নিহত সৈকত ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র
বিকেলবেলা জাতীয় সড়কের উপরে এক যুবকের মোটরবাইক থামিয়ে খুব কাছ থেকে তাঁকে গুলি করে মারল দুষ্কৃতীরা। যুবকের সঙ্গে থাকা টাকার ব্যাগ নিয়ে পালিয়েছে তারা।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ কালীরহাটে একটা গাড়ির শো-রুমের কাছে ফাঁকা জায়গায় তাঁর বাইকটি দাঁড় করায় কয়েক জন দুষ্কৃতী। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, তাদের সঙ্গে কিছু ক্ষণ সৈকত ঘোষ নামে ওই যুবকের কথা হয়, তার পর ধস্তাধস্তি শুরু হয়। কয়েক মুহূর্ত পরেই খুব কাছ থেকে এক দুষ্কৃতী সৈকতকে গুলি করে। তিনি লুটিয়ে পড়েন।
নিহত সৈকতের বাড়ি কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণী এলাকায়। বছর দুয়েক আগে বাবা মারা যাওয়ার পর সৈকত একটি গাড়ির লগ্নি সংস্থায় চাকরি নেন। তাঁর কাজ ছিল রানাঘাট, শান্তিপুর, নবদ্বীপ, গাংনাপুর, তাহেরপুর, দত্তফুলিয়া এলাকায় সংস্থার হয়ে টাকা সংগ্রহ করা। এ দিনও তিনি রানাঘাট এলাকায় গিয়েছিলেন টাকা সংগ্রহ করতে। কাজ সেরে ব্যাগে করে টানা নিয়ে ফিরছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, যুবকের ব্যাগে প্রায় চল্লিশ হাজার টাকা ছিল। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, ওই টাকা হাতানোর জন্যই এই খুন। কিন্তু ব্যাগে এ দিন টাকার পরিমাণ কম থাকবে সেটা সম্ভবত আন্দাজ করতে পারেনি দুষ্কৃতীরা। বেশির ভাগ দিনই দু থেকে তিন লাখ টাকার ‘কালেকশন’ হত সৈকতের। সেটা জানেন অনেকেই। লাখ টাকার লোভেই সম্ভবত দুষ্কৃতীরা হানা দিয়েছিল। এবং পুলিশের অনুমান, তারা সৈকতের পরিচিত ছিল বা সৈকতের কাজ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল কেউ তাদের বিস্তারিত তথ্য দিয়েছিল। শুধু এ দিন টাকা কম উঠবে এটা তারা ভাবতে পারেনি। পুলিশ সূত্রে খবর, দুষ্কৃতীরা সৈকতের পরিচিত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তা না হলে টাকা নিয়ে ফেরার সময় তাদের দেখে তিনি রাস্তায় দাঁড়াতেন না।
নিহত সৈকতের সহকর্মী রবি বিশ্বাস বলছেন, “সৈকত ভাল ছেলে ছিল। কখনও কারও সঙ্গে সামান্য কথা কাটাকাটিও হয়নি। এই ভাবে ওকে খুন করবে ভাবতে পারছি না।” বিষয়টা জানার পরেই তাঁর সহকর্মীরা ভিড় জমান শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে। জেলার পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার বলেন, “খুনের কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। তদন্ত চলছে।” প্রসঙ্গত, কয়েক মাস আগে হাওড়ায় একটি সংস্থার কর্মী খুন হয়েছিলেন। তিনিও সংস্থার হয়ে টাকা সংগ্রহের কাজ করতেন। পরে জানা যায়, টাকা শোধ করতে না পেরে এক ঋণগ্রহিতা তাঁকে খুন করে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy