Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
‘ফেসিলিটি কোয়রান্টিন’
Coronavirus in West Bengal

একঘেয়েমি দূর করার আয়োজন

জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, ‘‘জেলার সমস্ত ব্লক মিলিয়ে আপাতত ৩৯টি জায়গায় ‘কমিউনিটি কোয়রান্টিন’-এর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২০ ০৩:৫৯
Share: Save:

‘কমিউনিটি কোয়রান্টিন’-এ থাকা ব্যক্তিদের মনোরঞ্জনের জন্য টিভির বন্দোবস্ত করছে পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন। জেলার ২০টি ব্লকের প্রতিটিতে একটি করে ‘কমিউনিটি কোয়রান্টিন’-কে ‘ফেসিলিটি কোয়রান্টিন’-এ রূপান্তরিত করা হয়েছে। বসানো হয়েছে টিভি। কোথাও রাখা হয়েছে গল্পের বই। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, কয়েকটি ‘ফেসিলিটি কোয়রান্টিন’-এ প্রয়োজনে শীতাতপ নিয়ন্ত্রক বসানো হতে পারে।

জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, ‘‘জেলার সমস্ত ব্লক মিলিয়ে আপাতত ৩৯টি জায়গায় ‘কমিউনিটি কোয়রান্টিন’-এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিটি ব্লকের একটি ‘কোয়রান্টিন’-কে ‘ফেসিলিটি কোয়রান্টিন’-এ রূপান্তরিত করা হয়েছে। কেউ কেউ ঘরবন্দি থাকতে চাইছেন না। একঘেয়েমি কাটাতে টিভি লাগানো হচ্ছে। কোথাও রাখা হচ্ছে গল্পের বই। কোথাও খবরের কাগজ। মানসিক ভাবে চাঙ্গা রাখতে চিকিৎসকেরা তাঁদের সঙ্গে কথা বলছেন।’’

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ভিন্ রাজ্য থেকে আসা অনেককেই ‘কমিউনিটি কোয়রান্টিন’-এ পাঠানো হচ্ছে। সেখানে তাঁদের থাকতে হচ্ছে ১৪ দিন। তাঁদের গতিবিধি নজরে রাখতে বসানো হয়েছে ‘ক্লোজ়ড সার্কিট ক্যামেরা’। প্রশাসন সূত্রে খবর, জেলায় শুক্রবার পর্যন্ত ‘ফেসিলিটি কোয়রান্টিন’-এ রয়েছেন ৩৩৯ জন। প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, মূলত জেলার ২০টি ব্লক সদরে থাকা ‘কমিউনিটি কোয়রান্টিন’-গুলিকেই ‘ফেসিলিটি কোয়রান্টিন’-এ রূপান্তরিত করার কথা ভাবা হয়েছে। বাকি ‘কমিউনিটি কোয়রান্টিনে’ পর্যবেক্ষণে থাকা ব্যক্তিদের প্রয়োজনে ‘ফেসিলিটি কোয়রান্টিন’-এ পাঠানো হবে। জেলাশাসকের বক্তব্য, ‘‘কমিউনিটি কোয়রান্টিন-এ থাকা ব্যক্তিরা যাতে মানসিক উদ্বেগ কাটিয়ে উঠতে পারেন, সেই লক্ষ্যে সেখানে মনো-বিশ্লেষক পাঠানোর কথা ভেবেছি। আমরা চাই, ওঁরা মানসিক ভাবে চাঙ্গা থাকুন।’’

জেলায় ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ থাকা ব্যক্তির সংখ্যা ইতিমধ্যেই ১৮ হাজার ছাড়িয়েছে। তাঁদের গতিবিধি নজরে রাখছেন নিচতুতলার স্বাস্থ্যকর্মীরা। ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ থাকা কেউ ঘরে থাকতে না চাইলে তাঁকে ‘কমিউনিটি কোয়রান্টিন’-এ পাঠানো হবে। জেলাশাসক জানান, ওই স্বাস্থ্যকর্মীরা বৃহস্পতিবার ১২,৫৫৯ জনের বাড়িতে গিয়ে তাঁদের খবর নিয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে কাজ করছেন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরাও।

পুরুলিয়া শহরের সাউথ লেকরোডের একটি বেসরকারি হাসপাতাল ও একটি নার্সিং হোমকে ‘স্পেশাল কোভিড হাসপাতাল’ হিসেবে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য দফতর। জ্বর, গলাব্যথা, শ্বাসকষ্টের উপসর্গে ভোগা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তাঁদের ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। সেখানে আট জনকে ভর্তিও করানো হয়েছে।

জেলাশাসক বলেন, ‘‘ওই হাসপাতালের একটি ফ্লোরে করোনা-আক্রান্তদের চিকিৎসা করা হবে। সেখানে যাওয়ার জন্য পৃথক একটি লিফ্‌ট থাকবে। সেখানে যাতায়াতের পৃথক রাস্তাও থাকবে।’’ ওই হাসপাতালের বাইরে জনবসতি রয়েছে। তাই চিকিৎসা-বর্জ্য যাতে বাইরে না আসে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকবে প্রশাসন।

শিলিগুড়িতে ঘুরতে যাওয়া বাঁকুড়ার জয়পুরের এক যুবককে এ দিন বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালের ‘আইসোলেশন ওয়ার্ড’-এ ভর্তি করানো হয়েছে। জেলা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার তড়িৎকান্তি পাল বলেন, “ওই যুবকের জ্বর ও গলায় ব্যথা রয়েছে। ২৩ মার্চ শিলিগুড়ি থেকে ফিরেছেন। পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। লালা-রসের পরীক্ষা এখনই করা হচ্ছে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE