নিজের তৈরি টেলিস্কোপ নিয়ে ছাদে নিখিলেশ পাল।—নিজস্ব চিত্র।
ছেলে থেকে বুড়ো, মহাকাশ ব্যাপারটা সকলের কাছেই রহস্য। তা জানার, চেনার ইচ্ছা সকলের মনেই থাকে। কিন্তু গল্পচ্ছলে তা বোঝানোর লোক সহজে মেলে না। নিজের গরজে সেই গুরুদায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন শান্তিনিকেতনের ‘গ্যালিলিও’ নিখিলেশ পাল। রতনপল্লীতে ভাড়াবাড়ির ছাদে রোজ রাতে কচিকাঁচাদের নিয়ে মহাকাশ রহস্য গল্পের আসর বসান তিনি।
আদতে বর্ধমানের চকদিঘির বাসিন্দা নিখিলেশবাবুর ছোট থেকেই মহাকাশ এবং তারামণ্ডল নিয়ে প্রবল ঝোঁক। সেই ঝোঁকই পরবর্তীকালে পেশা হয়ে দাঁড়ায় তার। কলকাতার বিড়লা তারামণ্ডলে ইভনিং অ্যাস্ট্রোনমি নিয়ে পড়াশোনা করেছেন তিনি। পরে সেখানে অধ্যাপনার কাজও করেন। গবেষণা করেন বেঙ্গালুরু ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব অ্যাস্ট্রোফিজিক্সে। হায়দরাবাদ তারামণ্ডলেও অধ্যাপনা করেন একটা সময়। সেখান থেকে অবসর নিলেও বর্তমানে জগদানন্দ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।
নিজে হাতেই দূরবীক্ষণ যন্ত্র তৈরি করেন নিখিলেশবাবু। নক্ষত্র, গ্রহ, উপগ্রহ দেখার ব্যাপারে নিজের যেমন ঝোঁক রয়েছে, তেমনই পাড়ার খুদে পড়ুয়া এমনকি প্রবীণদেরও টেনে আনেন। তার জন্য ছাদে নিজের তৈরি ১০ ইঞ্চি ডায়ামিটার এবং ২৬০ মিলিমিটার ব্যাসের একটি ‘রিফ্লেক্টিভ টেলিস্কোপ’ও বসিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: বঙ্গভোটের ‘মন কি বাত’! মোদীর মুখে অরবিন্দ থেকে মনোমোহন বসু
আরও পড়ুন: নয়া কৃষি আইন শিকলমুক্তির, রাজধানীতে বিক্ষোভের মধ্যেই বার্তা প্রধানমন্ত্রীর
মহাকাশের প্রতি টান ও ভালবাসাই স্থানীয়দের সঙ্গে নিখিলেশবাবুর দূরত্ব কমিয়ে দিয়েছে। তাঁর কাছে পাঠরত এক খুদে পড়ুয়ার মা বলেন, ‘‘নিজের বাচ্চাকে নিয়ে প্রায়ই নিখিলেশবাবুর বাড়িতে যাই আমি। ওখানে মহাকাশ সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে ও শিখতে পারে ও। পরবর্তী কালে এ গুলো কাজে লাগতে পারে। বাচ্চাদের কাছে নিখিলেশবাবু ‘গ্যালিলিও দাদু’।’’
দীর্ঘ দু’দশকেরও বেশি সময়ে প্রায় ২০০টি দূরবীক্ষণ যন্ত্র তৈরি করেছেন নিখিলেশবাবু। তাঁর তৈরি সবথেকে বড় দূরবীক্ষণ যন্ত্রটি ৪০ ইঞ্চি ডায়ামিটারের। সেটি কলকাতার বাড়িতে রাখা আছে। বাঁকুড়া বা পুরুলিয়ার কোনও মহাকাশ চর্চা প্রতিষ্ঠানকে সেটি দেওয়ার ইচ্ছে রয়েছে তাঁর। এতে মহাকাশ নিয়ে পড়ুয়াদের আগ্রহ আরও বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy