Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

কড়া হতেই সরছে গোঁজ

দল কড়া হতেই মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে শুরু করেছেন তৃণমূলের গোঁজ প্রার্থীরা। গত দু’দিনে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন রঘুনাথপুর ২ ব্লকের জেলা পরিষদের সাত জন তৃণমূল প্রার্থী। ওই ব্লকের জেলা পরিষদের দু’টি আসনে তৃণমূলের ১২ জন নেতা কর্মী মনোনয়ন জমা করেছিলেন।

শুভ্রপ্রকাশ মণ্ডল
রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৮ ০৯:৫১
Share: Save:

দল কড়া হতেই মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে শুরু করেছেন তৃণমূলের গোঁজ প্রার্থীরা। গত দু’দিনে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন রঘুনাথপুর ২ ব্লকের জেলা পরিষদের সাত জন তৃণমূল প্রার্থী। ওই ব্লকের জেলা পরিষদের দু’টি আসনে তৃণমূলের ১২ জন নেতা কর্মী মনোনয়ন জমা করেছিলেন। এখন অতিরিক্ত প্রার্থীরা সরতে শুরু করায় স্বস্তিতে দলীয় নেতৃত্ব।

তবে উদ্বেগ পুরোপুরি কাটেনি তিন জন এখনও না সরে দাঁড়ানোয়। রঘুনাথপুর ২ ব্লকের পর্যবেক্ষক তথা রঘুনাথপুরের পুরপ্রধান ভবেশ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য দাবি করছেন, আজ, শনিবার ওই তিন জনও মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেবেন। অন্য দিকে তৃণমূলের নেতৃত্বের কপালে ভাঁজ ফেলে রেখেছে রঘুনাথপুর ১ ও পাড়া ব্লক। সেখানে জেলা পরিষদের গোঁজ প্রার্থীরা শুক্রবার পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। ফলে, আজ মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে কী হয়— সেই দিকেই তাকিয়ে সবাই।

পঞ্চায়েত নির্বাচনের আবহে রঘুনাথপুর ২ ব্লকে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তুঙ্গে উঠেছিল। ওই ব্লকের জেলা পরিষদের দু’টি আসনের জন্য দল প্রতীক দিয়েছে ব্লক সভাপতি বরুণ মেহেতা ও পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সভাপতি মনীষা ঘোষকে। কিন্তু দলীয় নির্দেশ অমান্য করেই মনোনয়ন জমা করেছেন তৃণমূলের ১২ জন। খবরটা পৌঁছেছিল দলের রাজ্য নেতৃত্বের কাছেও। পাড়ার বিধায়ক উমাপদ বাউড়ির সঙ্গে কথা বলে দ্রুত বিষয়টি মেটানোর ব্যবস্থা করতে বলা হয় পুরপ্রধান ভবেশ চট্টোপাধ্যায়কে।

তার পরে ব্লকে গিয়ে নেতা কর্মীদের নিয়ে পুরপ্রধান ও বিধায়ক দফায় দফায় বৈঠক করেন। ভবেশবাবু বলেন, ‘‘ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতে কোনও গোঁজ প্রার্থী থাকবেন না। না হলে গোঁজ প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলের এই নির্দেশ স্পষ্ট কথায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল রঘুনাথপুর ২ ব্লকের নেতা কর্মীদের। তার পরেই অতিরিক্ত প্রার্থীরা মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে শুরু করেছেন।” এখন বাকি তিন জনও সরে দাঁড়ালে পুরোপুরি চিন্তা মেটে নেতৃত্বের।

পাড়া ব্লকে জেলা পরিষদের আসন একটি। সেখানে মনোনয়ন জমা করেছেন ব্লকের কার্যকরী সভাপতি মনোজ সাহাবাবু ও সংখ্যালঘু নেতা রেয়াজ আহমেদ। দল সূত্রের খবর, জেলা নেতৃত্বের একাংশ ওই আসনে মনোজকে প্রার্থী হিসাবে চাইছিলেন। অন্যদিকে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কাউকে প্রার্থী করার দাবি তোলে তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেল। তার পরেই রেয়াজ মনোনয়ন জমা করেন। তিনি বলছেন, ‘‘পাড়া ব্লকে দলের বড় অংশের কর্মী সমর্থকেরা আমাকে জেলা পরিষদে প্রার্থী করতে চেয়েছেন বলেই মনোনয়ন করেছি। দলের কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে প্রতারণা করতে পারব না বলে মনোনয়ন প্রত্যাহার করছি না।” প্রয়োজনে নির্দল হিসাবে দাঁড়াবেন বলে দাবি করেছেন রেয়াজ।

রঘুনাথপুর ১ ব্লকে জেলা পরিষদের দু’টি আসন। তাতে মনোনয়ন জমা করেছেন দুই বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষ অনাথবন্ধু মাজি ও হাজারি বাউড়ি। সূত্রের খবর, প্রতীকও দেওয়া হয়েছে তাঁদের। দু’জনের নামে বিভিন্ন এলাকায় পুরোদমে শুরু হয়েছে দেওয়াল লিখন। এ দিকে, অনাথবন্ধুর আসনে গোঁজ হয়ে দাঁড়িয়ে পড়েছেন জেলা তৃণমূলের অন্যতম সহসভাপতি জয় বন্দ্যোপাধ্যায়। হাজারির আসনে মনোনয়ন জমা করেছেন দলেরই আর এক কর্মী। শুক্রবার পর্যন্ত তাঁদের কেউই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি।

রঘুনাথপুরের বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউড়ি এই ব্যাপারে সরাসরি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি জানান, জেলা পরিষদে কারা প্রার্থী হবেন সেটা জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো দেখছেন। শান্তিরামবাবু বলেন, ‘‘সর্বত্রই বিক্ষুব্ধ প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে। অনেকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে শুরু করে দিয়েছেন। বাকিরাও করবেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE