রেবা কুণ্ডু। ছবি সংগৃহীত।
কোথাও কাজ না করেই টাকা তুলে নিয়েছিলেন। কোথাও সংস্কারের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা নয়ছয় করা হয়। কোচবিহার পুরসভার সদ্য প্রাক্তন চেয়ারপার্সন রেবা কুণ্ডুর বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ উঠেছে।
স্বয়ং দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবারই মিরিকে জানিয়ে দিয়েছেন, দুর্নীতি বরদাস্ত করবেন না। সেই প্রসঙ্গে কোচবিহার পুরসভার নামও উল্লেখ করেন।
অভিযোগ, সব মিলিয়ে ১ কোটি ৭৭ লক্ষ টাকার দুর্নীতি হয়েছে পুরসভায়। তা নিয়ে আদালতের নির্দেশে গত বছরের ডিসেম্বর মাসের কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। বিজেপির দাবি, সঠিক তদন্ত হলে ওই টাকার অঙ্ক আরও কয়েকগুণ হবে। কেন পুলিশ অভিযুক্তদের কাউকে গ্রেফতার করছে না, সে প্রশ্ন তুলেও সরব হয়েছে বিজেপি। তাঁরা রাস্তায় নেমে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি নিখিলরঞ্জন দে বলেন, “উন্নয়নের কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। সাধারণ মানুষকে বঞ্চিত করে সরকারের টাকা ব্যক্তিগত কাজে লাগানো হয়েছে। সেখানে পদত্যাগ করেই সব শেষ হতে পারে না। ঘটনার উপযুক্ত তদন্ত হোক। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হোক।”
পুরসভার বিরোধী দলনেতা তথা কোচবিহার জেলা সিপিএমের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মহানন্দ সাহা বলেন, “চেয়ারপার্সন পদত্যাগ করে প্রমাণ করেছেন যে, তিনি দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। আমরা ওই ঘটনার বিচার চাই।” চেয়ারপার্সন রেবা কুণ্ডু অবশ্য আগেই ওই অভিযোগ মিথ্যে বলে দাবি করেছেন। এ দিন তিনি বলেন, “আদালতে বিচারাধীন বিষয় নিয়ে কিছু বলতে চাই না।” কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, “ওই ঘটনার তদন্ত চলছে।”
পুরসভা সূত্রের খবর, ২০১৬ সালের শেষের দিকে কোচবিহার পুরসভার চেয়ারপার্সন রেবাদেবীর বিরুদ্ধে প্রায় দু’কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। গুড়িয়াহাটির বাসিন্দা সম্রাট কুণ্ডু অভিযোগ করেন, ভবানীগঞ্জ বাজারে ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকায় একটি কাজ, হরিজনদের জন্য আবাসনের সংস্কারে প্রায় ৪২ লক্ষ টাকা এবং ১২ নম্বর ওয়ার্ডে একটি পাকা রাস্তা তৈরির কাজে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে ওই কাজগুলির কোনওটি হয়নি। অথচ ট্রেজারি থেকে টাকা তুলে নিয়েছে পুর কর্তৃপক্ষ। তথ্য জানার অধিকার আইনে ওই তথ্য হাতে পাওয়ার পরেই তা নিয়ে মামলাও রুজু করেন সম্রাটবাবু। ওই ঘটনা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কানে যেতেই তিনি পুরসভার চেয়ারপার্সনকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন। শেষপর্যন্ত শনিবার তিনি পদত্যাগ পত্র জমা দেন মহকুমাশাসকের কাছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy