প্রতীকী ছবি
কোনও একটি গোষ্ঠী ইচ্ছে করে ছেলেধরা গুজব ছড়াচ্ছে বলে স্বীকার করে নিলেও, কারা এ কাজ করছে তার কোনও ধারণাই এখনও নেই পুলিশের কাছে।
প্রথমে ক্রান্তি। তারপরে ধূপগুড়ি হয়ে জলপাইগুড়ি শহরতলিতেও। ছেলেধরা গুজব চলছে জলপাইগুড়ি জেলা জুড়ে। গুজব ঠেকাতে জেলা পুলিশের তরফে হেল্প লাইন নম্বর দেওয়া হয়েছে। পুলিশ কন্ট্রোল রুমের নম্বরও প্রচার করা হচ্ছে। তাতে ছেলেধরা গুজব কতটা ঠেকানো যাবে তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষত ক্রান্তি, ধূপগুড়ি এবং জলপাইগুড়ি তিন জায়গাতেই পুলিশকেই আক্রমণের মুখে পড়তে হয়। সুপরিকল্পিত ভাবেই পুলিশকে আক্রমণের নিশানা করা হয়। বিশৃঙ্খলা ছড়াতেই গুজব ছড়ানো হয়েছে বলে দাবি পুলিশের। পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি সাংবাদিক বৈঠক করে দাবি করেন কোনও একটি গোষ্ঠী উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এই গুজব ছড়িয়ে দিচ্ছে। পুলিশ সুপার বলেন, “সেই প্ররোচনায় পা দিচ্ছে সাধারণ মানুষ। সাধারণ মানুষকে বলছি আইন নিজের হাতে নেবেন না। সন্দেহ হলে থানায় জানান।”
গত ২৫ জুন এর জেরে ক্রান্তি এলাকা রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। ছেলেধরা সন্দেহে ধৃতদের জনতার হাতে তুলে দিতে হবে দাবি করে থানায় হামলা চালানো হয়। এরপর রাজগঞ্জ, ধুপগুড়ি, রংধামালি, ধাপগঞ্জ, ডেঙ্গুয়াঝাড়, বালাপাড়ায়, পরপর একাধিক ঘটনা ঘটেছে ছেলেধরা গুজবে। বহিরাগতদের এলাকায় দেখে সন্দেহ হওয়ার পরই শুরু হয় পিটুনি। তারপরে বারবার ছেলেধরা গুজবে উত্তপ্ত হচ্ছে ধূপগুড়ি। উন্মত্ত জনতার হাতে মার খেতে হয়েছে পুলিশ কর্মীদেরও। জলপাইগুড়ির আনন্দচন্দ্র কলেজের সমাজবিদ্যার শিক্ষক রণজিৎ বর্মন বলেন, “সমাজে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখার জন্য নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তার বাইরে গিয়ে যখন জনতা আইন হাতে তুলে নিতে থাকে তখন পরিস্থিতি উদ্বেগজনক বলেই ধরতে হবে।”
পুলিশ সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত এই গুজবে যত গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে, তার কোনও ক্ষেত্রেই পিটুনির শিকার হওয়া ব্যক্তিরা ছেলেধরা বলে প্রমাণ হয়নি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে নির্যাতিত বা নির্যাতিতারা হয় মানসিক ভারসাম্যহীন বা নেশাগ্রস্ত।
জেলার পুলিশ কর্তাদের একাংশের ধারণা, একটা চক্র কাজ করছে এর পেছনে। কোনও বড় ঘটনা থেকে পুলিশ-প্রশাসনের নজর ঘুরিয়ে দিতেই এই গুজব ছড়ানো হচ্ছে। যাতে পুলিশকর্মীরা এই নিয়ে ব্যস্ত থাকবে আর সেই সু্যোগে ওই চক্র তাদের উদ্দেশ্য সফল করে বেরিয়ে যাবে। পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি জানিয়েছেন, গত একমাসে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলির সূত্র ধরে তারা প্রাথমিকভাবে কিছু তথ্য- প্রমাণ পেয়েছেন।
গুজব রুখতে সচেতনতামুলক ব্যবস্থাও নিয়েছে পুলিশ। গুজবে কান না দেওয়ার জন্য মাইকিং, সোশাল সাইটে প্রচার চলছে। তাতেও খুব বেশি কাজ হয়নি। ঘটনা ঘটছেই। তাই এ বার কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে জেলা পুলিশ।
পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, কোনও বহিরাগতকে সন্দেহ হলে সংশ্লিষ্ট এলাকার থানায় জানাতে। এরজন্য একটি হেল্পলাইন ও হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারও তৈরি করেছে জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy