Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
pakurtala market

বাজারে ভিড়, বিপদের শঙ্কা

দুবরাজপুর শহরের পাকুড়তলা মোড়ের সেই ঘিঞ্জি বাজারই এখন মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রশাসনের।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২০ ০৩:৪৫
Share: Save:

কয়েকটি গলির মধ্যেই সীমিত বাজার। বিক্রি হচ্ছে মাছ, নানা আনাজ, ফল থেকে মুদিখানার জিনিসপত্র। অস্বাস্থ্যকর ঘিঞ্জি সেই বাজারে একে অপরের গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে প্রয়োজনীয় জিনিস কিনছেন শতাধিক মানুষ। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় লকডাউন পরিস্থিতিতে যা অত্যন্ত উদ্বেগের।

দুবরাজপুর শহরের পাকুড়তলা মোড়ের সেই ঘিঞ্জি বাজারই এখন মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রশাসনের। শহরের চল্লিশ হাজারেরও বেশি মানুষ তো বটেই একমাত্র বাজারের উপর নির্ভরশীল আশপাশের গ্রাম-গঞ্জের বাসিন্দারাও। করোনা সংক্রমণ রুখতে একে অপরের মধ্যে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে যেখানে জেলার বেশ কিছু বাজার-হাটকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে, জনস্বার্থে দুবরাজপুর বাজারকে এখনও স্থানান্তরিত করা গেল না কেন ইতিমধ্যেই সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। করোনা নিয়ে ব্লক প্রশাসন ঠিক কি ধরনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে খোঁজ নিতে প্রশাসন, পঞ্চায়েত সমিতি, পুলিশ ও খাদ্য দফতরকে নিয়ে শুক্রবার একটি বৈঠক করেন বোলপুরের সাংসদ অসিত মাল। সেখানেও বাজার সরানোর প্রসঙ্গ উঠেছে। উপস্থিত সকলেই সমস্যা নিয়ে একমত হয়েছেন।

সমস্যার কথা মেনে নিয়ে সিউড়ি সদরের মহকুমাশাসক রাজীব মণ্ডল বলেন, ‘‘বাজার সমিতির সঙ্গে আলোচনা করে শনিবারের মধ্যেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। হয় বাজার স্থানান্তরিত হবে অথবা কয়েকটি ভাগে ভাগ করে দেওয়া হবে শহরের বিভিন্ন অংশে।’’ শহরের বাসিন্দাদের কথায়, দুবরাজপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রেই সরকারি কৃষক বাজার গড়ে উঠেছে। ঝাঁ চকচকে সেই পরিকাঠামো তৈরি হয়ে একই ভাবে পড়ে আছে। সেখানে আনাজ বাজারে না আসেন বিক্রেতা, না আসেন ক্রেতা। ঘটা করে উদ্বোধনের চার-পাঁচ বছরেও ছবিটা বদলায়নি দুবরাজপুর সরকারি কৃষক বাজারের। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকের দাবি, দীর্ঘদিনের জায়গা ছেড়ে অন্যত্র সরে আসা নিয়ে বিক্রেতাদের মানসিক বাধা তো আছেই। ছিল রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সদিচ্ছার অভাবও।

চাষির উৎপাদিত ফসল মধ্যসত্ত্বভোগীদের এড়িয়ে ন্যায্য দামে ক্রেতার হাতে তুলে দিতেই তৈরি হয়েছিল কিসান মান্ডি বা কৃষক বাজার। ২০১৫ সালে দুবরাজপুর স্টেশন রোড সংলগ্ন সরকারি কৃষি খামারের জায়গায় প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে ওই কৃষক বাজারটি নির্মিত হয়েছে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ের সুবিধার কথা ভেবে। কিন্তু দু-এক দিন বাজার বসলেও তারপর আর সেটা চলেনি। পরিকাঠামো এত উন্নত হওয়া সত্বেও শতাব্দী প্রাচীন দুবরাজপুর বাজার ছেড়ে আনাজ বিক্রেতারা কিসান মান্ডিতে সরে আসেননি।

প্রশাসনের পক্ষ থেকেও চাষিদের কাছে আবেদন করা হয়, দুবরাজপুর কিসান মান্ডিতে যাতে নিয়মিত তাঁরা নিজেদের জমির ফসল নিয়ে বসেন। কিন্তু কাজ হয়নি তাতে। করোনা আতঙ্কে যদি বাজারের একটা অংশকেও সেখানে সরিয়ে আনা সম্ভব হয় তাহলে সকলের জন্যই ভাল। তবে শুধু কৃষক বাজারেই নয়, ভিড় এড়াতে শহরের অন্য অংশেও বাজারের একটা অংশকে সাময়িকভাবে সরানো যায় কিনা সেই চিন্তাও রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Novel Coronavirus Coronavirus Lockdown Dubrajpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE