Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
West Bengal Lockdown

জাতীয় সড়কেও দাপট অটোর

বহরমপুর মোহনা বাসস্ট্যান্ড থেকে লালবাগ চুনাখালি পর্যন্ত এবং গির্জা মোড় থেকে খাগড়া ঘাট রেল স্টেশন পর্যন্ত অটো চলাচল করে।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০২০ ০৬:৪৩
Share: Save:

লকডাউনে যখন যান চলাচল এক রকম সম্পূর্ণ বন্ধ, তখন জরুরি পরিষেবা চালু রাখতে অটো-টোটোর কদর বাড়ছিল। ধুধু জাতীয় সড়ক বা রাজ্য সড়কেও অটো-টোটোর অবাধ যাতায়াত ছিল। সপ্তাহখানেক আগে লকডাউন শিথিল হয়েছে। ছাড় পেয়েছে সব পরিবহণই। কিন্তু এখনও বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়নি। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ফায়দা তুলছে অটো টোটোর মতো যান। এমনটাই অভিযোগ যাত্রীদের।

বহরমপুর মোহনা বাসস্ট্যান্ড থেকে লালবাগ চুনাখালি পর্যন্ত এবং গির্জা মোড় থেকে খাগড়া ঘাট রেল স্টেশন পর্যন্ত অটো চলাচল করে। সেই রুটের বাইরে লকডাউন শিথিল হওয়ার পরেও তারা রাজ্যসড়ক বা জাতীয় সড়কে নির্দিষ্ট দূরত্বের বেশি যাতায়াত করছে বলে অভিযোগ। এক রুটের অটো অন্য রুটে হামেশাই যাতায়াত করায় যাত্রী সংখ্যা আরও কমে যাচ্ছে বলে বাস বা ট্রেকার চালকরা আগেই অভিযোগ করেছেন।

পাশাপাশি লকডাউনের আগে যে ভাড়া ছিল তার দ্বিগুণ, কখনও কখনও তারও বেশি বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের। বহরমপুরের বাসিন্দা তাপস দে রবিবার বলেন, “লকডাউনের আগে বানজেটিয়া পর্যন্ত চার কিলোমিটার যেতে ১০ টাকা লাগত, সেই ভাড়া এখন ২০ টাকা চাইছে।” একই অভিযোগ সুষমা দে’রও। তিনি বলেন, “লালবাগের ভাড়া ২০ টাকা ছিল। আজ সেই ভাড়া বলছে ৫০ টাকা।”

সে কথা অবশ্য স্বীকার করে নিয়েছেন বহরমপুর থেকে লালবাগ চুনাখালি সড়কের অটোচালক সংগঠনের সম্পাদক কার্তিক দাস। তিনি বলেন, “চালকদের নির্দিষ্ট ভাড়ার বেশি নিতে বারণ করা হয়েছে।” কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, সে কথা শুনছেন ক’জন!

পাশাপাশি, অটোতে ত’জন যাত্রী তোলা যাবে, সেই নিয়মকেও বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অনেক চালক চাপাচাপি করে যাত্রী তুলছেন বলে অভিযোগ। সেখানে কোনও সামাজিক দূরত্বের বালাই থাকছে না বলে জানান তাঁরা। কার্তিকবাবু বলেন, “চালকদের বলে দেওয়া হয়েছে, এক বাড়ি থেকে যদি চার জন আসেন, কেবল তা হলে তাঁরা এক সঙ্গে বসতে পারবেন। না হলে পিছনে দু’জন, মাঝে দু’জন আর চালকের পাশে এক জন বসতে পারবে।” সেটাও আইন বহির্ভুত। সে ক্ষেত্রে কার্তিকবাবুর প্রশ্ন “বাসের যাত্রীদের ক্ষেত্রেও তো আইন আছে কিন্তু সেখানে কি সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকছে?” তবে এক রুটের অটো অন্য রুটে রিজার্ভের বাইরে যাচ্ছে না বলেই দাবি তাঁর।

টোটোও দাপিয়ে বেড়াচ্ছে রাজ্য সড়ক, জাতীয় সড়ক। ভিড় এড়াতে বহরমপুর থেকে রেজিনগর পর্যন্ত সস্ত্রীক টোটো ভাড়া করেছেন অসীম সরকার। তিনি বলেন, “এক ভয় থেকে বাঁচতে আর এক ভয় নিয়েই ছ’শো টাকায় টোটো ভাড়া করেছি।” অথচ জাতীয় সড়কের ওপর টোটো চালানো নিষিদ্ধ। এখনও পর্যন্ত রাজ্যে টোটোর কোন নিবন্ধীকরণ চালু না হওয়ায় কোন দুর্ঘটনা ঘটে গেলে বিমারও ব্যবস্থা নেই। জেলা আঞ্চলিক পরিবহন আধিকারিক সিদ্ধার্থ রায় বলেন, “টোটোর এগুলির রেজিস্ট্রেশন হয় না। তাই এদের বিমার সুবিধাও নেই।’’ কিন্তু অটো-টোটোর বেআইনি যাতায়াত রুখতে সরকার কী করছে? সিদ্ধার্থবাবুর জবাব, ‘‘লকডাউন পুরো ওঠার পরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Lockdown Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE