জয়ী: বার অ্যাসোসিয়েশনের ভোটের ফল জানার পরে। -নিজস্ব চিত্র
তৃণমূলকে রুখতে বিরোধী দলগুলির জোট হয়েছিল জলপাইগুড়ি জেলা আদালতের আইনজীবীদের ভোটে। সেই জোটের কাছে ধরাশায়ী হল তৃণমূল আইনজীবী সেলের প্যানেল। জলপাইগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালন কমিটির ২৩টি আসনের মধ্যে মাত্র ৬টা আসন জিতেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে তৃণমূলপন্থী আইনজীবীদের।
গতবার বার অ্যাসোসিয়েশনে নিরঙ্কুশ দখল ছিল তৃণমূলের। এ বারের ভোটে সভাপতি, সম্পাদক-সহ সব গুরুত্বপূর্ণ পদেই হেরেছেন শাসকদলের আইনজীবীরা। শনিবার বিকেলে ভোটের ফলাফল প্রকাশের পরে সামনে এসেছে তৃণমূলপন্থী আইনজীবীদের অর্ন্তদ্বন্দ্বও। তৃণমূলের জেলা কমিটির সম্পাদক তথা আইনজীবী নেতা সৌজিত সিংহ এ দিন আদালত চত্বরে দাঁড়িয়েই বলেন, “আমাদের নৌকা ঠিকই ছিল, কিন্তু কাণ্ডারী বাছা ঠিক হয়নি। তাই রাজ্যের সর্বত্র জয়জয়কার হলেও জলপাইগুড়িতে নৌকাডুবি হয়েছে।”
এই বার অ্যাসোসিয়েশন গত বার তৃণমূলের দখলে ছিল। সেই বোর্ডের সম্পাদক অভিজিত সরকার এ বার নির্দল হয়ে বিরোধী জোটের পক্ষে লড়েছিলেন। তিনি জিতেছেন। সভাপতি পদে তৃণমূলের প্রার্থী জেলার সরকারি আইনজীবী সোমনাথ পালকে হারিয়ে জিতেছেন নির্দল হয়ে দাঁড়ানো কমলকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সভাপতি-সম্পাদক, হিসাবরক্ষক গ্রন্থাগারিকের মতো পদাধিকারীদের মধ্যে তৃণমূলপন্থীরা পেয়েছে শুধুমাত্র সহ-সম্পাদকের পদ। নির্বাহী সদস্যের ১৫টি পদের মধ্যে তৃণমূলপন্থীরা পেয়েছে ৫টি। অন্য দিকে জোটের দখলে গিয়েছে ১০টি পদ।
একক ভাবে জয়ের ক্ষেত্রেও তৃণমূল পিছিয়ে বিজেপির থেকে। বিজেপির আইনজীবী সঙ্ঘের প্রার্থীরা ৭টি আসনে জয়ী হয়েছেন, সেখানে তৃণমূলের আইনজীবী সেলের প্যানেলের ৬ জন জিতেছেন।
জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তীর অবশ্য দাবি, “বার অ্যাসোসিয়েশনের ভোট প্রথাগত, রাজনৈতিক সমীকরণ মেনে হয় না। আমরা তৃণমূলগত ভাবে প্রচারেও যাইনি। আমাদের দলের আইনজীবী সেলের সদস্যরা লড়েছিলেন। আইনজীবীরা যাঁকে যোগ্য মনে করেছেন, ভোট দিয়েছেন।” যদিও জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি তথা জলপাইগুড়ির ভোটের দায়িত্বে থাকা গৌতম দাস বলেন, “অনৈতিক জোট হয়েছিল। বাম-কংগ্রেস হাত মিলিয়েছিল বিজেপির সঙ্গে। সে কারণেই প্যানেলের যথাযথ সাফল্য আসেনি আমাদের।”
সূত্রের খবর, এ দিন ফল প্রকাশের পরেই তৃণমূলের অন্দরে চর্চা শুরু হয়ে যায়। কেন এমন ফল হল, তা জানতে তৃণমূলের জেলা নেতারা আইনজীবী সদস্যদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন বলে জানা গিয়েছে।
তৃণমূলের এক নেতা বলেন, ‘‘দলের অনেক সক্রিয় সদস্যই দলের প্রার্থীদের ভোট দেননি।’’ বস্তুত, প্রার্থী বাছাই নিয়েই ক্ষোভের সূত্রপাত হয়েছিল। এক আইনজীবী নেতা সরাসরি দলের জেলা সভাপতিকে চিঠি দিয়ে অভিযোগ করেছিলেন যে, প্রার্থী বাছাইয়ের বৈঠকে তাঁদের ডাকা হচ্ছে না। সেই ক্ষোভকে আমল না দেওয়ায় তৃণমূলের বহু নিশ্চিত ভোটও বিরোধীদের বাক্সে গিয়েছে বলে দাবি একটি অংশের।
তৃণমূল-বিরোধী জোটের অন্যতম আহ্বায়ক সুজিত সরকার, গৌতম পালেরা বলেন, “শুভবুদ্ধিসম্পন্নদের জয় হয়েছে। জলপাইগুড়িই পথ দেখাবে রাজ্যকে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy