সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়ল টুল সমেত টোটো।
বিকেল ৪.২০! ক্রেতা, বিক্রেতা, পথচারী ও গাড়ির ভিড়ে তখন জমজমাট বেলডাঙা শহর। শনিবার ঠিক সেই সময় থিকথিকে ভিড় ঠেলে নেতাজি পার্ক মোড় এলাকায় তৃণমূলের কাউন্সিলরের বাড়িতে ঢুকল বছর ছাব্বিশের এক যুবক। পরনে জিন্সের প্যান্ট, কালোর উপরে সাদা ফুল আঁকা শার্ট। পরিপাটি করে আঁচড়ানো চুল। গায়ের রং একটু চাপা।
বাড়ির দরজায় টোকা মারতেই বেরিয়ে আসেন কাউন্সিলর সুস্মিতা দে ঘোষ। মোলায়েম হেসে সেই যুবক বলে, ‘‘চেয়ারম্যান আমাকে পাঠালেন। আপনার অফিসেই জরুরি মিটিং আছে। বহরমপুর থেকে দু’জন মহিলাও আসছেন। আপনি অফিসের চাবিটা দিন। আমি ঘরটা খুলে একটু গোছগাছ করি।’’ কিন্তু কিন্তু করেও সুস্মিতা অফিসের চাবি দিয়ে দেন সেই আগন্তুকের হাতে। বাড়ির সামনেই অফিস। যুবক অচেনা হওয়ায় তিনি তার উপরে কিছুক্ষণ নজরও রাখেন। কিন্তু সন্দেহ করার মতো কিছু নজরে পড়েনি। অন্য কর্মীদের মতোই যুবকটি প্রথমে ঘর পরিষ্কার করে। প্লাস্টিকের দু’টো বোতলে জলও ভরে আনে। তার পরেই কিছুক্ষণের জন্য সুস্মিতা ঘরের ভিতরে যান। ফিরে এসে দেখেন, যুবক উধাও। সেই সঙ্গে হাওয়া অফিসের ন’টি প্লাস্টিকের টুলও।
ঘটনার পরেই সুস্মিতা ফোন করেন তৃণমূলের পুরপ্রধান ভরত ঝাওরকে। তিনি আকাশ থেকে পড়েন, ‘‘মিটিং! বহরমপুর থেকে মহিলা! তোমার অফিসে?’’ নবাবের জেলা রকমারি কেপমারি দেখেছে এর আগে। বর্ষার দুপুরে বাড়িতে ইলিশ মাছ রেখে সাইকেল নিয়ে গায়েব হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সোনার গয়না আরও চকচকে করতে দিয়ে আর ফেরেনি। এমনকি পাত্রী দেখতে আসার নাম করে ভোজবাজির মতো মিলিয়ে গিয়েছে কাঁসার বাসন। কিন্তু শাসক দলের পুরপ্রধানের নাম করে তৃণমূলের কার্যালয় থেকে টুল কেপমারি? নাহ্, এর আগে কখনও ঘটেছে বলে মনে করতে পারছে না মনোহরার শহর, বেলডাঙা।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
শনিবার দুপুরে বহরমপুরে তৃণমূলের সভা সেরে সদ্য বাড়ি ফিরেছিলেন ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুস্মিতা দে ঘোষ। তিনি বলছেন, ‘‘অবাক যে একটু হইনি তা নয়। কিন্তু পুরপ্রধানের কথা বলতেই চাবিটা দিই। সন্দেহ হওয়ায় তার উপরে নজরও রাখি। কিন্তু কিছুক্ষণের জন্য ঘরে আসতেই ও নিজের কাজ হাসিল করে পালায়। ভাবতেই পারছি না, এমনটা কেউ করতে পারে। বিরাট শিক্ষা হল। এ বার দলীয় দফতরে সিসিক্যামেরা বসাব।’’ তবে সূত্র মিলেছে পাশের দোকানের সিসিক্যামেরায়। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ওই যুবক টুলগুলো নিয়ে টোটোয় উঠছে। আর তদন্তকারী এক পুলিশ আধিকারিক বলছেন, ‘‘হতচ্ছাড়ার সঙ্গে সময়ের মিলটা এক বার খেয়াল করেছেন! ওই দেখুন, ঘড়িতে তখন—৪.২০!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy