অসময়ে: দিনভর বৃষ্টিতে জল জমে গিয়েছে শিলিগুড়ির রাস্তায়। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
ঠান্ডার রেশ এখনও কাটেনি। শিলিগুড়িতে এর মধ্যেই থাবা বসিয়েছে ডেঙ্গি। জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত শহরে কয়েক জনের ডেঙ্গি উপসর্গ ধরা পড়েছে। পুরসভা এবং স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের ৭ এবং ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গির সংক্রমণ শুরু হয়েছে। দু’টি ওয়ার্ডেই এক জন করে আক্রান্ত হয়েছেন। গত বছর ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গির রেশ চলেছে। ঠান্ডার মধ্যেও ডেঙ্গির মশা সক্রিয় দেখে চিকিৎসকদের অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। তাঁদের আশঙ্কা ছিল ঠান্ডা কাটলেই ডেঙ্গি দ্রুত হারে বাড়তে পারে। সেই কারণে পুরসভার তরফেও জানুয়ারি থেকে স্প্রে, ফগিংয়ের কাজ শুরু করা হয়েছে।
শিলিগুড়ির ৭ এবং ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে বস্তি এলাকা রয়েছে। সে সব জায়গা কোনও ভাবে জল জমে ডেঙ্গির বাহক মশার বংশ বিস্তার হতে পারে বলে চিকিৎসকদের অনুমান। পতঙ্গবিদ দিয়ে তা পরীক্ষা করা দরকার বলে জানান তাঁরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ২৭ ফেব্রুয়ারি স্টেট গেস্ট হাউজে জেলাপ্রশাসনের তরফে জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে ডেঙ্গি প্রতিরোধ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য বলেন, ‘‘জানুয়ারি মাসে দু’জনের ডেঙ্গি আক্রান্ত হওয়ার খবর রয়েছে। তবে বছরের শুরু থেকেই প্রতিরোধের কাজ করতে বলা হয়েছে।’’ তিনি জানান, ইতিমধ্যেই কলকাতায় ডেঙ্গি প্রতিরোধ নিয়ে কর্মশালা করা হয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে। ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে ডিস্ট্রিক্ট মনিটরিং টিমের বৈঠকও হয়েছে। সেখানে ছিলেন পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মী, আধিকারিকরাও।
মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘দু’একটি হতে পারে। তবে পুরসভা শুরু থেকেই ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজ শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই সচেনতা প্রচারে র্যালি করা হয়েছে। স্প্রে, ধোঁয়া ছড়ানোর কাজও জানুয়ারি থেকেই শুরু হয়েছে।’’
বর্তমান আবহাওয়ার পরিস্থিতি নিয়েও চিকিৎসকরা উদ্বিগ্ন। সোমবার এবং মঙ্গলবার হালকা বৃষ্টি হয়েছে। তাতে আনাচেকানাচে জল জমতে পারে। দিনে রোদের তাপ বাড়লে ডেঙ্গির বাহক মশা জন্মানোর উপযুক্ত পরিবেশ পাবে। সামনে পুর নির্বাচন। সেই সময় ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজের গতি কেমন হবে তা নিয়েও উদ্বিগ্ন শহরবাসী। ওই সময় ভোট প্রচারে কাউন্সিলররা ব্যস্ত থাকবেন বলে ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজ কতটা হবে তা নিয়ে সন্দেহে তাঁরা। তবে কোনও ভাবেই ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজে শৈথিল্য হবে না বলে জানিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ।
এই বছর বাড়ি বাড়ি ডেঙ্গির সমীক্ষা করতে যে দল যাবে তাদের তিনটি দল পিছু একটি করে ‘ভেক্টর কন্ট্রোল টিম’ থাকবে। স্প্রে, ফগিংয়ের কাজ তারা করবেন এবং ডেঙ্গি রুখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নেবেন। কোথাও আবর্জনা জমে থাকছে কি না, থাকলে তা সাফাই করার কাজে নজরদারি করতে ‘অ্যাপ’ চালু করা হয়েছে পুর দফতরের তরফে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy