অমিত শাহের সভায় ভিড়। —নিজস্ব চিত্র।
মঙ্গলবার সকাল ৯টা। ইংরেজবাজার শহরের রথবাড়িতে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন মালদহের নালাগোলার বাসিন্দা সবিতা সরকার। প্রায় ৩০ মিনিট দাঁড়িয়ে থেকেও বাস না পেয়ে ভিড়ে ঠাসা ছোট যাত্রীবাহী গাড়িতেই দু’বছরের শিশুকে কোলে নিয়ে উঠে পড়লেন তিনি। বললেন, “আত্মীয়ের বাড়িতে ঘুরতে এসেছিলাম। বাড়ি ফেরার জন্য বাস ধরতে রথবাড়িতে এসেছি। শুনলাম বিজেপির সভা হচ্ছে। ফলে রাস্তায় এতই কম গাড়ি যে, নিরুপায় হয়ে ভিড় গাড়িতেই বাচ্চা নিয়ে উঠে পড়তে হয়েছে।”
সবিতার মতো গাড়ির জন্য এ দিন দুর্ভোগ পোহাতে হয় নিত্যযাত্রীদেরও। পুরাতন মালদহের সাহাপুরে নবনির্মিত ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের বাইপাসের ধারে অমিত শাহ জনসভা করেন। সেই সভার মাঠে লোক আনতে গাড়ি ভাড়া করেছিল বিজেপি। মালদহ-নালাগোলা রুট থেকে ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় শতাধিক গাড়ি নেওয়া হয়েছিল এ দিনের সভার জন্য। এ ছাড়া গাজল, চাঁচল, রতুয়া, মানিকচক, বৈষ্ণবনগর থেকেও প্রচুর বাস, ম্যাক্সিট্যাক্সি, ম্যাজিক গাড়ি নেওয়া হয়েছে। মালদহের পরিবহণ সংগঠনের সদস্য নিমাই বিশ্বাস বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় ভাবে আমাদের কাছ থেকে গাড়ি চাওয়া হয়নি। তবে প্রতিটি রুট থেকে বাস-সহ অন্য যাত্রীবাহী গাড়ি নেওয়া হয়েছে। অন্য দিনের তুলনায় এ দিন রাস্তায় গাড়ি কম থাকায় যাত্রীদের সমস্যাও হয়েছে।’’
দিনভর গাড়ির জন্য দুর্ভোগের ছবি দেখা যায় মালদহ জেলা জুড়েই। পুরাতন মালদহের সেতুমোড়ে সকাল দশটা নাগাদ দেখা যায় গাড়ির জন্য যাত্রীদের অপেক্ষা করতে। গাড়ি না পাওয়ায় হবিবপুর ব্লকের বেশ কিছু শিক্ষক-শিক্ষিকাকে নিশ্চয় যানে যাতায়াত করতে দেখা যায়। এক শিক্ষিকা বলেন, “ছোট গাড়িগুলোতে খুব ভিড়। কার্যত পা দেওয়ার জায়গা নেই। তাই নিরুপায় হয়ে নিশ্চয় যানে চেপে গন্তব্যে পৌঁছতে হয়েছে এ দিন।” একই সঙ্গে গাড়ি না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মালদহ কলেজের ছাত্রী পল্লবী চৌধুরীও। তিনি বলেন, “বিশেষ প্রয়োজনে এ দিন কলেজে আসতেই হত। একটি ছোট অটোয় প্রায় ২০ জন যাত্রী ভিড়ে চাপাচাপি করে গন্তব্যে পৌঁছলাম।” বন্ধের দিনের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে বলে কটাক্ষ করেন তিনি। যদিও মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবেই সভায় হাজির হয়েছেন বলে দাবি করেছেন বিজেপির জেলা সভাপতি সঞ্জিত মিশ্র। তিনি বলেন, “কর্মীরা নিজেরাই গাড়ি করে সভাস্থলে হাজির হয়েছেন। আমাদের কোনও গাড়ি ভাড়া করতে হয়নি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy