কড়া: বাসের ছাদে সামাজিক দূরত্ববিধি অমান্য করে যাত্রীদের ভিড়। পুলিশ বাস আটকে যাত্রীদের ছাদ থেকে নামিয়ে দেয়। রায়গঞ্জ শহরের বিদ্রোহী মোড় এলাকায়। নিজস্ব চিত্র
বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টা। ইংরেজবাজার শহরের রথবাড়ি মোড়ে যাত্রী টানতে হাঁক দিচ্ছেন বেসরকারি বাসের এক কনডাক্টর। তাঁর মাস্ক ঝুলছে থুতনিতে। মাস্ক ছাড়াই বাসে উঠছেন যাত্রীদের অনেকে। মাস্ক থুতনিতে কেন? কনডাক্টরের জবাব, ‘‘চিৎকার করে ডাকতে হচ্ছে যাত্রীদের। মুখে মাস্ক থাকলে সকলে ঠিকমতো শুনতে পাচ্ছেন না। আর মাস্ক না থাকলে যাত্রীদের উঠতে বাধা দিলে পুরো বাসই কার্যত ফাঁকা হয়ে যাবে।”
মালদহ-নালাগোলা, চাঁচল, মানিকচক, মুর্শিদাবাদ থেকে বালুরঘাট— সব রুটের বাসে কার্যত একই ছবি। অভিযোগ, উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের কয়েকটি বাসেও মাস্ক ছাড়াই ওঠানামা করছেন যাত্রীদের একাংশ। অথচ, ‘মাস্ক ছাড়া প্রবেশ নিষেধ’ বলে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে বেসরকারি ও রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের একাধিক বাসে।
মালদহের বাস ও মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরী সভাপতি নিমাই বিশ্বাস বলেন, “ভিড়ের সুযোগে যাত্রীদের একাংশ মাস্ক না পরেই বাসে উঠে পড়ছেন। ভাড়া নেওয়ার সময় বিষয়টি নজরে পড়ছে কনডাক্টরদের। মাঝরাস্তায় যাত্রীদের তো নামিয়ে দেওয়া যায় না। মাস্কের ব্যবহার নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। সে জন্য প্রশাসনের তরফে প্রচার প্রয়োজন।”
করোনা সংক্রমণে উত্তরবঙ্গের শীর্ষে মালদহ। অভিযোগ, সংক্রমণ বাড়লেও এখনও সচেতন হননি জেলার বাসিন্দাদের একাংশ। এ মাসে রাজ্য সরকারের নির্দেশে পূর্ণ লকডাউনের পরের দিন, বৃহস্পতিবার রাস্তাঘাটে উপচে পড়ে ভিড়। ইংরেজবাজার শহরের রথবাড়িতে দিনভর ভিড় করে চলে আনাজ, ফল কেনাবেচা। অভিযোগ, দোকান-বাজার, রাস্তাঘাটে মাস্ক না পরে দেখা যাচ্ছে অনেককেই। একই ছবি জেলার বিভিন্ন রুটের সরকারি, বেসরকারি বাসেও।
জেলাবাসীর একাংশের অভিযোগ, বাসে মাস্ক ছাড়া যাত্রী ওঠানোর ক্ষেত্রে কড়া নির্দেশিকা রয়েছে প্রশাসনের। কিন্তু সেই নির্দেশিকা অমান্য করে মাস্ক ছাড়াই অবাধে বাসে ওঠানামা করছেন যাত্রীদের একাংশ।
এ দিন বাসের জন্য মাস্ক না পরে অপেক্ষা করছিলেন ষাটোর্ধ এক ব্যাক্তি। মাস্ক কোথায়? তাঁর জবাব, ‘‘বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় পরতে ভুলে গিয়েছি।’’ এর পরেই বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া দোকান থেকে তিনি নতুন মাস্ক কিনলেন। মুখে মাস্ক না থাকা এক মহিলা বলেন, “সবসময় মাস্ক পরে থাকতে দম যেন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।”
অভিযোগ, বাসগুলিতে স্যানিটাইজ় করার ব্যবস্থাও নেই। মালদহের অতিরিক্ত জেলাশাসক পালদেন শেরপা বলেন, “মাস্ক বিতরণ থেকে প্রচার সবই করা হচ্ছে। প্রয়োজনে প্রচার আরও বাড়ানো হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy