Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
সড়ক অবরোধ ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী

সেতুর লোহায় বাইক আটকে জখম ২

প্রশাসন ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাস্তার মধ্যে যে চার জায়গায় নতুন সেতু তৈরি করা হচ্ছে, দুর্ঘটনা মূলত সেই জায়গাগুলিতেই ঘটছে। বিশেষ করে রাতের দিকে ওই অংশে কাজ চলছে তা বুঝতে পারছেন না অনেক চালকই।

ফাঁস: নির্মীয়মাণ সেতুর লোহায় আটকে মোটরবাইক। নিজস্ব চিত্র

ফাঁস: নির্মীয়মাণ সেতুর লোহায় আটকে মোটরবাইক। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বোলপুর শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৯ ০১:৫৪
Share: Save:

সংস্কার শুরুর পরে থেকেই মহিদাপুরের রাস্তায় একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে। রবিবার রাতেও একটি দুর্ঘটনায় নির্মীয়মাণ সেতুতে আটকে যায় একটি মোটরবাইক। গুরুতর আহত হন চালক এবং আরোহী। এর পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার পথ অবরোধ করেন গ্রামবাসীরা। ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে ওই পথে বারবার দুর্ঘটনা ঘটার বেশ কিছু সূত্র খুঁজে পেয়েছে। গ্রামবাসীরাও দুর্ঘটনা রুখতে তাঁদের দাবির কথা জানান। এর পরেই বোলপুরের মহকুমাশাসক অভ্ৰ অধিকারী, বোলপুর থানার আইসি সঞ্জীব চক্রবর্তী, পূর্ত দফতরের আধিকারিক, ঠিকাদার সংস্থার প্রতিনিধি এবং কয়েক জন গ্রামবাসী একটি বৈঠক করেন। সেখানে মহিদাপুর গ্রামবাসীরা তাঁদের সমস্যা ও দাবির কথা জানান। সব পক্ষের তৎপরতায় বিকেলের মধ্যেই দাবি অনুযায়ী কাজ শুরু হয়েছে ওই রাস্তায়।

প্রশাসন ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাস্তার মধ্যে যে চার জায়গায় নতুন সেতু তৈরি করা হচ্ছে, দুর্ঘটনা মূলত সেই জায়গাগুলিতেই ঘটছে। বিশেষ করে রাতের দিকে ওই অংশে কাজ চলছে তা বুঝতে পারছেন না অনেক চালকই। তাতেই বিপত্তি ঘটছে। আলাদা করে কোনও ব্যবস্থা না থাকার ফলেই এমন হচ্ছে বলে দাবি স্থানীয়দের। দুর্ঘটনা এড়াতে চারটি সেতুর কাছেই দু’টি করে আটটি হ্যালোজেন আলো লাগানোর কথা জানিয়েছে প্রশাসন। এ ছাড়াও সেতুর পুরো অংশে বাঁশ দিয়ে ঘিরে লাগানো হচ্ছে ‘ইলিউমিনেটিং টেপ’। এতে দূর থেকে গাড়ির হেডলাইটের আলো পড়লেই চালকেরা বুঝতে পারবেন সেখানে কাজ চলছে। সেতুর কোন পাশ দিয়ে রাস্তা ঘুরে যাচ্ছে, তা বোঝানোর জন্যও উপযুক্ত ব্যবস্থা করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

গ্রামবাসীরা জানান, শ্রীনিকেতন থেকে গোপালনগর পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তায় আট মাস ধরে সংস্কারের কাজ চলছে। সংস্কারের পাশাপাশি রাস্তার চার জায়গায় সেতুও হচ্ছে নতুন করে।

তাঁদের অভিযোগ, সেই জায়গাগুলিতেই একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে। কয়েক মাসের মধ্যে পথ দুর্ঘটনায় একাধিক লোক ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারিয়েছেন। কয়েকটি দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন কয়েক জন। সকাল হলেই সেতুর নীচের অংশ ঘুরে দেখা এক রকম অভ্যাস হয়ে গিয়েছে গ্রামবাসীদের।

শ্রীনিকেতন থেকে গোপালনগর যাওয়ার পথে প্রথম দু’টি সেতুর ডান দিক দিয়ে, তিন নম্বর সেতুর বাম দিক দিয়ে এবং শেষ সেতুটির ডান দিক দিয়ে রাস্তা কিছুটা ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু চালকেরা হঠাৎ করে বুঝতে পারছেন না বিষয়টি। এর ফলেই সোজা গিয়ে পড়ছেন সেতুর তলায়। গ্রামবাসীদের কথায়, ‘‘শেষ পর্যন্ত কিছুটা হলেও দুর্ঘটনা এড়ানোর ব্যবস্থা হওয়ায় আমরা খুশি। এর আগেই এই ব্যবস্থা করা হলে এতগুলি মানুষ মারা যেতেন না।’’ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রাস্তা সংস্কার এবং সেতু নির্মাণের কাজ শেষ করার দাবিও রেখেছেন তাঁরা।

এ বিষয়ে পূর্ত দফতরের সহকারী ইঞ্জিনিয়ার মনিরুল মল্লিক বলেন, ‘‘কাজ শুরুর সময় সব জায়গায় সতর্কবার্তা দেওয়া বোর্ড লাগানো ছিল। রাতে আলোর ব্যবস্থাও করা হয়েছিল। কিন্তু দুষ্কৃতীরা সে সব খুলে নিয়ে গিয়েছে। তবে গ্রামবাসীদের দাবি মেনে ফের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হবে। প্রশাসনিক আশ্বাসের পরে অবরোধ তুলে নেন গ্রামবাসীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Accident Injury
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE