ইঞ্জেকশনে অসুস্থ এক রোগী। শক্তিনগর হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র
ভুল ইঞ্জেকশন নয়, এক জনকে অসুস্থ হয়ে পড়তে দেখে ধুবুলিয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের বাকি রোগীরা আতঙ্কে অসুস্থ বোধ করতে থাকেন বলে দাবি করছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু মঙ্গলবারের ঘটনা সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা পদ্ধতি এবং অ্যান্টিবায়োটিক প্রোটোকল নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
কারণ, স্বাস্থ্যকর্তারাই জানিয়েছেন, ধুবুলিয়ায় মঙ্গলবার ১৪ জন রোগীকে পর পর অ্যান্টিবায়োটিক ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছিল। এঁদের মধ্যে এক জনের ডায়েরিয়া হয়েছিল, অন্য জনের ডায়াবেটিস-জনিত সমস্যা ছিল। বাকিরা জ্বরে ভুগছিলেন। প্রশ্ন উঠেছে, জ্বরের ক্ষেত্রে কেন রোগীদের অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হবে? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্বিচারে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের কুফল সম্পর্কে সতর্ক করে রাশ টানতে বলেছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নিজের জারি করা অ্যান্টিবায়োটিক প্রোটোকলে বলা হয়েছে, একমাত্র চূড়ান্ত সংক্রমণ বা সেপসিসের ফলে জ্বর না এলে বাকি জ্বরে প্যারাসিটামল দিয়ে চিকিৎসা করতে হবে। তাতে জ্বর না কমলে তবে জরুরি অবস্থায় অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া উচিত।
ধুবুলিয়ায় মঙ্গলবার ১৪ জনকে অ্যান্টিবায়োটিক ইঞ্জেকশন দেওয়ার পর তাঁরা অসুস্থ বোধ করতে থাকেন। আতঙ্ক ছড়ায়। রোগীর আত্মীয়েরা হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখান। পরিস্থিতি সামলাতে ১৪ জনকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে রেফার করা হয়। প্রশ্ন উঠছে, ওই ১৪ জনের বা বিশেষ করে তাঁদের মধ্যে ১২ জন জ্বরের রোগীর শরীরেই কি মারাত্মক সংক্রমণ হয়েছিল যার জন্য তাঁদের প্যারাসিটামলের বদলে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়েছিল? তাঁদের কি অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়ার আগে রক্তপরীক্ষা হয়েছিল?
ধুবুলিয়া হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত সুপার স্বাতী মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘তদন্ত রিপোর্ট আমাকে দেওয়া হয়েছে। তাতে যতদূর মনে পড়ছে, সব জ্বরের রোগীরই রক্তপরীক্ষা হয়েছিল এবং তাঁদের রক্তে সংক্রমণ মিলেছিল। কোনও রোগীরই ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়া ছিল না।’’ কী ধরনের বা কতটা সংক্রমণ তা তিনি বলতে পারেননি। কিন্তু শক্তিনগর জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য ওই ১২ জনের মারাত্মক সংক্রমণ হওয়ার কোনও তথ্য দেয়নি। উল্টে জানিয়েছে, রোগীরা সকলেই ভাল হয়ে বাড়ি চলে গিয়েছেন। তা হলে প্রশ্ন ওঠে, রোগীরা যদি এক দিনের মধ্যে ভাল হয়ে যান তা হলে কেন মারাত্মক সংক্রমণ হয়েছে বলে তাঁদের অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হল?
শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের সুপার শচীন্দ্রনাথ সরকার বলছেন, “চিকিৎসকদের ক্লিনিক্যাল আই থাকে। তাঁরা নিশ্চয় সঠিক মনে করেছেন বলেই অ্যান্টিবায়োটিক দিয়েছেন। চিকিৎসায় কোনও ভুল ছিল না। এক জনকে দেখে বাকিরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন।” জেলার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায় বক্তব্য, “আমরা গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখেছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy