—ফাইল চিত্র।
প্রশাসনের আশঙ্কা সত্যি করে পরিযায়ী শ্রমিকদের ঢল নামতেই বীরভূম জেলায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি মাসের প্রথম দিকে জেলায় করোনা রোগী ছিলেন তিন জন। সেই সংখ্যা বর্তমানে ৮৪। রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতেই জেলা প্রশাসন থেকে স্বাস্থ্য দফতরে উদ্বেগ বেড়েছে। যে হারে করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, তাতে আক্রান্তদের চিকিৎসার জায়গা খোঁজাই এখন প্রশাসন ও স্বাস্থ্য আধিকারিকদের মূল ভাবনা।
জেলার একমাত্র লেভেল ওয়ান কোভিড হাসপাতাল, বোলপুরে গ্লোক্যাল হাসপাতালে মোট ৫০টি শয্যার মধ্যে ৪০টি সাধারণ। বাকি ১০টি শয্যার মধ্যে ৫টি সিসিইউ, আইসিসিইউ এবং এইচডিইউ শয্যা আছে। মঙ্গলবার রাতে জেলায় এক সঙ্গে ২৪ জন পরিযায়ী শ্রমিকের করোনা পজ়িটিভ হওয়ার রিপোর্ট আসে। এই ২৪ জন এবং আগের ১৩ জন মিলিয়ে মোট ৩৭ জন করোনা আক্রান্ত বুধবার পর্যন্ত বোলপুর কোভিড হাসপাতালে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, বুধবার রাত এবং বৃহস্পতিবার সকাল মিলিয়ে বীরভূমে আরও ৩০ জন করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। এই ৩০ জনের মধ্যে রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার ২৩ জন। বাকি ৭ জন বীরভূম স্বাস্থ্য জেলার। এই ৩০ জনকে চিকিৎসার জন্য কোথায় নিয়ে যাওয়া হবে, তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন জেলার স্বাস্থ্য কর্তারা। বৃহস্পতিবার দুপুরে সিউড়িতে জেলা প্রশাসনিক আধিকারিকেরা জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। ছিলেন বিডিও-রাও।
এ দিকে, যে ৩০ জনের করোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট এসেছে, তাঁদেরকে চিকিৎসার জন্য সংশ্লিষ্ট বিএমওএইচ এবং স্থানীয় থানার পুলিশ হোম-কোয়রান্টিন থেকে তুলে আনলেও কোথায় ভর্তি করানো হবে, তা নিয়ে দোটানায় পড়েন। কারণ তখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি এবং প্রশাসনিক বৈঠক চলছে। সূত্রের খবর, প্রথমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, করোনা আক্রান্তদের বোলপুর কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হবে। পরবর্তীতে জানানো হয়, সেখানে জায়গা অভাবে দুর্গাপুরের সনকাতে নিয়ে যাওয়া হবে। কিছু পরে সেখানেও জায়গা অভাবে তারাপীঠের কাছে করোনা আইসোলেশন কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে বলে ঠিক হয়। এর পরে সিদ্ধান্ত বদল করে আবার জানানো হয়, রামপুরহাটে জাতীয় সড়কের ধারের নার্সিহোমে (লেভেল ২ কোভিড চিকিৎসাকেন্দ্র) নিয়ে যাওয়া হবে।
শেষ খবর পাওয়া অনুযায়ী, ৩০ জন আক্রান্তের মধ্যে যাঁদের উপসর্গ বেশি, তাঁদের দুর্গাপুরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। যাঁদের মৃদু উপসর্গ, তাঁদের বোলপুরে এবং উপসর্গহীন করোনা রোগীদের রামপুরহাটের নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হবে। বোলপুরের হাসপাতাল থেকে বেশ কয়েক জনের ছাড়া পাওয়ার কথা। তাই সেখানে কিছু শয্যা ফাঁকা হবে।
তবে, জেলায় যে হারে করোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট আসা শুরু হয়েছে, তাতে অচিরেই বিকল্প কোনও ব্যবস্থা করতে হবে বলে বুঝতে পেরেছে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর। আশার কথা, বুধবার জেলা প্রশাসনের বৈঠকে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য রামপুরহাটের ওই নার্সিংহোমকে পুরোদস্তুর লেভেল ওয়ান কোভিড হাসপাতাল হিসেবে গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাজ্যের অনুমোন মিললেই সেখানে পরিকাঠামোগত কাজ শুরু হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy