চিহ্ন: ছিনতাইকারীর মারে ক্ষত। —নিজস্ব চিত্র।
স্ত্রীকে মোটরবাইকে চাপিয়ে বাড়ি ফেরার পথে ছিনতাইকারীদের কবলে পড়লেন এক ব্যবসায়ী। ছিনতাইকারীরা ওই ব্যবসায়ীকে মারধর করে তাঁর মোটরবাইক নিয়ে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ। বুধবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে নলহাটি-মুরারই রাস্তায় ডুরিয়া গ্রামের কাছে। ওই ব্যবসায়ী মুরারই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
আক্রান্ত ব্যবসায়ীর নাম খালেদ হোসেন। পেশায় কাঁসা পিতলের থালা বাসনের এই ব্যবসায়ীর বাড়ি মুরারইয়ের হাসপাতালপাড়ায়। বুধবার বিকেলে স্ত্রী উম্মহানিকে সঙ্গে নিয়ে নলহাটি পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পাথরকলপাড়ায় গিয়েছিলেন খালেদ হোসেন। কিছু থালা-বাসন মোটরবাইকের পিছনে বেঁধে স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। খালেদের দাবি, ‘ডুরিয়া গ্রামের কাছে একটি মোটরবাইকে চার দুষ্কৃতী তাঁদের পথ আটকায়। খালেদ বাইক দাঁড় করাতেই দুষ্কৃতীরা ধারাল অস্ত্র তাঁর ও তাঁর স্ত্রীর গলায় ধরে। ওই ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘আমাদের দু’জনকে রাস্তার দু’ধারে নিয়ে যায়। আমার মাফলার দিয়ে আমারই মুখ বেঁধে দেয়। এর পরে লোহার রড দিয়ে পায়ে ও ঘাড়ে বেধড়ক মারে। দুষ্কৃতীরা হুমকি দেয়, ‘চেঁচালে তোর বউকে মেরে ফেলব!’ ভয়ে বাধা দিতে পারিনি।’’
পুলিশকে খালেদ হোসেন জানিয়েছেন, তাঁর কাছ থেকে টাকা, মোবাইল এবং সোনার আংটি ছিনিয়ে নেয় দুষ্কৃতীরা। স্ত্রীর কাছে থাকা টাকাও কেড়ে নেয়। তার পর মোটরবাইক নিয়ে পালিয়ে যায়। খালেদের স্ত্রী বলেন, ‘‘আমাকে রাস্তা থেকে নামিয়ে জমির মধ্যে নিয়ে মুখ চেপে ধরে থাপ্পর মারে দুষ্কৃতীরা। বলে, চেঁচালে স্বামীকে মেরে ফেলবে। ভয়ে মুখ দিয়ে কোনও আওয়াজ বার করিনি। কিছুক্ষন পর আমাকে টানতে টানতে রাস্তা পার করে স্বামীর কাছে ফেলে দিয়ে যায় ওরা।’’
বুধবার রাতের অভিজ্ঞতা এখনও আতঙ্কে রেখেছে ওই দম্পতিকে। বৃহস্পতিবার ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে ওই ব্যবসায়ী জানান, দুষ্কৃতীরা পালিয়ে গেলে তিনি বারবার পথ চলতি মানুষজনকে থামানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তাঁদের বিপদে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেননি। উম্মহানির কথায়, ‘‘স্বামীর পায়ে দুষ্কৃতীরা এমন মেরেছিল, তিনি তখন ঠিক করে দাঁড়াতে পারছিলেন না। আধ ঘণ্টা পরে এক সাইকেল আরোহী আমার স্বামীকে সাইকেলের পেছনে বসিয়ে নিয়ে যান। আমি প্রায় এক কিলোমিটার হেঁটে ঘুসকিরা গ্রামে পৌঁছে একটা টোটো ধরে মুরারই থানায় আসি।’’ ওই রাতেই মুরারই থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। মুরারই থানার পুলিশ ওই দম্পতিকে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সরেজমিন তদন্ত করে। খালেদের জুতোজোড়া ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া যায়। মুরারই গ্রামীণ হাসপাতালে ওই দম্পতির চিকিৎসা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তবে এখন দুষ্কৃতীদের হদিস মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy