পর্যটকদের হয়রানি রুখতে ২০১৫ সালে রাজ্য সরকার গতিধারা প্রকল্পে শিলিগুড়িতে ১০০ টি নো রিফিউজাল ট্যাক্সির পারমিট দিয়েছিল। প্রশাসনের আশা ছিল এই পদক্ষেপ শহরের পরিবহণ ব্যবস্থাকে চাঙ্গা করবে। এর জন্য প্রতিটি ট্যাক্সিতে ১ লক্ষ টাকা করে ভর্তুকি দিয়েছিল সরকার। সেই হিসাবে দেওয়া হয়েছিল মোট ১ কোটি টাকা ভর্তুকি।
কিন্তু এখন শহরের রাস্তায় নো রিফিউজাল ট্যাক্সি চোখে পরছে না বলেই জানাচ্ছেন শহরবাসীরা। সরকারি ভর্তুকির টাকায় কেনা ট্যাক্সিগুলো কোথায় উধাও হয়ে গেল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোও। অনেকেরই অভিযোগ, ভর্তুকির টাকায় ট্যাক্সি কিনে মালিকরা এখন নিজেদের মতন করে ব্যবসা করছেন। দার্জিলিংয়ের পরিবহণ আধিকারিক রাজেন সুনদাস বলেন, ‘‘ভর্তুকিতে ট্যাক্সি দেওয়া হয়েছিল শিলিগুড়ির জন্যই। সেগুলো কী পরিস্থিতিতে রয়েছে তা খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।’’
যে সময় নো রিফিউজাল ট্যাক্সিগুলোর পারমিট দেওয়া হয়েছিল সেই সময় আঞ্চলিক পরিবহণ বোর্ডের দার্জিলিং জেলার সদস্য ছিলেন তৃণমূল নেতা মদন ভট্টাচার্য। তিনি জানান, ট্যাক্সিগুলোকে দার্জিলিং জেলায় চলাচলের জন্য পারমিট দেওয়া হয়েছিল। তবে পরে পরিবহণ দফতর থেকে মালিকরা বিভিন্ন জেলায় চলাচলের জন্য সেই পারমিটগুলোকে পরিবর্তন করে নিয়েছেন। মদন বলেন, ‘‘শহরের কথা মাথায় রেখেই সরকার ভর্তুকি দিয়েছিল। তবে ট্যাক্সিগুলো শহরের কোনও কাজে লাগল না।’’ এই পরিস্থিতিতে সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সিপিএমের দার্জিলিং জেলা কমিটির সদস্য শঙ্কর ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘ভর্তুকি দেওয়ার পরে সরকার কেন ট্যাক্সিগুলো শহরে চালানোর জন্য কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করল না? কেনই বা তাদের পারমিট পরিবর্তন করা হল?’’
মূলত শিলিগুড়ি হয়েই পর্যটকরা দার্জিলিং, সিকিম বা ডুয়ার্সে যাতায়াত করেন। ভাড়া নিয়ে পর্যটকদের হয়রানির অভিযোগও বিভিন্ন সময় সামনে এসেছে। নিউ জলপাইগুড়ি রেল স্টেশনের সামনে থাকা প্রিপেইড ট্যাক্সি বুথ থেকেও প্রয়োজনের সময় ট্যাক্সি পাওয়া যায় না বলেই অভিযোগ পর্যটকদের একাংশের। এই পরিস্থিতিতে শহরে নো রিফিউজাল ট্যাক্সি চালু থাকলে পর্যটক হয়রানি অনেকটাই কমানো যেত বলেই মত পর্যটন ব্যবসায়ী সম্রাট সান্যালের।
বিজেপির উত্তরবঙ্গের পর্যবেক্ষক রথীন বসু বলেন, ‘‘নো রিফিউজালের নামে সরকারি ভর্তুকি নিয়ে জনগণকে পরিষেবা না দিয়ে নিজেদের ব্যবসা করার গুটিয়ে নিয়েছেন অনেকই। গোটা বিষয়টির তদন্ত করা হোক। কারা কারা ভর্তুকি পেয়েছে তাঁদের পরিচয় প্রকাশ করা হোক।’’ তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা কোর কমিটির ও জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ বোর্ডের সদস্য কৃষ্ণচন্দ্র পাল বলেন, ‘‘যখন গাড়িগুলি দেওয়া হয়েছে তখন আমি বোর্ডের সদস্য ছিলাম না। তবে ভর্তুকিতে গাড়ি নিয়ে বেশিরভাগ মালিকই জনগণের স্বার্থ দেখছে না। যদিও কয়েকটি গাড়ি রাস্তায় চলছে। আমরা বিষয়টি দেখছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy