Advertisement
০৭ মে ২০২৪

চিঠিতে ‘নির্মল জেলার’ অভিজ্ঞতা লিখবে পড়ুয়ারা

জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানিয়েছেন, ওই দিন জেলার স্কুলে স্কুলে আয়োজিত অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরা নির্মল জেলা গড়ে তোলা নিয়ে তাদের অনুভুতি ও তাদের যোগদানের অভিজ্ঞতা জানিয়ে প্রিয়জনকে চিঠি লিখবে। শুধু চিঠিলেখাই নয়, একই বিষয়ের উপরে ছবি আঁকা প্রতিযোগিতাও হবে।

চিঠি লেখা ও ছবি আঁকার প্রতিযোগিতার উদ্বোধন। নিজস্ব চিত্র

চিঠি লেখা ও ছবি আঁকার প্রতিযোগিতার উদ্বোধন। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৮ ০৩:৪৬
Share: Save:

রবীন্দ্রনাথের দীর্ঘ জীবনের বিভিন্ন পর্বে লিখিত অগণিত চিঠিপত্র প্রাচুর্যের দিক দিয়ে রবীন্দ্র-রচনা সমগ্রের অন্যতম সেরা অংশ। বিশ্বকবির প্রয়াণ দিবস ২২ শ্রাবণে জেলার ২ লক্ষ ৪৩ হাজার পড়ুয়াকে চিঠি লেখা প্রতিযোগিতায় সামিল করতে চাইছে জেলা প্রশাসন। তবে প্রেক্ষিতটা ভিন্ন। প্রশাসন আয়োজিত ওই প্রতিযোগিতার বিষয় হল ‘নির্মল বীরভূম’।

জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানিয়েছেন, ওই দিন জেলার স্কুলে স্কুলে আয়োজিত অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরা নির্মল জেলা গড়ে তোলা নিয়ে তাদের অনুভুতি ও তাদের যোগদানের অভিজ্ঞতা জানিয়ে প্রিয়জনকে চিঠি লিখবে। শুধু চিঠিলেখাই নয়, একই বিষয়ের উপরে ছবি আঁকা প্রতিযোগিতাও হবে। তৃতীয় থেকে সপ্তম শ্রেণির সাড়ে তিন লক্ষ পড়ুয়া তাতে যোগ নেবে। নির্মল বীরভূমের উদযাপন উপলক্ষে জেলা প্রশাসন ঠিক কী ধরণের কর্মসূচি নিয়েছে সংবাদমাধ্যমকে ডেকে মঙ্গলবার সে কথা স্পষ্ট করেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) দীপ্তেন্দু বেরা এবং স্বচ্ছ ভারত অভিযানের বাংলা সংস্করণ মিশন নির্মল বাংলার জেলা নোডাল অফিসার বুদ্ধদেব পান।

চলতি বছরের ২৯ মার্চ রাজ্যের মধ্যে ১১তম জেলা হিসেবে নানা অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে নির্মল বীরভূম উৎসব পালিত হয়েছিল জেলায়। প্রশাসন জেলাকে নির্মল ঘোষণা করে উৎসব পালন করলেও রাজ্যের স্বীকৃতি ছিল না। তবে জেলা প্রশাসনের দাবি, সমস্ত ধাপ শেষে রাজ্যের পক্ষ থেকে জেলাকে নির্মল ঘোষণা করা ছিল শুধু সময়ের অপেক্ষা। জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানিয়েছেন, বীরভূমকে নির্মল করা যথেষ্ট কঠিন ছিল। কারণ, জেলায় ৭০ শতাংশ মানুষ (রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি) মুক্ত শৌচে অভ্যস্ত ছিলেন। বাড়িতে বাড়িতে (প্রায় সাড়ে ৫ লক্ষ) শৌচাগার গড়ে তা ব্যবহার করতে উদ্বুদ্ধ করা মোটেই সহজ কাজ ছিল না। সকলের মিলিত প্রয়াসেই এটা সম্ভব হয়েছে। সেই মিলিত প্রয়াসে যোগ দিয়েছিল স্কুল পড়ুয়ারাও। তাই পড়ুয়াদের অবদানের কথা মনে রেখে চিঠি লেখা ও ছবি আঁকার মতো সৃষ্টিশীল কাজের প্রতিযোগিতায় মাধ্যমে ফের এ কাজে নামতে চাইছে জেলা প্রশাসন।

প্রশাসন শৌচাগার গড়ে নির্মল হওয়ার (যদিও অনেক পরিবারে শৌচাগার তৈরি হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে) পরে দ্বিতীয় ধাপে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে চায় বিভিন্ন পঞ্চায়েতে। সঙ্গে প্লাস্টিক ব্যবহারে রাশ টেনে সেই প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে। তার আগে জনসংযোগ বাড়ানোর জন্য ফের পড়ুয়াদের উপরেই আস্থা রাখল প্রশাসন।

এডিএম দীপ্তেন্দু বেরা ও নোডাল বুদ্ধদেব পানরা জানিয়েছেন, এক সঙ্গে সমস্ত স্কুলে প্রতিযোগিতা হবে। সঙ্গে রয়েছে ডাক বিভাগের সাহায্য। চিঠি লেখার পরে টিকিট সাঁটানো এনভেলপ কাছের ডাকঘরে পৌঁছে দেবেন শিক্ষকেরাই। পড়ুয়ারা যে ঠিকানায় যাঁকে চিঠি পাঠাতে চায় সেখানেই পৌঁছবে চিঠি। তবে ডাকবিভাগে পাঠানোর আগে স্কুলের শিক্ষকেরাই সেরা তিন পত্র লেখক পড়ুয়াকে বাছবেন। একই ভাবে সেরা তিনটি ছবি বাছাই হবে। স্কুলে স্কুলে সেরা চিঠি ও ছবি থেকে ব্লক, মহকুমা ও জেলার প্রতিযোগিতা হবে। এখানে সেরাদের নির্বাচনের দায়িত্ব নেবেন জেলা প্রাশাসনের কর্তারা। স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যে যদি তেমন কোনও পরামর্শ থাকে যা ভবিষ্যতে কাজে লাগাবে সেটাও গ্রহণ করবে প্রশাসন।

আজ, বুধবার থেকেই বিডিওরা তাঁর এলাকার শিক্ষকদের ডেকে চিঠি লেখার জন্য তৈরি বিশেষ এমভেলপ তুলে দেবেন। ৪২৮২ স্কুলের পড়ুয়ারা তাতে যোগ দেবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Suri Clean District Letter Copetition
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE