প্রতীকী ছবি।
কেউ দুপুর বেলায় চুপিচুপি বাড়ি আসেন টিফিনবক্সে খাবার নিতে। কেই আবার গভীর রাতে বাড়িতে এসে দরজায় কড়া নাড়েন। অভিযোগ, পুলিশের মামলায় জেরবার হয়ে এ ভাবেই দিন কাটাতে হচ্ছে জলপাইগুড়ির একাধিক বিজেপি কর্মীকে। কিন্তু জেলার নেতাদের এসবে কোনও হুঁশ নেই, উঠছে এমনই অভিযোগ।
কেবল একান্ত আলোচনাতেই নয়, কখনও কখনও সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ দেখা যাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়াতেও। নিচুতলার ক্ষুব্ধ কর্মীরা দলের নেতৃত্বের দিতে অভিযোগের আঙুল তুলছেন। কখনও আবার দলের নেতৃত্বের যোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন ক্ষুব্ধ কর্মীদের কেউ কেউ।
সামনেই লোকসভা ভোট। সেই কথা মাথায় রেখে দিল্লি থেকে জেলায় সংগঠন বাড়াতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু জেলার মধ্যে কর্মীদের ক্ষোভ সামলে সংগঠন কতটা বাড়বে সেটা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন জেলার বিজেপি নেতারা।
ক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা জানাচ্ছেন, পুলিশের দায়ের করা মামলায় জন্য বিজেপির প্রায় তিনশো নেতা-কর্মী ঘরছাড়া। বেশ কিছু কর্মী জেলে রয়েছেন। কর্মীদের অভিযোগ, তাঁদের বাড়ি ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা তো দূরের কথা জলপাইগুড়ি জেলায় এ নিয়ে কোনও আন্দোলনও হয়নি।
গত বছরের ৭ ডিসেম্বর কোচবিহারে দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি অমিত শাহের সভায় (যা পরে বাতিল হয়ে যায়) যাওয়ার পথে ধূপগুড়ির শালবাড়িতে পুলিশের সঙ্গে জেলার বিজেপি কর্মীদের খন্ডযুদ্ধ বেধে যায়। সেই ঘটনায় বিজেপির ৬৫ জন নেতা-কর্মীর নামে খুনের চেষ্টা, সরকারি কাজে বাধা দান-সহ একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করে পুলিশ। এছাড়াও ওই ঘটনায় আরও শতাধিক জড়িত বলেও মামলায় উল্লেখ করে পুলিশ। বিজেপির দাবি, এই মামলায় জড়িত অভিযোগে তাঁদের কর্মীদের বাড়িতে এখনও নিয়মিত হানা দিচ্ছে পুলিশ। পুলিশি গ্রেফতারি এড়াতেই কর্মীরা বাড়ি ফিরতে পারছেন না বলে দাবি।
জেলা বিজেপি নেতাদের দাবি, সকলের আগাম জামিনের আবেদন হয়েছে। মামলার খরচও দল বহন করছে। যদিও এই যুক্তি মানতে রাজি নন কর্মীরা। তাঁদের একজনের কথায়, “কবে জামিন পাব তার ঠিক নেই। দল যদি লাগাতার আন্দোলন করত, পুলিশকে চাপে রাখত তবে প্রতি রাতে পুলিশ অভিযান চালাত না। বাড়িতে থেকেই অন্য রাজনৈতিক মামলার মতো এ মামলাও লড়তে পারতাম।”
সোশ্যাল মিডিয়ায় এক কর্মী লিখেছেন, “প্রায় ৬০০-র বেশী কর্মী আজ বাড়ি ছাড়া। নেতৃত্ব চুপচাপ, কোনও হেলদোল নেই।’’ নেতাদের একটি অংশ দলের অনুদান এবং দল বিস্তারের টাকা নিজেরা আত্মসাৎ করছেন বলেও অভিযোগ করেছেন কেউ কেউ। আর এক কর্মী লিখেছেন, “রাজনৈতিক মামলায় জামিন নিতে কি এত দেরি হয়?’’ তাঁর আরও দাবি, আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার আগে কী করণীয় তা ঠিক করার মত যোগ্য নেতা দলে নেই। ক্ষোভ জানিয়েছেন দলের কৃষক সংগঠনের জেলা স্তরের এক নেতাও।
ক্ষোভ প্রকাশ্যে আসায় অস্বস্তিতে দলের নেতারা। বিজেপির জেলা সভাপতি দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, “আমরা কর্মীদের পাশে আছি। এই ক্ষোভ সাময়িক।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy