Advertisement
১০ মে ২০২৪

শেষ লগ্নে মরিয়া সব পক্ষই  

বাম-কংগ্রেস জোট সূত্রের খবর, আজ, শুক্রবার দুপুরে করিমপুর পুরনো বাসস্ট্যান্ড চত্বরে সভা করতে আসছেন সিপিএমের বিমান বসু এবং কংগ্রেসের সোমেন  মিত্র ও আব্দুল মান্নান।

যুযুধান: পুলিশ রোড-শো আটকানোয় কর্মীর মোটরবাইকে রওনা দিলেন বিজেপির মুকুল রায়।  (ডান দিকে) জনসভায় তৃণমূলের ফিরহাদ হাকিম। নিজস্ব চিত্র

যুযুধান: পুলিশ রোড-শো আটকানোয় কর্মীর মোটরবাইকে রওনা দিলেন বিজেপির মুকুল রায়। (ডান দিকে) জনসভায় তৃণমূলের ফিরহাদ হাকিম। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
করিমপুর শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৯ ০১:১৫
Share: Save:

যত সময় ঘনিয়ে আসছে, করিমপুরে তেতে উঠছে শেষ লগ্নের প্রচার। আগাম অনুমতি ছাড়াই বৃহস্পতিবার রোড-শোয়ের আয়োজন করেছিল বিজেপি। পুলিশ তা আটকে দেয়। অন্য দিকে, তৃণমূল প্রার্থীর হয়ে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় সভা করে যান মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।

বাম-কংগ্রেস জোট সূত্রের খবর, আজ, শুক্রবার দুপুরে করিমপুর পুরনো বাসস্ট্যান্ড চত্বরে সভা করতে আসছেন সিপিএমের বিমান বসু এবং কংগ্রেসের সোমেন মিত্র ও আব্দুল মান্নান। তৃণমূল প্রার্থীর হয়ে সিনেমা হলের মোড়ে সভা করবেন ব্রাত্য বসু।

এ দিন দুপুরে প্রার্থী জয়প্রকাশ মজুমদারকে নিয়ে হুডখোলা গাড়িতে রোড-শো শুরু করেছিলেন বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় এবং মুকুল রায়। পাঁচগাছি মোড়ে তাঁদের আটকায় পুলিশ। পরে মোটরবাইকে চেপে তাঁরা গোয়াস গ্রামে যান। বাইকেই প্রচার সেরে সেখানে তাঁরা কীর্তন ও বাউল শিল্পীদের অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সন্ধ্যায় কৃষ্ণনগরে সাংবাদিক সম্মেলনে মুকুল দাবি করেন, ‘‘পুলিশ মনে করেছে যে অনুমতি নেই, তাই র‌্যালি আটকেছে। তার পরেও আমরা আমাদের পুরো কার্যক্রম শেষ করে ফিরেছি।’’

কৈলাস-মুকুল বাইকে চেপে চলে গেলেও অনুমতি মিলতে পারে এই আশায় ঘণ্টা দুয়েক রাস্তায় আটকে থাকেন জয়প্রকাশ। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ফ্যাশন ডিজ়াইনার তথা বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল। পরে তাঁরা গোয়াস, হোগলবেড়িয়া ও তারাপুরে ছোট সভা করেন। বিজেপির অভিযোগ, পুলিশ মাঝে-মাঝেই নানা অছিলায় অনুমতি না দিয়ে প্রচারে বাধা দিচ্ছে।

কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত সুপার কৃশানু রায় অবশ্য জানান, রোড-শো এবং সভার বৈধ অনুমতি না থাকাতেই দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট গাড়ি আটকাতে বলেন। তাঁর নির্দেশে প্রচারের গাড়ি বাজেয়াপ্ত করে মামলা রুজু করা হয়েছে।

বুধবারই কাঁটাতারের বেড়া পার করে চরমেঘনায় প্রচারে গিয়েছিলেন জয়প্রকাশ। এ দিন সকালে তৃণমূল প্রার্থী বিমলেন্দু সিংহ রায়ও সেখানে ঘুরে আসেন। বাম-কংগ্রেস জোটপ্রার্থী গোলাম রাব্বি অবশ্য এখনও যাননি। বিকেলে করিমপুর ২ ব্লকের চর নবীনগঞ্জে তৃণমূল প্রার্থীর সমর্থনে জনসভা করেন ফিরহাদ হাকিম। তাঁর সঙ্গে প্রার্থী ছাড়াও ছিলেন করিমপুর কেন্দ্রের প্রাক্তন বিধায়ক, বর্তমানে কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্র, মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ আবু তাহের খান, সাগরদিঘির বিধায়ক সুব্রত সাহাও।

সংখ্যালঘু প্রধান এলাকায় বক্তৃতা করতে এসে ফিরহাদ বিজেপির চেয়ে বেশি নিশানা করেছেন বামেদেরই। তাঁর দাবি, ‘‘এক সময়ে যারা ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলত, সেই সিপিএম এখন ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করছে।’’ অর্থাৎ, যে সংখ্যালঘু ভোট বিজেপির দিকে যাবে না, তা যাতে জোটের দিকে সরে না যায়, তা নিশ্চিত করাই তাঁদের প্রধান লক্ষ্য। ফিরহাদ আরও দাবি করেন, ‘‘সাম্প্রদায়িকতার কথা বলে মানুষের মধ্যে বিভাজন ঘটানোই বিজেপির এক মাত্র লক্ষ্য। ওদের সঙ্গ দিচ্ছে সিপিএম। সিপিএম দলটা বিজেপির টাকার কাছে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।’’

এ বারের ভোটে এক মাত্র জোটপ্রার্থী, সিপিএমের গোলাম রাব্বি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। ফিরহাদের ব্যাখ্যা, ‘‘বিগত ৩৯ বছরে করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্রে সিপিএম কোনও দিনই কোনও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষকে প্রার্থী করেনি। এ বারে ওরা বিজেপিকে সুবিধা করে দিতে চাইছে। সিপিএমের সংখ্যালঘু প্রার্থী সংখ্যালঘু ভোট কাটলে বিজেপির সুবিধা করে দেওয়া হবে।’’

জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) প্রসঙ্গে ফিরহাদ বলেন, ‘‘এনআরসি হলে যে শুধু মুসলিমদের সমস্যা হবে তা নয়, হিন্দুরাও সমস্যায় পড়বে। সে তো অসমে এনআরসি হওয়ার পরেই বোঝা গিয়েছে। রাজ্যে তৃণমূল থাকতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কখনও এনআরসি হতে দেবেন না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

By Election TMC BJP Mukul Roy Firhad Hakim
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE