প্রতীকী ছবি।
কোথাও রাস্তা খারাপ। কোথাও নদী পেরিয়ে যাতয়াত করতে হয়। কোথাও আবার হাসপাতাল থেকে বাড়ি অনেক দূরে।
হাসপাতালে আনার পথে সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়ে যেতে পারে এই ভয়ে অনেকে এখনও বাড়িতে প্রসবের পথে হাঁটছেন। জেলা প্রশাসনের হিসেবে, মুর্শিদাবাদে এখনও প্রায় ৭ শতাংশ প্রসূতি বাড়িতে প্রসব করেন। তাঁদের হাসপাতালমুখো করতে সন্তান প্রসবের দশ দিন আগেই হাসপাতালে আনার প্রকল্প নিচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর।
তার জন্য চালু করা হচ্ছে ‘মাদার্স ওয়েটিং হাট’। হাসপাতাল চত্বরেই হবু মা ও তাঁর এক আত্মীয়ের থাকার ব্যবস্থা হচ্ছে। প্রসবের পরে তাঁদের বাড়ি পাঠানো হবে। মুর্শিদাবাদের চারটি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরে দশ শয্যার ওই অপেক্ষা-ঘর তৈরি করা হচ্ছে। সম্প্রতি টেন্ডারের মাধ্যমে একটি অসরকারি সংস্থাকে দায়িত্ব দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। তবে নদিয়ায় এই ধরনের প্রকল্প এখনই হচ্ছে না। কেননা সেখানে প্রায় ৯৯ শতাংশ প্রসুতিই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসেন বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর।
মুর্শিদাবাদের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিরুপম বিশ্বাস বলছেন, “যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ থাকায় অনেক সময়ে মায়েরা বাড়িতে সন্তান প্রসব করেন। তাঁদের হাসপাতালমুখো করতেই এই উদ্যোগ। আগামী ১ ডিসেম্বর ফরাক্কা হাসপাতালে এই প্রকল্পের সূচনা হবে।” জেলায় আরও দশটি প্রকল্পের জন্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে আর্জি জানানো হয়েছে বলেও তিনি জানান। কী ভাবে মায়েদের আনা হবে মাদার্স ওয়েটিং হাটে?
স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানান, জেলায় কোন প্রসুতি কবে প্রসব করতে পারেন, তা স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমেই জানা যায়। স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমেই তাঁদের মাতৃযানে করে হাটে আনা হবে। প্রসুতি ও তাঁর এক আত্মীয় দশ দিন নিখরচায় থাকবেন সেখানে। নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হবে প্রসূতির। প্রয়োজনে চিকিৎসাও হবে। তার জন্য নার্সিং স্টাফ থেকে শুরু করে চতুর্থ শ্রেণির কর্মি, খাওয়ার ব্যবস্থা— সব কিছু দেখভাল করার জন্য টেন্ডারের মাধ্যমে অসরকারি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
আপাতত ফরাক্কা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, রঘুনাথগঞ্জ ২ ব্লকে তেঘরি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, সুতি ২ ব্লকের মহিষাইল ব্লকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং বেলডাঙা ২ ব্লকে শক্তিপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ‘মাদার্স ওয়েটিং হাট’ অনুমোদন হয়েছে। তার টেন্ডারও হয়ে গিয়েছে। ফরাক্কা ও রঘুনাথগঞ্জের তেঘরি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য একটি অসরকারি সংস্থা বরাত পেয়েছে। ওই সংস্থার প্রজেক্ট ইনচার্জ অভিষেক ঘোষ বলেন, “বছর দেড়েক আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবা, সন্দেশখালি ও পাথরপ্রতিমায় এই প্রকল্প হয়েছে। গোসাবা ও সন্দেশখালিতে আমরাই দু’টি মাদার্স ওয়েটিং হাট চালাচ্ছি। সেখানে সাফল্য এসেছে।” তাঁর দাবি, ফরাক্কার হাটটি ১ ডিসেম্বর চালু করা হবে। তেঘরিতেও সামনের মাসেই চালু করার পরিকল্পনা আছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy