Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বাসে বিদ্যুতের তার, রক্ষা যাত্রীদের

শুক্রবার দুপুর একটা নাগাদ এই ঘটনার জেরে উত্তেজনা ছড়ায় রায়গঞ্জের শিলিগুড়িমোড় সংলগ্ন গোশালা বাজার এলাকায়।

দুর্ঘটনাগ্রস্ত সেই বাস। নিজস্ব চিত্র

দুর্ঘটনাগ্রস্ত সেই বাস। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:৪৮
Share: Save:

দুপুরবেলার গোশালা বাজার। তখনও খোলা দোকানপাট। হঠাৎই রাস্তা দিয়ে ছুটে যাওয়া একটি বাসের মাথায় আটকে যায় সবার চোখ। যাত্রীবাহী বাসটির মাথায় রাখা বিপুল পরিমাণ পণ্যসামগ্রীর মধ্যে থাকা লোহার রডে আটকে গিয়েছে ইলেকট্রিকের ওভারহেড তার। বাসটি ছুটতে থাকায় পরপর ছিঁড়ে পড়ছে সেই তার। প্রবল টানে হেলে গিয়েছে রাস্তার ধারে থাকা বিদ্যুতের খুঁটিও।

আতঙ্কে চিৎকার করতে শুরু করেন স্থানীয় দোকানদার ও পথচারীরা। বেগতিক বুঝে বাস থামান শিলিগুড়ি থেকে বালুরঘাটগামী ওই বেসরকারি বাসের চালকের। বাসের যাত্রী পেশায় ব্যবসায়ী সুরঞ্জন সরকার বলেন, ‘‘পথচারীরা বাসটি না থামালে তড়িদাহত হয়েই হয়তো মরতে হত আমাদের।’’

শুক্রবার দুপুর একটা নাগাদ এই ঘটনার জেরে উত্তেজনা ছড়ায় রায়গঞ্জের শিলিগুড়িমোড় সংলগ্ন গোশালা বাজার এলাকায়। বাস চালককে ধরে মারধর শুরু করেন এলাকার বাসিন্দারা। খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছে তাঁকে উদ্ধার করে। বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে বিদ্যুতের তার সরিয়ে বাসটিকে রায়গঞ্জের পুর বাসস্ট্যাণ্ডে পাঠিয়ে দেয়। ওই ঘটনায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। এক ঘণ্টা পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এলাকার ব্যবসায়ী তারাপদ পাল ও শিবু সেন বলেন, ‘‘হঠাৎ দেখি শিলিগুড়ি মোড়ের দিক থেকে আসা একটি বাস পরপর কয়েকটা তার ছিড়ে এগোচ্ছে। তারে আগুনের ফুলকি দেখে আমরা আতঙ্কিত হয়ে চিৎকার শুরু করে দিই। খুব জোর বেঁচে গিয়েছেন যাত্রীরা।’’

উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক আয়েশা রানির অভিযোগ, বাসটিতে বেআইনি ভাবে পণ্য পরিবহণ করা হচ্ছিল। তিনি বলেন, ‘‘বড়সড় দুর্ঘটনা বা বহু মানুষের প্রাণহানির আশঙ্কা ছিল। বাসের চালক ও মালিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’ তবে জেলাশাসকের অভিযোগ মানতে নারাজ জেলা বাস ও মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্লাবন প্রামাণিক। তাঁর যুক্তি, শিলিগুড়ি থেকে বালুরঘাট যাওয়ার পথে বাসটি ঘোষপুকুর ও অসুরাগড় এলাকার দু’টি টোলপ্লাজা পেরিয়েছে। তাই ওভারলোডিং থাকলে সেখানেই ধরা পড়ে যেত। তিনি বলেন, ‘‘দুর্ঘটনাটি দুর্ভাগ্যজনক। যাত্রীদের তড়িদাহত হওয়ার আশঙ্কা ছিল। এরপর থেকে বাসের ছাদে বিভিন্ন সামগ্রী তোলার আগে চালক ও কনডাক্টর যাতে সতর্ক থাকেন, সেই বিষয়টি দেখা হচ্ছে।’’

পুলিশের দাবি, বাসটিতে মহিলা ও শিশু-সহ প্রায় ৪০ জন যাত্রী ছিলেন। বাসটির ছাদে ফল ও বিভিন্ন খাবারের একাধিক বস্তার উপর একাধিক লোহার রড রাখা হয়েছিল। সেই রডগুলিই কোনও ভাবে রাস্তার উপর দিয়ে যাওয়া বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায়। এ দিন বিকালে জেলাশাসকের নির্দেশে জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা পুর বাসস্ট্যাণ্ডে গিয়ে বাসটি কর্ণজোড়া পুলিশ ফাঁড়ির হাতে তুলে দিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bus Electric war Passengers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE