Advertisement
০৫ মে ২০২৪

বাঘার গ্রামে যেতে পথ কোথায়!

তৃতীয় সুর ষষ্ঠ সুর, গুপি চলল বহু দূর! 

মেঠো: বাঘার গ্রামে পৌঁছতে ভরসা এই মাটির রাস্তাই। নিজস্ব িচত্র

মেঠো: বাঘার গ্রামে পৌঁছতে ভরসা এই মাটির রাস্তাই। নিজস্ব িচত্র

অভিজিৎ সাহা
হরিতকী শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:৫৪
Share: Save:

তৃতীয় সুর ষষ্ঠ সুর, গুপি চলল বহু দূর!

৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে সাইনবোর্ড খুঁজে তার পাশ দিয়ে মেঠো পথ ধরে কিলোমিটার দশেক দূরে হরিতকী গ্রামে যেতে যেতে এমনটাই মনে হচ্ছিল বারবার।

তবে কিনা হরিতকী গুপির গ্রাম নয়। বাঘার গ্রাম। উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী তাঁর গপ্পে সে কথাই লিখেছেন। তাঁর নাতি সত্যজিৎ রায়ও তেমনটাই দেখিয়ে গিয়েছেন। ছবিতে অবশ্য শুধু আমলকিকেই দেখানো হয়েছে, হরিতকীকে নয়। এ কথা জানা ছিল না গ্রামের বাসিন্দাদের। গল্প শুনতে শুনতে তাঁরা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেন— হরিতকী দেখছি সবেতেই অবহেলিত!

কোথায় অবহেলা, জিজ্ঞেস করলে লম্বা তালিকা শুনিয়ে দেন। রাস্তা, পাকা ঘর, রুজি-রোজগার— কিছুই ঠিকঠাক নেই তাঁদের। জাতীয় সড়ক থেকে দশ কিলোমিটার দূরে গ্রামটি। পুরো রাস্তাটাই মেঠো পথ। অনেক জায়গাতেই ভাঙাচোরা। গ্রামের বাসিন্দারা বলছিলেন, এই পথ দিয়ে বর্ষায় যাতায়াত করাই দায় হয়ে যায়। বাচ্চারা একটু দূরের স্কুলে যেতে পারে না। বড়রা কাজে যেতে পারে না। কেউ অসুস্থ হলে তাকে নিয়ে হাসপাতাল যাওয়াও বড় বিড়ম্বনা। গ্রামের মধ্যে সবই প্রায় আলপথ। পানীয় জলের সুব্যবস্থাও নেই।

গাজল ব্লকের পাণ্ডুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে থাকা এই গ্রামটিতে ঘরে ঘরে বিদ্যুতের লাইন আছে। কিন্তু বিল দেওয়ার সামর্থ নেই বলে অধিকাংশ বাড়িতে সেই বাতি জ্বলে না। একশো দিনের কাজও সকলের মেলে না। বেশির ভাগ পথই আলপথ। গোটা কুড়ি পরিবার থাকে এখানে। দিনমজুরি করে টেনেটুনে দু’বেলা হাঁড়ি চড়ে গ্রামবাসীদের। দারিদ্র তাই ছুঁয়ে থাকে কুয়াশা ঘেরা গ্রামটিকে। এতটাই অন্নচিন্তা চমৎকারা যে, মাদল তুলে রেখে রোজ কিছু না কিছু কাজের খোঁজে বেরোতে হয়।

বাবুলাল হাঁসদা, টুনু বাস্কেরা জড়ো হয়ে বসেছিলেন আমবাগানে। তাঁদেরই কেউ কেউ বলেন, “হরিতকী গ্রাম সব সময় অবহেলিত। রাস্তা নেই, নেই পানীয় জলের ঠিকঠাক বন্দোবস্ত।’’ ভূতের রাজার থেকে তাঁরা বেশি করে চান, প্রশাসনের নজর পড়ুক গ্রামের দিকে। সে সব কথা শুনে গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলের ভীম ঘোষ বলেন, “রাস্তাটি জেলা পরিষদের অধীনে রয়েছে। জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষের কাছে রাস্তাটি পাকা করার জন্য আবেদন করব।” জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌড়চন্দ্র মণ্ডল বলেন, “খোঁজ নিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Village Road Gajole
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE