আতঙ্কটা আগেও ছিল, কিন্তু মুর্শিদাবাদের বালির ঘাটে সেতুর রেলিং ভেঙে জলে পড়ে ৪৪ জন বাস যাত্রীর মৃত্যুতে তা বহু গুণ বেড়েছে।
রানাঘাট শহরের এক প্রান্তে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে চূর্ণী নদীর উপর তৈরি এই সেতুর এক দিকে পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ড। অন্য দিকে রানাঘাট ১ ব্লকের রামনগর ১ পঞ্চায়েতের আঁইশতলা। এই সেতু দিয়ে সরকারি, বেসরকারি বাস, লরি, অটো, ট্রেকার চলে। উত্তরবঙ্গের সঙ্গেও এই সেতুর সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে। বছর দুয়েক আগে একটি লরি এই সেতুর রেলিং ভেঙে নদীতে পড়ে গিয়েছিল। ওই ঘটনায় চালক ও খালাসি আহত হন। ঘটনার পর প্রথমে বাঁশের চটা দিয়ে অস্থায়ী রেলিং তৈরি করা হয়। এ ভাবে বেশ কিছু দিন চলার পরে সিমেন্ট, বালি ও রড দিয়ে রেলিং তৈরি হলেও তা যে শক্তপোক্ত নয়, সেটা দেখলেই বোঝা যায়।
সেতু নিয়ে কম-বেশি আতঙ্কে থাকেন এলাকার বাসিন্দা থেকে শুরু করে গাড়ির চালকেরা— সকলেই। স্থানীয় বাসিন্দা অমিত বসাক বলেন, “সাইকেলে সেতু পারাপারের সময় খুব ভয় হয়। এখান দিয়ে গাড়ি চলাচল করলেও ভয় হয়। এই বুঝি রেলিং ভেঙে গাড়ি নীচে নদীতে পড়ে গেল।” লরি চালক ইসলাম খান বলেন, ‘‘সেতুতে উঠতেই ভয় করে—এই বুঝি রেলিং ভেঙে পড়ে গেলাম।
সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়ে রানাঘাটের পুরপ্রধান পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় বলেন, “জাতীয় সড়কের উপরে গুরুত্বপূর্ণ এই সেতুর রেলিংটি সত্যিই দুর্বল। যে কোন সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরে কথা বলেছি। এর হাল ফেরানো জরুরি।”
তবে মুর্শিদাবাদের ঘটনার পর রানাঘাট থানার পুলিশ কর্মীরা গাড়ি চালকদের সচেতন করার কাজ শুরু করেছেন। পুলিশ সূত্রে জানানো হয়, অনেক দিন থেকেই সঠিক ভাবে, নিয়ম মেনে গাড়ি চালানোর বিষয়ে চালকদের সচেতন করা হচ্ছিল। সে বিষয়ে আরও জোর দেওয়া হয়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে চালকরা গাড়ি নিয়ে এই সেতুর উপর দিয়ে চলাচল করেন। দুর্ঘটনা এড়াতে নিয়ম মেনে গাড়ি চালাতে হবে, সেতুর উপরে কোনও গাড়িকে ওভারটেক করা যাবে না, গাড়ি চালানোর সময় কানে মোবাইল ব্যাবহার করা যাবে না— এ সব বিষয়ে সচেতন করা হচ্ছে।
এই সমস্যা নিয়ে পুরসভার সঙ্গে কথা হয়েছে জানিয়ে পূর্ত দফতরের জাতীয় সড়ক বিভাগের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার রঞ্জন কুমার বলেন, “ওই সেতু সংস্কারের কাজ খুব শীঘ্রই শুরু করা হবে। রাজ্য সরকার সেই কাজ করবে। আশা করছি, এপ্রিল মাসের মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy