Advertisement
০৯ মে ২০২৪

বীরভূমে গড় রক্ষা হলেও নিজের ওয়ার্ডেই হার অনুব্রতের

গোটা রাজ্যে দলের ফল খারাপ হলেও বীরভূমে গড় রক্ষা হয়েছে তৃণমূলের। দু’টি আসনে জয়ও এসেছে।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

বাসুদেব ঘোষ
বোলপুর শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৯ ০১:১৫
Share: Save:

দুবরাজপুরের মতোই লোকসভা নির্বাচনের ফলের নিরিখে বোলপুর পুরসভা হাতছাড়া হয়েছে তৃণমূলের। বোলপুর শহরে ২০টি ওয়ার্ডের মধ্যে অন্তত ১৫টিতে বিজেপি-র প্রাপ্ত ভোটের চেয়ে তারা পিছিয়ে রয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রেই খবর। বাদ যায়নি এমনকি খোদ জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের ওয়ার্ডও!

গোটা রাজ্যে দলের ফল খারাপ হলেও বীরভূমে গড় রক্ষা হয়েছে তৃণমূলের। দু’টি আসনে জয়ও এসেছে। কিন্তু বীরভূম ও বোলপুর লোকসভা আসনে যত ব্যবধানে জিতবেন বলে বারবার দাবি করেছেন অনুব্রত, তার ধারেকাছেও পৌঁছতে পারেনি দলের ফল। বরং রাজ্যের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এই জেলাতেও বিজেপি-র ভোট বিপুল পরিমাণ বেড়েছে। আর সেটাই এখন দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে তৃণমূল শিবিরের। বিজেপি-র সেই হাওয়াতেই নড়বড়ে হয়ে গিয়েছে খোদ জেলা তৃণমূল সভাপতির খাসতালুকও! তৃণমূল নেতাদের একাংশই বলছেন, আশার কথা একটাই যে, দুবরাজপুরের মতো বোলপুরে অন্তত পুর-নির্বাচন আসন্ন নয়।

বোলপুরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের নিচুপট্টিতে বাড়ি অনুব্রত মণ্ডলের। এই ওয়ার্ডে ৪ হাজার ৬০০ জন ভোটার রয়েছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, এই ওয়ার্ডে ভোটে হেরেছে তৃণমূল। হার যে হয়েছে, তা মানছেন অনুব্রত নিজেও। তাঁর কথায়, ‘‘মানুষ রায় দিয়েছে, মানুষের রায় মাথা পেতে নিতে হবে। পাঁচ থেকে ছ’টি ওয়ার্ডে আমরা এগিয়ে আছি। বাকিগুলোতে পিছিয়ে। পরের পুরভোটে আরও কয়েকটি ওয়ার্ড বাড়বে। সেই ভোটে এই ভোটের ফলের কোনও প্রভাব পড়বে না।’’

শুধু অনুব্রতই নন, তাঁর ঘনিষ্ঠ রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহকেও হারতে হয়েছে নিজের ওয়ার্ডে। তাঁর বাড়ি যেখানে, সেই ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে প্রায় তিন হাজার ভোটার রয়েছে। বিজেপির এই ভোট বৃদ্ধি প্রসঙ্গে চন্দ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘২০১৪ সালেও তো বিজেপি-র পক্ষে হাওয়া ছিল। কিন্তু তার প্রভাব এতটা পড়েনি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এ বছর ধর্মের নিরিখে ভোট হয়েছে অনেকটাই। তাই এই ফল হয়েছে। তবে বোলপুর পুরসভা ভোটে এই রেজাল্ট কাজ করবে না।’’

একই ভাবে বোলপুর ৬ নম্বর ওয়ার্ডে থাকেন দুবরাজপুর বিধানসভার বিধায়ক নরেশ বাউড়ি। এই ওয়ার্ডে ৬ হাজার ভোটার রয়েছেন। এখানেও তৃণমূল পিছিয়ে আছে বিজেপি-র চেয়ে। বিজেপি-র ভোট-বৃদ্ধির প্রসঙ্গে অনুব্রতের ব্যাখ্যা, ‘‘সিপিএমের পুরো ভোটটাই বিজেপিতে পড়েছে। গতবার রামচন্দ্র ডোম কত ভোট পেয়েছিলেন, আর এ বছর কত পেয়েছেন, সেটা দেখলেই বোঝা যাবে সেই ভোটটা কোথায় পড়েছে।’’

লোকসভা ভোটের ফল পর্যালোচনা করে তৃণমূল নেতারা দেখেছেন, শুধু বোলপুর শহরই নয়, পার্শ্ববর্তী কঙ্কালীতলা, আলবাঁধা, রূপপুর, কসবা অঞ্চলেও লিড পেয়েছে বিজেপি। দলের জেলা সহসভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘তৃণমূলের অত্যাচারের প্রতিবাদে এবং বিজেপির উপরে আস্থা রেখেই মানুষ এককাট্টা হয়ে জবাব দিয়েছেন। আগামী দিনেও মানুষ জবাব দেবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE