Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Crime Death

বিধায়ক-মৃত্যুতে যুবককে আটক

সিআইডি জানিয়েছে, নিলয় সিংহ ইংরেজবাজার শহরের মকদমপুর এলাকার এক বহুতল আবাসনে থাকতেন।

জনপথে: হেমতাবাদের বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের মৃত্যুর ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে কংগ্রেসে মিছিল। রায়গঞ্জে। ছবি: চিরঞ্জীব দাস

জনপথে: হেমতাবাদের বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের মৃত্যুর ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে কংগ্রেসে মিছিল। রায়গঞ্জে। ছবি: চিরঞ্জীব দাস

অভিজিৎ সাহা ও গৌর আচার্য
মালদহ, রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২০ ০২:০৩
Share: Save:

বিধায়কের রহস্য মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত মালদহের বাসিন্দা নিলয় সিংহকে আটক করল সিআইডি। তবে এখনও অধরা মালদহেরই বাসিন্দা অন্য অভিযুক্ত মাবুদ আলি। সিআইডির দাবি, নিলয়ের মাধ্যমে মাবুদের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদের বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের। গোয়েন্দাদের দাবি, তিন জনের মধ্যে কোটি টাকারও বেশি আর্থিক লেনদেন হয়েছিল। বিধায়ক-মৃত্যুর নেপথ্যে সেই আর্থিক লেনদেন রয়েছে বলে প্রাথমিক অনুমান সিআইডি ও পুলিশের। প্রশাসন সূত্রে খবর, বিধায়কের পকেটে যে চিরকুটটি পাওয়া গিয়েছে, তাতে এই দু’জনের নাম ও ফোন নম্বর রয়েছে। সেখানে দাবি করা হয়েছে, মৃত্যুর সঙ্গে এঁরা দু’জন দায়ী। এ দিন নিলয়কে আটক করার পরে তাঁকে রায়গঞ্জে নিয়ে যায় সিআইডি।

সিআইডি জানিয়েছে, নিলয় সিংহ ইংরেজবাজার শহরের মকদমপুর এলাকার এক বহুতল আবাসনে থাকতেন। তাঁর স্ত্রী ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের শিক্ষিকা। মেয়ে ছাত্রী। নিলয় আদতে উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জের বাসিন্দা ছিলেন। কাজ করতেন রায়গঞ্জের সমবায় ব্যাঙ্কে চুক্তিভিত্তিক অস্থায়ী কর্মী হিসেবে। সমবায় ব্যাঙ্ক সূত্রেই হেমতাবাদের বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের সঙ্গে পরিচয় হয় নিলয়ের। তার পরে দেবেন্দ্রনাথের বাড়িতে ভাড়া থাকতে শুরু করেন তিনি।

ঘটনায় অন্য অভিযুক্ত মাবুদ আলি মালদহেরই চাঁচল থানার মতিহারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ইসলামপুর গ্রামের বাসিন্দা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাবুদ কোন পেশার সঙ্গে যুক্ত তা কেউ বলতে পারেন না। তবে এলাকায় কোনও জমি বিক্রি হলেই ক্রেতা হিসেবে সবার আগে এগিয়ে আসতেন মাবুদই। গ্রামে তাঁর দোতলা বাড়ি। স্ত্রী এবং দুই ছেলেকে নিয়ে সেখানে থাকতেন তিনি। সম্প্রতি, সাদা রঙের একটি বিলাসবহুল গাড়ি কিনেন মাবুদ। অপহরণ এবং গোলমাল পাকানোর অভিযোগে দু’বার গ্রেফতার হন মাবুদ। জেলও খেটেছিলেন।

বিধায়কের সঙ্গে মাবুদের কী ভাবে যোগাযোগ হল, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। সিআইডি কর্তাদের দাবি, নিলয়ের সঙ্গে প্রথমে পরিচয় হয় মাবুদের। মাবুদ দিল্লিতে বড় ব্যবসার কাজ করেন বলে জানান দেবেন্দ্রনাথ রায়কে। তিন জন মিলে একসঙ্গে ব্যবসা শুরু করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তাঁদের কথায় প্রায় কোটি টাকার বিনিয়োগ করেছিলেন দেবেন্দ্রনাথ। তবে বিনিয়োগের পর তিনি আর নিলয় ও মাবুদের হদিশ পাচ্ছিলেন। ফলে অস্বস্তিতে পড়ে যান হেমতাবাদের বিধায়ক।

গোয়েন্দা সূত্রে খবর, সমবায় ব্যাঙ্কে আর্থিক দুর্নীতির দায়ে নিলয়কে চাকরি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তার পর থেকে নিলয় মালদহের বাড়িতেই ছিলেন। যদিও নিলয়ের দাবি, “বিধায়কের সঙ্গে আগাম পরিচিত ছিল ঠিকই। তবে মৃত্যুর ঘটনায় কোনও যোগ নেই।” টাকার বিষয়েও কিছু জানা নেই বলে দাবি করেছেন তিনি। তাঁর স্ত্রী শম্পা সাহা বলেন, “মাবুদ আমাদেরও ঠকিয়েছেন। আমার স্বামী, বিধায়ক একসঙ্গে ব্যবসা করার কথা ছিল। সেই সূত্রে আমার স্বামী মাবুদকে টাকা দেন। এখানে আমার স্বামীর কোনও দোষ নেই।” মাবুদের বাবা রব্বুল হোসেন বলেন, “আমাদের সঙ্গে ছেলের কোনও সম্পর্ক নেই। ছেলে পরিবার নিয়ে আলাদা থাকে। ছেলে কী কাজ করে, তা আমাদেরও জানা নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Death BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE