আজব-সওয়ারি: নিয়ম না মেনেই বাইক সফর। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
অনেক সময় সীমান্তবর্তী এলাকায় নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস সহজলভ্য হয় না। বিশেষজ্ঞদের মতে দৈনন্দিন জিনিস সহজে পাওয়ার জন্য অনেকসময় সীমান্তবর্তী এলাকায় সীমান্ত পেরিয়ে সেসব দেওয়া-নেওয়া চলে। এরকম কাজ বন্ধ করার জন্য আয়োজন করা হচ্ছে ‘বর্ডার হাট’। দেশের ত্রিপুরা এবং মেঘালয় সীমান্তে এমন চারটি হাট বেশ কয়েক বছর ধরে চলছে। সরকারি সূত্রের খবর, গত পাঁচ বছরে ওই চারটি হাটে ব্যবসার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৭ কোটি। এ বার দুই দেশের সীমান্তে আরও এমন ‘বর্ডার হাট’ তৈরির প্রকল্প শুরু হয়েছে। বিশেষ করে, উত্তরবঙ্গের চ্যাংরাবান্ধা, হিলি, দিনহাটা এবং ফুলবাড়ি সীমান্তকে চিহ্নিত করা হয়েছে। কী ভাবে দুই দেশের মধ্যে আলোচনার পরে তা দ্রুত কার্যকরী করা যায় তা নিয়ে বৈঠক, আলোচনাও শুরু হয়ে গেল।
ব্রিটিশ হাইকমিশনের ‘ডিপার্টমেন্ট অব ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট’র (ডিএফআইডি) তরফে এ দেশের একটি সংস্থা প্রকল্প তৈরির কাজে হাত দিয়েছে। সঙ্গে রয়েছে বাংলাদেশের ঢাকার একটি সংস্থা। এই প্রকল্পে ডিএফআইডি আর্থিক সাহায্যও করবে। কেন্দ্রীয় সরকারের সবুজ সংকেতের পরে গত শনিবার এবং রবিবার ত্রিপুরার আগরতলায় দুই দেশের প্রতিনিধি, ভারতের শুল্ক মন্ত্রক, শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি বৈঠক হয়েছে। সেখানেই উত্তরবঙ্গের জন্য চারটি এলাকাকে বাছাই করা হয়েছে। প্রতিরক্ষা ও বিদেশ মন্ত্রক, বাংলাদেশ সরকার এবং প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা, সমীক্ষা করে কী ভাবে বর্ডারহাটগুলো গড়ে তোলা যায়, সেই প্রক্রিয়া শুরু হবে।
মূলত দুই দেশের সীমান্তবর্তী বাসিন্দাদের হাটের মাধ্যমে নিয়মানুযায়ী কেনাবেচা করার জন্য এই প্রকল্পটি তৈরি হয়েছে। উত্তরবঙ্গের ব্যবসায়ীদের অন্যতম সংগঠন ফোসিনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ দাসকে রাজ্যস্তরের ‘মেন্টার’ হিসাবে নির্বাচিত করা হয়েছে। বিশ্বজিৎবাবু বলেন, ‘‘সীমান্ত গেট দিয়ে সাধারণ বা নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস গ্রামবাসীরা এপার ওপার করতে পারেন না বলেই অনেক সময়ই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের চোরাচালান হয়। হাট তৈরি হলে তা বন্ধ করা যায়।’’ প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার নির্বাহী অধিকর্তা বিপুল চট্টোপাধ্যায়, অধিকর্তা ব্রতীন্দ্র ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি হলেই তা দিল্লিতে বিস্তারিত আলোচনা হবে। তার পরেই পরিকাঠামোর কাজ হবে।’’
সরকারি সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়মে সীমান্তের জিরো পয়েন্ট এলাকায় গড়ে তোলা হয় একটি হাট। সেখানে সমস্ত পরিকাঠামো থাকে। আপাতত কেন্দ্রের নিয়মে সপ্তাহে একদিন বসতে পারে বর্ডার হাট। সেখানে দুই দেশের ৫০ জন করে মোট ১০০ জন ব্যবসায়ী বসতে পারেন। হস্তশিল্প, কাপড়-জামাকাপড়, কৃষিপণ্য, সাইকেল, প্রসাধনী সামগ্রী, আলু-পেঁয়াজ থেকে মাছ-মাংসের মত সামগ্রী হাটে নিয়ে আসা যায়। সীমান্তের থেকে পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে বসবাসকারীরা ক্রেতা এবং বিক্রেতা হতে পারেন। তাদের সচিত্র পরিচয়পত্র, নথি দেখে হাটে কেনাবেচার অনুমতি দেয় দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। তবে একজন ক্রেতা একটি হাটে আন্তজার্তিক বাজারের হিসাবে ২০০ ডলারের জিনিসপত্রের বেশি কিনতে পারেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy