ফাইল চিত্র
দুর্গন্ধে উঠে আসছে অন্নপ্রাশনের ভাত। সঙ্গে রয়েছে রোগের চাপা আতঙ্ক। জানলা, দরজা বন্ধ করেও সে দুর্গন্ধ ঠেকায় কে! কাটছে না আতঙ্ক।
জঙ্গিপুর পুরসভার গায়ে গা লাগানো দু’টি ওয়ার্ড ১৩ এবং ১৪। ১৪ নম্বরে ভ্যাট জুড়ে আবর্জনার স্তূপ। ১৩ নম্বরে সাফাই শুরু হয়েছে কিন্তু এখনও সেখানে পাহাড় হয়ে আছে আবর্জনা। অতিষ্ঠ এলাকার বাসিন্দারা। বৃষ্টির জল পড়ে দুর্গন্ধ বেড়ে যায় তাল মিলিয়ে। খুচরো রোগ লেগেই আছে। বাসিন্দারা নিত্য বলাবলি করছেন, ‘এ বার মহামারী না হয়!’
এমনই এক ভ্যাটের গা ঘেঁষে বাড়ি সুরজিৎ ঘোষের। বলছেন, “প্রায় দেড়শো পরিবার রয়েছে পাড়ায়। ঝড় উঠলে এই ভ্যাটের জঞ্জাল এসে ঢোকে বাড়িতে। গরমের সময় হাওয়া উঠলে বাইরে দাঁড়ানোর উপায় নেই। এ অবস্থায় কত দিন বাঁচায় যায় বলুন তো!’’ তাঁর পড়শি সৌমেন হালদার বলছেন, “বহু বার পুরসভায় গিয়ে লিখিত ও মৌখিক ভাবে বলা হয়েছে, আবর্জনা সাফাই না করুন এ বার জঞ্জাল ফেলা অন্তত বন্ধ করুন। কোনও ফল হয়নি। ঘরে ঘরে জ্বর, কাশি লেগেই রয়েছে বারো মাস।’’ বাইরের আলো বাতাসের জন্য জানালাটা যে খুলে রাখবেন তারও জো নেই। বৃষ্টি হলে নরক গুলজার।
কামনা হালদার থাকেন খানিক দূরে। তবে দুর্গন্ধ থেকে তাঁরও রেহাই নেই। বলছেন, “লোকালয়ের মধ্যে এ ভাবে আবর্জনা ফেলা হয় কোন শহরে বলুন তো? পুরকর্তারা সব দেখেও নীরব। আমরা গুজিরপুরের বাসিন্দারা কি অবস্থায় আছি ভোটের আগে এক বার অন্ততঃ দেখে যান তাঁরা।” শহরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের এই এলাকায় বহু বাড়িতে এখনও শৌচাগার নেই। কারও আর্থিক সামর্থ্য নেই, কারও জায়গা নেই। তাঁরা শৌচকার্য সারেন এই জঞ্জালের ভ্যাটের আশেপাশে। শহর থেকে যাতায়াতের প্রধান পথ গুজিরপুর বাঁধ গেছে এই ভ্যাটের পাশ দিয়ে। সে পথে চলাচল প্রায় দুঃসাধ্য। সুমন ঘোষও ওই এলাকার বাসিন্দা। তিনি বলেন, “আগে ভ্যাট ছিল ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের সুভাষ পল্লিতে। সেখানে ভ্যাট নিয়ে বহু অশান্তি হয়েছে। পরে জমি নিয়ে বিবাদে ভ্যাট সরিয়ে আনা হয় গুজিরপুর বাঁধের পাশে। এটা আখেরি নদীর জলাভূমি। ইতিমধ্যেই সে জলাভূমির প্রায় ৩ হাজার বর্গমিটার ভরাট হয়ে গেছে। অথচ এই নদীতে এক সময় স্নান করতেন বাসিন্দারা। এখন সব বন্ধ।”
তৃণমূলের পুরপ্রধান মোজাহারুল ইসলাম অবশ্য বলছেন,
“পাশেই গদাইপুর মাঠে ৪ বিঘে জমি কিনে একটি ভ্যাট তৈরি করা হচ্ছে। সেখানে আরও দু’বিঘা জমি কেনা হবে। ভ্যাট সরিয়ে নিয়ে যাওয়া
হবে সেখানে।’’ কিন্তু এই সহজ সমাধানটা কবে হবে, তার কোনো উত্তর কি জানা আছে?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy