Advertisement
১৯ মার্চ ২০২৪

সদাইপুরে দুই মন্দিরে চুরি, তদন্তে সিআইডিও

পুলিশের আন্তরিক চেষ্টা দেখে আরও কিছুটা সময় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন তাঁরা। 

চিনপাইয়ে তদন্তে এল সিআইডি। শুক্রবার। —নিজস্ব চিত্র।

চিনপাইয়ে তদন্তে এল সিআইডি। শুক্রবার। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সদাইপুর শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৮ ০৮:০০
Share: Save:

সদাইপুরের চিনপাই গ্রামে দুই কালী মন্দিরে চুরির কিনারা করতে পুলিশকে শুক্রবার বেলা ১২টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলেন বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী। পুলিশের আন্তরিক চেষ্টা দেখে আরও কিছুটা সময় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন তাঁরা।

কারণ মন্দিরে চুরির তদন্তে জেলা পুলিশের সঙ্গেই ময়দানে নেমেছে সিআইডি। শুক্রবারই কলকাতার ভবানীভবন থেকে সিআইডি-র একটি দল চিনপাইয়ে আসে। নেতৃত্বে ছিলেন ফিঙ্গারপ্রিন্ট বিশেষজ্ঞ প্রকাশ মুখোপাধ্যায়। পুলিশ সূত্রে খবর, বেশ কয়েক জন সন্দেহভাজনকে থানায় ডেকে ইতিমধ্যেই জি়জ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ।

বীরভূমের পুলিশ সুপার কুণাল আগরওয়াল এ দিন বলেন, ‘‘সিআইডি ঘটনা খতিয়ে দেখেতে এসেছে। চুরির কিনারা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’

দুই সিভিক ভলান্টিয়ার পাহারায় থাকা সত্ত্বেও বুধবার, দীপাবলির রাতে চিনপাই গ্রামে দু’টি সিদ্ধেশ্বরী মন্দিরের দরজার তালা ভেঙে কালীর অঙ্গ থেকে বহুমূল্যের অলঙ্কার চুরি করে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। বৃহস্পতিবার ঘটনা জানাজানি হতেই বিক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীরা। পুলিশকে হেনস্থা, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর চলে। তাঁদের ক্ষোভের প্রধান কারণ ছিল, মাত্র চার দিন থাকে প্রতিমা। এই সামান্য কটা দিন কেন পুলিশ দেবীর অলঙ্কারের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে পারল না। অপরাধীদের ধরে গয়না উদ্ধারের দাবিতে এর পরে ঘণ্টা চারেক জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন গ্রামের পুরুষ-মহিলারা। জনতার দাবি মেনে পুলিশ কুকুর আনিয়ে তদন্ত শুরু হয়। ‘ক্লোজ’ করে দেওয়া হয় সদাইপুর থানার ওসিকে।

ঘটনার অভিঘাত দেখে এ বার সহযোগিতা নেওয়া হল সিআইডি-র। স্থানীয় সূত্র বলছে, সিআইডি আসবে, সেটা ঠিক হয় বৃহস্পতিবারই। গ্রামের কিছু মানুষকে সদাইপুর থানায় ডেকে সেটা জানিয়েছিলেন খোদ পুলিশ সুপার। এ দিন দুপুর ১টা নাগাদ প্রথমে থানায়, পরে চিনপাই গ্রামে আসে সিআইডির তদন্তকারী দল। জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, চিনপাই গ্রামের মন্দিরে গিয়ে সেবায়েত ও এলাকার কয়েক জন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলেছেন তদন্তকারীরা। বিভিন্ন খুঁটিনাটি বিষয় জানতে চেয়েছেন। কোথায়, কী ভাবে কোন ব্যাঙ্কের লকারে থাকে মায়ের গয়না, তা-ও জেনেছেন সিআইডির আধিকারিকেরা। বড় সিদ্ধেশ্বরী মন্দির থেকে বাজেয়াপ্ত করা কাঠের বড় টুল, রাম দা, প্রণামী বাক্স-সহ বেশ কিছু জিনিস, যে-সবে দুষ্কৃতীদের আঙুলের ছাপ থাকতে পারে, সেগুলি থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছেন। হাতের ছাপের নমুনা নেওয়া হয়েছে মন্দির থেকেও।

পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছিল, ওই বড় টুলই দেবীকে গয়না পরানোর কাজে লাগত। বুধবার গভীর রাতে সেটাই দুষ্কৃতীরা গয়না খোলার কাজে লাগিয়েছে। কিছু কাটাকুটি করতে ব্যবহার করেছিল মন্দিরে ঝোলানো রাম দা। প্রণামী বাক্সটাকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল। পরে টাকা বের করে সেটিকে ফেলে দিয়ে যায়। পুলিশ কুকুরও তেমন ইঙ্গিত দিয়েছিল। এগুলি সূত্র হিসাবে কাজে লাগবে বলে পুলিশ মনে করছে। তবে তদন্ত ঠিক কোন পর্যায়ে তা নিয়ে পুলিশকর্তারা মুখ খোলেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE