এই পাঁচিল ভেঙে পড়াতেই বিপত্তি। নিজস্ব চিত্র।
চাল কলের নির্মীয়মাণ দেওয়াল ভেঙে মারা গেলেন তিন মহিলা শ্রমিক। আহত হয়েছেন অন্তত ১৩ জন। বুধবার সালারের রায়গ্রাম মোড়ে ওই দুর্ঘটনায় মৃতদের নাম শেফালি সোরেন (১৯), সরস্বতী সোরেন (২১) এবং পঞ্চমী সোরেন (২৬)। মৃতেরা সকলেই পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, এলাকায় ওই চাল কল তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল মাস কয়েক আগে। এ দিন সকাল থেকে ঝোড়ো হাওয়া ছিল। তার মধ্যেই চলছিল কাজ। জনা ৩৫ শ্রমিক সকাল থেকেই বৃষ্টির মধ্যেই ইঁটের পাঁচিলের গাঁথনি তুলছিলেন। বেলা এগারোটা নাগাদ আচমকা তুমুল আওয়াজ। ধুলোয় ঢেকে যায় এলাকা। ধুলোর আস্তরণ থিতিয়ে যেতেই বোঝা যায় নির্মীয়মাণ পাঁচিলটি হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছে।
দেওয়ালটি প্রায় ৩০ফুট উঁচু। সেখানে মাচা তৈরি করে তার উপর দাঁড়িয়ে কাজ করছিলেন শ্রমিকেরা। আওয়াজ পেয়ে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে উদ্ধার শুরু করেন। ভ্যান রিকশা করেই তাঁদের পাঠানো হয় স্থানীয় হাসপাতালে।
তবে শেফালি এবং পঞ্চমী ঘটনাস্থলেই মারা যান। হাসপাতালে পাঠানোর কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যান সরস্বতী সোরেন। আহতদের প্রথমে সালার গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হলেও পরে তাঁদের পাঠানো হয় কান্দি মহকুমা হাসপাতালে। হাসপাতালে সূত্রে জানা গিয়েছে, আহত শ্রমিকদের মধ্যে দশ জনের আঘাত গুরুতর। পাঁচিল তোলার কাজ করছিলেন মনোজ মূর্মু, তিনি বলেন, ‘‘সব কিছু ঠিকাঠাকই ছিল। কী ভাবে আচমকা দেওয়াটি ভেঙে পড়ল কেউ বুঝতে পারছি না।”
ওই নির্মাণের কাজ করাচ্ছিলেন রাজেশ মোল্লা নামে এক ঠিকাদার। তিনি বলেন, “৩০ফুট উঁচু দেওয়াল তৈরির কাজ হচ্ছিল। হাওয়া-বৃষ্টি যাই থাক দেওয়াল ভেঙে পড়ল কেন তা স্পষ্ট হচ্ছে না।’’
ওই চাল কলের কর্ণধার দেবাশিস ঘোষ বলেন, “গত এপ্রিল মাস থেকে কাজ হচ্ছে। কোনও তাড়াহুড়ো ছিল না। তা সত্ত্বেও এমন কান্ড হল কি করে বুঝতে পারছি না। তবে এ দিন ওই বৃষ্টির মধ্যে কাজ না করাই উচিত ছিল।’’
কান্দির মহকুমাশাসক অভীক কুমার দাস বলেন, “হাসপাতালে গিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেছি। যা শুনলাম, তাতে এমন ঘটনা ঘটার কারণ নেই। ঠিকাদার কী ধরনের মালমশলা দিয়ে কাজ করছিলেন তা খতিয়ে দেখা হবে। ঘটনাস্থলে ভরতপুর ২ নম্বর ব্লকের বিডিও আছেন, তিনিই সব খতিয়ে দেখবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy