Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Cooch Behar

‘ভয় নেই, শাক বেচুন’

পরীক্ষা: এই ভাবেই পথে বার হওয়াদের ‘শাস্তি’ দিয়েছে প্রশাসন। সোমবার কোচবিহার শহরে। নিজস্ব চিত্র

পরীক্ষা: এই ভাবেই পথে বার হওয়াদের ‘শাস্তি’ দিয়েছে প্রশাসন। সোমবার কোচবিহার শহরে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:৫৬
Share: Save:

দেশবন্ধু মার্কেটে শাকের ডালা নিয়ে বলেছিলেন এক বৃদ্ধা। এদিক ওদিক টোটো, ছোট গাড়িও চলছে। বৃদ্ধার দিকে এগিয়ে এলেন এক পুলিশ। বৃদ্ধা বলেন, ‘‘ঘরে খাবার নেই। তাই শাক নিয়ে বসেছি বাবা।’’ পুলিশ তাঁকে বরাভয় দিয়ে বলেন, ‘‘তোমার ভয় নেই বুড়িমা। তুমি শাক বেচো।’’

বৃদ্ধার মতো এত সহজে অবশ্য উতরে যাননি অন্যরা। বরং লকডাউন ভেঙে এ দিন যাঁরা পথে বার হয়েছিলেন, তাঁদের আচমকা ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে লালারস পরীক্ষা কেন্দ্রে। করোনা পরীক্ষা করে ছাড়া হয়েছে তাঁদের। তাতে এক-দু’জনের পজ়িটিভও বার হয়ে পড়ে। কোচবিহারের সদর মহকুমাশাসক সঞ্জয় পাল বলেন, “আইন ভেঙে রাস্তায় নেমেছিলেন যাঁরা, তাঁদের লালারস পরীক্ষা করা হয়েছে। এ ছাড়াও আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” কোচবিহারের এক পুলিশ কর্তা বলেন, “প্রয়োজন মতো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”

রাজ্য সরকারের ঘোষিত পূর্ণ লকডাউনে কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায় জনজীবন। এ দিন সকাল থেকে রাস্তায় রাস্তায় পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকদের দাপটও চোখে পড়েছে বারবার। এ দিনও বড় বড় দোকানপাট বন্ধ ছিল। বাস চলাচল করেনি। তবে সাইকেল, মোটরবাইকে চেপে কিছু লোকজনকে এ দিন বাইরে বার হতে দেখা গিয়েছে। টোটো, ছোট গাড়িও চলেছে কোচবিহার শহরে। অলি-গলি’র ভেতর ছোট ছোট দোকানও খোলা ছিল। আনাজ নিয়েও অনেকে বসেছিলেন বাজারে। সুনীতি রোড, কেশব রোড থেকে শুরু করে ভবানীগঞ্জ বাজারের দিকে পুলিশের টহলদারি ভ্যান ঘোরাঘুরি করেছে বারে বারে। মহকুমাশাসক নিজে পুলিশ ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে থেকে বাসিন্দাদের আটক করে ‘লালারস’ পরীক্ষা করিয়েছেন। দুই-একটি জায়গায় পুলিশকে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতেও দেখা গিয়েছে। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যেন দেওয়া হয়েছে ছাড়। সকাল সকাল সাইকেল নিয়ে কোচবিহার শহরের দিকে যাচ্ছিলেন দিনমজুর অমল রায়। তিনি বলেন, “বাড়িতে টানাটানি চলছে। টাকা একটিও নেই। একটু কাজের খোঁজেই যাচ্ছি।” দেশবন্ধু মার্কেটে এমন বেশ কয়েকজনকে আনাজ নিয়ে বসে থাকতে দেখা গিয়েছে। পুলিশের টহলদারি ভ্যান সেখান দিয়ে যাতায়াত করলেও কাউকে কিছু বলা হয়নি। কর্তব্যরত এক পুলিশ কর্মী বলেন, “ব্যবস্থা সব জায়গায় নেওয়া হয়েছে। আসলে কিছু কিছু মানুষ খুব অসহায় মনে হয়েছে। দেশবন্ধু মার্কেটে যারা বসেছিলেন তাঁরা প্রত্যেকেই। সতর্ক করা হয়েছিল।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cooch Behar COVID 19 Coronaviru North Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE