Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

পুজো বাঁচাতে একই মঞ্চে

এদিন এনজেপির এডিআরএম অফিসের সামনে সকাল থেকেই এডিআরএম পার্থপ্রতিম রায়ের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে শুরু করে সেন্ট্রাল কলোনি ক্লাবের কর্মকর্তারা এবং রেল কর্মচারীদের সংগঠনগুলি।

এক মঞ্চে: পাশাপাশি তিন দলের নেতা।(ডানদিকে) মঞ্চে বিজেপি নেতাও। নিজস্ব চিত্র

এক মঞ্চে: পাশাপাশি তিন দলের নেতা।(ডানদিকে) মঞ্চে বিজেপি নেতাও। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৯ ০৩:৫৮
Share: Save:

রেলবোর্ডের নির্দেশে উত্তরবঙ্গের সেন্ট্রাল কলোনির দুর্গাপুজোয় এ বার অনুমতি দেওয়া হয়নি। তার প্রতিবাদে এক মঞ্চে তৃণমূল, সিপিএম এবং কংগ্রেস। সোমবার স্থানীয়দের সঙ্গে পুজোর পৃষ্ঠপোষক তথা মন্ত্রী গৌতম দেব-সহ দলমত নির্বিশেষে রাজনৈতিক দলগুলি এডিআরএম দফতরের সামনে বিক্ষোভে সামিল হয়। শেষ পর্যন্ত বিজেপিকেও আসরে নামতে হয়। প্রায় ছয় দশক পুরনো ওই পুজো নিয়ে আন্দোলনের চাপে রেল শর্তসাপেক্ষ সিদ্ধান্ত বদলানোর আশ্বাস দিয়েছে। সাত দিনের মধ্যে পুজোর অনুমতি না পেলে একসঙ্গে আমরণ অনশন এবং পথ অবরোধের হুমকি দিয়েছে এলাকার ক্লাবগুলির যৌথমঞ্চ।

এদিন এনজেপির এডিআরএম অফিসের সামনে সকাল থেকেই এডিআরএম পার্থপ্রতিম রায়ের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে শুরু করে সেন্ট্রাল কলোনি ক্লাবের কর্মকর্তারা এবং রেল কর্মচারীদের সংগঠনগুলি। মঞ্চে আসেন পুরসভার বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকার। মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির কংগ্রস বিধায়ক শঙ্কর মালাকার এবং পুরসভার মেয়র পারিষদ শঙ্কর ঘোষরাও একই মঞ্চে উপস্থিত হন। চলে আসেন ওই পুজোর গত সাত বছরের পৃষ্ঠপোষক তথা মন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি বলেন, ‘‘শিলিগুড়ির আবেগ নিয়ে রাজনীতি একেবারেই চলবে না। দীর্ঘদিন থেকে এই পুজো হচ্ছে। এ বার হঠাৎ কী হল, যে অনুমোদন হবে না? আমি প্রয়োজনে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের জিএমের সঙ্গে কথা বলব।’’

সেন্ট্রাল কলোনির পুজোর বাজেট প্রতিবার ৩৫-৫০ লক্ষ টাকার মধ্যে থাকে। রেল কলোনির কর্মী এবং প্রাক্তন কর্মীদের উদ্যোগে শহরের এই পুজো ঘিরে শিলিগুড়িবাসীর আবেগ সীমাহীন। এ বারও প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল রেল ইন্সটিটিউটের মাঠে। হঠাৎই পুজোর প্রস্তুতি বন্ধ করতে বলে রেল। এনজেপির সিনিয়র সেকশন ইঞ্জিনিয়ার গত সপ্তাহে চিঠি দিয়ে পুজো কমিটিকে জানান, রেলবোর্ডের নির্দেশে পুজোর অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়। মাথায় হাত পড়ে কর্মকর্তাদের। কেবল সেন্ট্রাল কলোনিই নয়, এনজেপি চত্বরে ছ’টি পুজো হয় রেলের জমিতেই। গোটা শিলিগুড়িতে রেলের জমিতে সব মিলিয়ে অন্তত ৭০টি পুজো হয়। কংগ্রেস বিধায়ক শঙ্কর মালাকার বলেন, ‘‘পুজো হবেই। এই পুজো বন্ধের অধিকার রেলের নেই।’’ মেয়র পারিষদ শঙ্কর ঘোষও বলেন, ‘‘ধর্মাচরণ সাংবিধানিক অধিকার। তা কেড়ে নেওয়া চলে না।’’

বিক্ষোভে সব রাজনৈতিক দলের যোগদানে উত্তাল হয়ে ওঠে এনজেপি। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ঘটনাস্থলে আসেন বিজেপির জেলা সভাপতি অভিজিৎ রায়চৌধুরীও। তিনি অবস্থান মঞ্চ ঘুরে এডিআরএমের সঙ্গে দেখা করেন। তার পর বলেন, ‘‘পুজো বন্ধের পক্ষে আমরা নই। দার্জিলিং এবং জলপাইগুড়ির সাংসদদের সঙ্গে কথা বলেছি। দু’দিনের মধ্যে অনুমোদন না পেলে রেল মন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে।’’ রেলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের কথা পৌঁছে যায় উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের জিএম অফিস পর্যন্ত। এনজেপির এডিআরএম পাথপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘অমৃতসরের দুর্ঘটনার পরে রেলবোর্ড এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নিরাপত্তার কিছু শর্ত মেনে অনুমোদন দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে কাটিহার ডিভিশন থেকে।’’ পুজোর আর দেরি নেই। সাত দিনে অনুমোদন না এলে অনশন ও অবরোধের হুমকি দিয়েছে ক্লাবের কর্মকর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durga puja CPM Congress TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE