অনশনে: বিনয়ের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন চিকিৎসক। নিজস্ব চিত্র
বিনয় তামাংয়ের অনশনের সমর্থনে পাহাড় জুড়ে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ, মিছিল। দার্জিলিঙ, কালিম্পং, কার্শিয়াং, মিরিক সহ বিভিন্ন এলাকায় বৃহস্পতিবার সভা করে বিনয়পন্থী মোর্চা। সেই সব সভা থেকে চা বাগান মালিকদের বিরুদ্ধে স্লোগানও দেওয়া হয়। এ দিন অনশন মঞ্চে হাজির হয়ে বিনয়ের আন্দোলনকে সমর্থন জানান বিভিন্ন দলের নেতারা। ছিলেন তৃণমূল সাংসদ শান্তা ছেত্রী, সিপিএম নেতা সমন পাঠক, জাপ নেতা অমর লামা, ইন্ডিয়ান ডেমোক্রেটিক রিপাবলিকান ফ্রন্টের সভাপতি সঞ্জয় ঠাকুরি সহ অনেকেই।
ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে ২০ শতাংশ বোনাসের দাবি থেকে একচুলও না সরার কথা ঘোষণা করেছেন সাত চা শ্রমিক সংগঠনের যৌথ কমিটির নেতারা। এ দিন দার্জিলিঙে জরুরি বৈঠকে বসেন তাঁরা। সেই বৈঠক শেষে সমন পাঠক বলেন, ‘‘আমরা বৈঠকে যাচ্ছি। তবে ২০ শতাংশের কম হারে কোনও ভাবেই বোনাস চুক্তি হবে না। আর সেই দাবি যদি মালিকরা না মানেন তবে এ বারের সর্বশক্তি দিয়ে আন্দোলন হবে। তার জন্য মালিকরাই দায়ী থাকবে।’’
মোর্চা সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত পাঁচ বার দার্জিলিং জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকরা বিনয়ের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। আজকেও চিকিৎসকরা ফের তাঁকে হাসাপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন। তবে এ দিনও সেই পরামর্শ মানতে চাননি বিনয়। পাহাড়ের বেশ কয়েকটি অরাজনৈতিক সংগঠনের কর্মকর্তারা এ দিন অনশন মঞ্চে উপস্থিত হয়েছিলেন। তাঁরাও অনশন আন্দোলনের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন। কয়েকটি ধর্মীয় সংগঠনের পক্ষ থেকেও অনশন মঞ্চে উপস্থিত হয়ে বিনয়ের শারীরিক সুস্থতা ও আন্দোলনের সফলতার জন্য প্রার্থনা করা হয়। এক চিকিৎসক বলেন, ‘‘বিনয়ের তামাংয়ের যা শারীরিক পরিস্থিতি, তাতে যে কোনও সময় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হতে পারে। আমরা তিন ঘণ্টা পর পর তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছি। অ্যাম্বুল্যান্সও তৈরি রাখা হয়েছে।’’ মোর্চার সাধারণ সম্পাদক অনীত থাপা সহ কেন্দ্রীয় কমিটির বেশ কয়েক জন নেতা বিনয়ের সঙ্গে অনশন মঞ্চেই রাত কাটাচ্ছেন।
বুধবার থেকেই পাহাড়ের বিভিন্ন এলাকা থেকে দলীয় সমর্থকরা বিনয়কে দেখতে মোটরস্ট্যান্ডে ভিড় জমাচ্ছেন। অনেকে দিনভর সেখানেই থাকছেন। এদিন মঞ্চ থেকে অনীত বলেন, ‘‘চা বাগান মালিকরা যে ভাবে শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করতে চাইছেন, তা আমরা কোনও পরিস্থিতিতেই মেনে নেব না। দ্রুত দাবি মানা না হলে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে মালিকদের বিরুদ্ধে পাহাড় জুড়ে আরও বড় আন্দোলন হবে।’’
আগেই শ্রমিক নেতারা ঘোষণা করেছিলেন অনশন প্রত্যাহার করলেও কারখানা থেকে তৈরি চা তাঁরা বাইরে যেতে দেবেন না। সেই ঘোষণা মতো উৎপাদন হলেও পাহাড়ের কোনও কারখানা থেকেই চা বাইরে যাচ্ছে না। ফলে সমস্যায় পরেছেন বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা।
সূত্রের খবর, শ্রমিকদের দাবি মেনে নিয়ে দ্রুত সমস্যা মিটিয়ে ফেলতে চাইছেন মালিকদের কয়েক জন। যদিও ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের আগে বোনাস নিয়ে সংবাদমাধ্যমে কোন মন্তব্য করতে চাননি মালিক সংগঠনের নেতারা। এদিন শান্তা ছেত্রী বলেন, ‘‘মালিকরা ইচ্ছে করে সমস্যা তৈরি করেছে। শ্রমিকদের দাবি মেনে নিয়ে ওদের পাহাড়ের সুস্থতা ফিরিয়ে আনা উচিত। আমরা সার্বিক ভাবে বিনয় তামাংয়ের আন্দোলনের পাশে আছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy