Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মুখ বাঁধা গামছায়,দরজায় ওরা কারা

ভোট শুরুর খানিক ক্ষণের মধ্যেই আলিপুরদুয়ার শহর লাগায়ো বিবেকানন্দ-২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের দমনপুরে আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের সামনে এমন ছবি দেখা যায়৷

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

পার্থ চক্রবর্তী
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৮ ০৫:৪৯
Share: Save:

কারও মুখ গামছা দিয়ে বাঁধা, তো কারও আবার কাপড় দিয়ে৷ সঙ্গে প্রত্যেকের হাতেই রয়েছে মোটা লাঠি৷

ভোট শুরুর খানিক ক্ষণের মধ্যেই আলিপুরদুয়ার শহর লাগায়ো বিবেকানন্দ-২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের দমনপুরে আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের সামনে এমন ছবি দেখা যায়৷ অভিযোগ, তৃণমূলের একদল কর্মী-সমর্থক এ ভাবেই কার্যত ভোট কেন্দ্রের দখল নিয়ে নেন৷ আতঙ্কে বিরোধী সমর্থকদের অনেকেই সেখানে যেতে পারেননি৷ যাঁরা গিয়েছেন, তাঁদেরকেও ফিরিয়ে দেওয়া হয়৷ তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি নিরঞ্জন দাসকেও সেখানে দেখা যায় বলে অভিযোগ৷ যদিও নিরঞ্জনবাবুর দাবি, “ওরা দুষ্কৃতী৷ এলাকায় যাতে গোলমাল না হয়, সে জন্য আমি গিয়ে ওদের ওখান থেকে সরিয়ে দিয়েছি৷”

শুধু আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ই নয়৷ একই কায়দায় সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূল বুথ দখল করতে শুরু করে বলে অভিযোগ। একই সঙ্গে বুথ জ্যামিংয়েরও অভিযোগ উঠেছে। বিরোধীদের দাবি, আলিপুরদুয়ার-১ নম্বর ব্লকে এ ধরনের ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে।

বিরোধীদের দাবি, কোথাও একেবারে গোড়া থেকেই, আবার কোথাও একটু বেলা গড়াতে একের পর এক ভোটকেন্দ্র দখল করতে শুরু করেন শাসকদলের নেতা-কর্মীরা৷ দুপুরে দেখা যায়, বঞ্চুকামারির চাপাতালি স্টেট প্ল্যান প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটকেন্দ্রের বাইরে বারান্দায় বসে দুই সিভিক ভলান্টিয়ার৷ ভিতরে ব্যালটে ছাপ দেওয়ার সময় ভোটদাতাদের পাশে কেউ না কেউ দাঁড়িয়ে। কোনও বিরোধী এজেন্টকে বসতে দেওয়া হয়নি বলেও দাবি তাঁদের৷ সংবাদমাধ্যম হাজির হতেই প্রিসাইডিং অফিসারের যুক্তি, একটি ক্ষেত্রেই এমন ঘটনা ঘটেছে৷ এক অন্ধ ভোটারকে তাঁর ছেলে সাহায্য করেছেন৷ বাকি ক্ষেত্রে এমন হয়নি৷

আলিপুরদুয়ার-১ নম্বর ব্লকের পাটকাপাড়া আইটিডিপি প্রাথমিক স্কুলেও একই কায়দায় ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠেছে শাসকদলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে৷ সংবাদমাধ্যম সেখানে পৌঁছতেই ভোটকেন্দ্র থেকে একদল যুবক বার হয়ে যান৷ তাঁরা জানিয়ে যান, শান্তিপূর্ণ ভাবেই ভোট হচ্ছে৷ তাঁদের সুরে সুর মেলান ভোটকর্মীরাও৷

বিজেপির দাবি, কুমারগ্রাম ব্লকে গোলমাল শুরু হয়েছে রবিবার গভীর রাত থেকেই। ওই সময়েই তুরতুরি এলাকায় তাদের এক কর্মীর বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ৷ একই অভিযোগ উঠেছে আলিপুরদুয়ার- ২নম্বর ব্লকের ভাটিবাড়ি, দক্ষিণ শিবকাটার দুটি বুথ, ফালাকাটা ব্লকের কয়েকটি বুথেও৷

বিজেওপির জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মার দাবি, ‘‘পুলিশ-প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করল তৃণমূল৷’’ কংগ্রেসের জেলা সভাপতি বিশ্বরঞ্জন সরকার, সিপিএমের জেলা সম্পাদক মৃণালকান্তি রায়ও একই অভিযোগ করেন। যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি মোহন শর্মা বলেন, ‘‘বিরোধীরা অভিযোগ তুলতেই পারে৷ কিন্তু আলিপুরদুয়ারে এ দিন উৎসবের মেজাজে ভোট হয়েছে৷’’ জেলার এসপি আভারু রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘গোলমালের অভিযোগ পেয়েই পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE