Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
উদ্বেগ বাড়াচ্ছে চাকদহ

রং মাখিয়েই গুলি যুবককে

শান্তনু শীলের খুনের রেশ এখনও মেলায়নি চাকদহে। তার মধ্যেই নতুন এই ঘটনায় তেতে রয়েছে শহর। যদিও দ্বিতীয় ঘটনায় জখম কোনও ক্রমে প্রাণে বেঁচেছেন এবং আপাতত তিনি কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

মনিরুল শেখ
শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৮ ০১:৪৩
Share: Save:

আবার চাকদহ, আবার প্রকাশ্যে গুলি! দুই পরিচিত যুবক। দোলের দিন সকাল থেকে তাঁরা ঘুরে বেড়িয়েছেন, একে অন্যের গালে লাগিয়ে দিয়েছে লাল-গেরুয়া আবির। বালতিতে রং গুলে ঢেলে গিয়েছেন মাথায়, হাততালি দিয়েছেন, কোমর দুলিয়ে নেচেছেন।

তার পর এক সময় কেউ কিচ্ছু বোঝার আগে এক জনের হাতে গর্জে উঠেছে রিভলভার! রংমাখা শরীরে লুটিয়ে পড়েছেন অন্য জন। আক্রমণকারী ততক্ষণে হাওয়া!

শান্তনু শীলের খুনের রেশ এখনও মেলায়নি চাকদহে। তার মধ্যেই নতুন এই ঘটনায় তেতে রয়েছে শহর। যদিও দ্বিতীয় ঘটনায় জখম কোনও ক্রমে প্রাণে বেঁচেছেন এবং আপাতত তিনি কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি। তাঁর পেট থেকে গুলি বের করা হয়েছে। কিন্তু ঘটনার ধরন ও আকস্মিকতা চমকে দিয়েছে পুলিশ কর্তাদেরও।

গত মাসে নদিয়ায় প্রশাসনিক বৈঠকে এসে চাকদহের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলার পুলিশ কর্তাদের বিষয়টি দেখতেও বলেছিলেন। সেই সময় চাকদহ শহরের কেবিএম এলাকায় একটি ক্লাবের অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করার সময়ে মঞ্চে খুন হন শান্তনু শীল। চাকদহের তৃণমূল পুরপ্রধানের আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই খুনের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ ওঠায় ঘটনা অন্য মাত্রা পেয়েছিল।

তার রেশ থিতিয়ে যাওয়ার আগেই আবার গুলি চালিয়ে খুনের চেষ্টার ঘটনা চাকদহে, এবং ঘটনাচক্রে হামলাকারী তপন দাস এবং আহত কিশোর বিশ্বাস দু’জনেই তৃণমূল কর্মী হিসাবে এলাকায় পরিচিত! দেউলি অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি প্রবীর মজুমদার স্বীকার করেছেন যে, দু’জনেই তৃণমূল করতেন। প্রবীরবাবু বলেন, ‘‘তপনের কাছে কী করে আগ্নেয়াস্ত্র এল বুঝতে পারছি না। আইন আইনের পথে চলবে। তৃণমূল করে বলে অপরাধ করে কেউ ছাড় পাবে না।” তপন অবশ্য এখনও পলাতক। জেলা পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া বলেন, ‘‘তপনের খোঁজ চলছে।’’ প্রসঙ্গত, শান্তনু শীল খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত তিন জন গ্রেফতার হলেও বিশ্বনাথ দেবনাথ এবং হাম্পি রায় এখনও পলাতক।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিকেল চারটে নাগাদ চৌগাছা নতুনবাজার মোড়ে তপন ও কিশোর দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন। হঠাৎ গুলির শব্দ শোনা যায়। আশপাশের লোক ছুটে গিয়ে দেখেন, কিশোর পড়ে রয়েছেন, চার দিক রক্তে ভেসে যাচ্ছে। হাসপাতলের বিছানায় শুয়ে কে তাঁকে কেন গুলি করেছে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনও উত্তর দেননি কিশোর। তাতে রহস্য আরও বেড়েছে।

চাকদহ ব্লকের দেউলি গ্রাম পঞ্চায়েতের নতুন বাজার পশ্চিমপাড়া এলাকায় বাড়ি কিশোরদের। সে ঠিকাদারের সঙ্গে কাজ করে। কিশোরদের বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে বাড়ি তপনদের। সে মুম্বইয়ে একটি হোটেলে কাজ করে। দিন পনেরো আগে বাড়ি ফিরেছে। তাঁর এক কাকীমা জানিয়েছেন, পড়াশোনায় ভাল ছিল না তপন, বাড়িতেও অভাব। তাই মুম্বই গিয়েছিল কাজ নিয়ে। সেখানে রিভলভার সে কী করে জোগাড় করল তাঁরা বুঝতে পারছেন না।

সহ-প্রতিবেদন: সৌমিত্র সিকদার

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

youth gunshot Friends Holi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE