঁর সঙ্গে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বারে-বারে দলীয় নেতাদের দ্বন্দ্ব ও গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে। স্থানীয় নেতারা একে-অন্যের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন, দোষারোপ করেছেন, পরস্পরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কয়েক জন ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন।

দলীয় সূত্রের খবর, এ দিন রাজীব জানিয়ে দেন, খারাপ ফল ও রানাঘাটে হারের কারণ জানতে প্রয়োজনে জেলা, অঞ্চল ও বুথ স্তরে গিয়ে তিনি সভা করবেন। দলের ভিতরে থেকে কোনও লবি করা যাবে না বলে হুঁশিয়ারিও দেন। ভোটের ফল বের হওয়ার পরে নদিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে তৃণমূলের কর্মীদের উপর হামলা, বাড়ি ও দলীয় কার্যালয়ে হামলার অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূল কর্মীরা সিঁটিয়ে রয়েছেন, নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এই পরিস্থিতিতে রাজীব দলীয় কর্মীদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছেন। বৈঠকের পরে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, যে সব নেতাদের জন্য জেলায় খারাপ ফল হয়েছে তাঁদের চিহ্নিত করে কি সরানো হবে? রাজীব উত্তর দেন, ‘‘ আরও কয়েকটি বৈঠকের পর এটা ভাবা যেতে পারে।’’ এ দিন তিনি কল্যাণীর ঋত্বিক সদনে দলের তিন বিধানসভা এলাকার

( কল্যাণী, হরিণঘাটা ও চাকদহ)র নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। চাকদহের সদ্য প্রাক্তন পুরপ্রধান দীপক চক্রবর্তী ও বিধায়ক রত্না ঘোষের বিবাদ বহু দিন ধরেই চলছে। এ দিনও তাঁরা একে অপরকে দোষারোপ করেছেন বলে খবর। রত্না এ দিন অভিযোগ করেন, দীপক ভোটের কাজে মহিলা ও যুবকদের ব্যবহার করেননি। তাই ফল খারাপ হয়েছে। প্রবীণ নেতা শঙ্কর সিংহ তাঁকে কোনওরকমে থামান। এর পরই রাজীব জানান, শঙ্কর সিংহ সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি মিটিয়ে নেবেন। আর তিনি নিজেই খুব দ্রুত চাকদহের সব পক্ষের সঙ্গে বসবেন। চাকদহের ব্লত সভাপতি দিলীপ সরকার অভিযোগ করেন, শঙ্কর সিংহের সঙ্গে গোলমালের জেরে চাঁদুরিয়া-১ অঞ্চল সভাপতি তথা জেলা পরিষদ সদস্য তীব্রজ্যোতি দাস বিজেপির দিকে পা বাড়িয়েছেন রত্না তাতে জানান, চাঁদুরিয়া নিয়ে শঙ্কর সিংহের বৈঠকে বসা উচিত। পাল্টা শঙ্কর জানান, এইরকম কেউ-কেউ চলে গেলে দলের কিছু যাবে- আসবে না। এই নিয়েও কিছু ক্ষণ বাদানুবাদ চলে। গয়েশপুর টাউনের এক নেতাও শঙ্কর সিংহের বিরুদ্ধে তোপ দেগে মন্তব্য করেন, ‘‘যেখানে সমস্যা হচ্ছে শঙ্কর সেখানে যাচ্ছেন না।’’ পাল্টা শঙ্কর বলেন, ‘‘আমি যাচ্ছি কিন্তু আপনাকে পাচ্ছি না।’’ হরিণঘাটা টাউন সভাপতি উত্তম সাহা আবার অভিযোগ করেন, তোলাবাজদের জন্য দলের এই অবস্থা।

দলেরই একটি সূত্র জানাচ্ছে, এ দিন বৈঠকে কল্যাণী শহর তৃণমূলের সভাপতি অরূপ মুখোপাধ্যায় ওরফে টিঙ্কু বিধানসভা এলাকায় হারের দায় স্বীকার করে পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এ ছাড়াও টিঙ্কু জানান, উত্তর ২৪ পরগনার বীজপুর ও হুগলি থেকে অনেক রকমের চাপ আসছে। তথ্য সহায়তা: সুস্মিত হালদার

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Politics BJP TMC Rajib Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE