লণ্ডভণ্ড ঘরের জিনিসপত্র।-নিজস্ব চিত্র।
রাতদুপুরে ঘুম ভাঙতেই ছেলেটি দেখেছিল কাকা-কাকিমাকে পিছমোড়া করে বেঁধে রেখেছে কয়েকজন লোক।
বছর তেরোর ছেলেটি আতঙ্কে চিৎকারও করতে পারেনি। তার আগেই মুখঢাকা ওই লোকগুলোর একজন এসে তার মুখ চেপে ধরে। মাথায় ওয়ান শটার ঠেকিয়ে শাসিয়ে ওঠে, ‘‘একটা আওয়াজ করলেই ঘোড়া টিপে দেব।’’ আতঙ্কে ছেলেটি কাঁপছে। তার কাকা-কাকিমা নাগাড়ে ওই দুষ্কৃতীদের অনুনয় করে যাচ্ছেন, ‘‘যা আছে তোমরা সব নিয়ে যাও। ছেলেটাকে মেরো না গো।’’
মঙ্গলবার রাত আড়াইটে নাগাদ ঘুমিয়ে কাদা হয়ে গিয়েছিল চাকদহের মদনপুর পূর্বপাড়া। ওই পাড়াতেই বাড়ি পেশায় ব্যাঙ্ককর্মী রতন দাসের। রাতের খাওয়াদাওয়া সেরে রতনবাবু সপরিবার ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। সেই সময় বাড়ির পিছনের দরজার দিকে খুটখাট আওয়াজ শুনতে পান রতনবাবুর স্ত্রী আইভিদেবী। আওয়াজটা জোরালে হতে তিনি আর দেরি করেননি। বিছানা থেকে উঠে আলো জ্বালিয়ে দরজা খুলে দেখতে যান ব্যাপারটা কী। দরজাটা আলগা করতেই হুড়মুড় করে ঘরে ঢুকে পড়ে জনা ছয়েক দুষ্কৃতী। তাদের সকলের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। ঢাকা ছিল মুখ।
ঘরে ঢুকেই সঙ্গে সঙ্গে আইভিদেবীকে পিছমোড়া করে বেঁধে ফেলে দুষ্কৃতীরা। স্ত্রী ফিরছেন না দেখে বাইরে আসেন রতনবাবু। তাঁকে লক্ষ্য করে শাবল চালায় এক দুষ্কৃতী। কোনও রকমে বাঁচেন তিনি। এর পরে তাঁকেও বেঁধে ঘরে নিয়ে আসে দুষ্কৃতীরা। ওই ঘরেই ঘুমিয়ে ছিল রতনবাবুর ভাইপো সৌর্যেন্দ্র। সে ঘুম থেকে উঠতেই তার মাথাতে আগ্নেয়াস্ত্র ধরে এক দুষ্কৃতী।
আইভির অভিযোগ, শৌর্যেন্দ্রর মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে অবাধে টাকা-গয়না লুঠ করে দুষ্কৃতীরা। তিনিও ভয়ে তাদের আলমারির চাবি দেখিয়ে দেন। তাঁর দাবি, আলমারি থেকে সাড়ে তিন ভরি সোনার গয়না, কয়েক হাজার টাকা নিয়ে তাঁদের একটি ঘরে বাইরে থেকে বন্ধ করে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। খবর পেয়ে ওই রাতেই পুলিশ রতনবাবুর বাড়িতে আসে। অভিযোগও নথিভূক্ত করে।
অনেকটা এই কায়দাতেই গত দু’দিনে কল্যাণী শহর ঘেঁষা সগুনার সাহেববাগান ও কাঠুরিয়াপাড়াতেও লুঠপাট চালায় দুষ্কৃতীরা। পুলিশের ধারনা, ওই তিনটি ডাকাতির ঘটনা একই গ্যাং-এর কাজ। জেলার পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়ার আশ্বাস, ‘‘দুষ্কৃতীরা অবশ্যই ধরা পড়বে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy