জমজমাট: আদ্রায় প্রচারের মঞ্চে কচিকাঁচাদের সঙ্গে। ছবি: সঙ্গীত নাগ
উৎসবে অনুষ্ঠানে হিন্দি ছবির নায়ক-নায়িকাদের চাক্ষুষ করেছে রঘুনাথপুর। এ বারে দেখছে, একই মঞ্চে তৃণমূলের হয়ে ভোটের প্রচার করছে শাহরুখ খান, নানা পটেকর এবং সইফ আলি খান। না! আসল শাহরুখ-নানা-সইফ নন। অভিনেতার চরিত্রে অভিনয় করছেন।
নকল। তবে পেশাদার।
মুম্বইয়ের বাসিন্দা প্রশান্ত ওয়ালদে গত বারো বছর ধরে শাহরুখ খানের নকল হিসাবে কাজ করছেন। দৃশ্যত যিনি নানা পাটেকর, পরিচয়ে তিনি শ্রবণকুমার সাকসেনা। বাড়ি মুম্বইতেই। চলনে বলনেও নায়কের নানা কায়দা হুবহু রপ্ত তাঁর। প্রচার করছেন ফিল্মি কায়দাতেই। ছবির সংলাপ বলে। সইফ আলি খান, থুড়ি মহম্মদ সাজিদ এসেছেন আহমেদাবাদ থেকে।
তিন জনেই দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে জলসা করেন। এ বার বাংলা থেকে ডাক পড়েছে লোকসভা ভোটে শাসকদলের হয়ে প্রচার করার জন্য।
তৃণমূল সূত্রে জানা যাচ্ছে, এই চমকের নেপথ্যে রঘুনাথপুরের বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউড়ি। সড়বড়ির একটি দুর্গাপুজোর তিনি অন্যতম উদ্যোক্তা। গত বছর সেখানে এই তিন জনকে এনেছিলেন।
পূর্ণবাবু বলেন, ‘‘জলসায় তিন জনের পারফরম্যান্স দেখার পরেই ভেবেছিলাম ভোটের প্রচারে আনতে হবে।” শাহরুখবেশী প্রশান্ত জানাচ্ছেন, ভোটের প্রচার আগে সে ভাবে করেননি। তিনি বলেন, ‘‘আসল শাহরুখ খান তো এই রাজ্যের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর। এখানে এমন একটা কাজের সুযোগ পাওয়াটা অভিনব বই কি।’’
অবশ্য, পুরুলিয়া জেলার নিরিখে এই ব্যাপারটা নতুন নয়। গত পুরভোটে তৃণমূলের হয়ে প্রচার করার জন্য নকল অমিতাভ বচ্চনকে এনেছিলেন সামিমদাদ খান। তখনও একপ্রস্ত শোরগোল পড়েছিল পুরুলিয়ায়।
দিন চারেক হল মুম্বই থেকে রঘুনাথপুরে এসেছেন তিন বলিউড অভিনেতার ‘নকলেরা’। থাকছেন শহরের একটি হোটেলে।
কী করছেন প্রচারে?
প্রশান্ত বললেন, ‘‘বৃহস্পতিবারই প্রথম প্রচার ছিল। বেনিয়াসোলে। মঞ্চে উঠে সংলাপের ফাঁকে ফাঁকে প্রচারের কথাও গুঁজে দিচ্ছি।’’ যেমন? শাহরুখের ‘বাজিগর’ ছবির একটি সংলাপ বলছিলেন। তার সঙ্গে জুড়ে দিয়েছেন এই রাজ্যের উন্নয়নে মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকার কথা। বছর পঞ্চান্নর শ্রবণ নানার ভঙ্গি নকল করে বলছেন, ‘‘ছেলেমেয়েদের ডাক্তার বানান। ইঞ্জিনিয়ার বানান। কিন্তু ভুল করেও চৌকিদার বানাতে যাবেন না।” হিন্দি ছবি ‘যশবন্ত’-এর সংলাপ একটু অদলবদল করে নিয়ে সেই ঢঙেই বলছেন, ‘‘উস মচ্ছরকো.... উস মচ্ছর কো বঙ্গালমে ঘুসনে মত দেনা।’’
বৃহস্পতিবারের সভার মূল উদ্যোক্তা দলের রঘুনাথপুর ১ ব্লকের যুব শাখার কার্যকরী সভাপতি তুফান রাই জানাচ্ছেন, যে এলাকায় সভা ছিল তার একটা অংশে হিন্দিভাষীদের বসবাস। সভা শুরু হয়েছিল রাত ৮টা নাগাদ। নকল-নায়কদের মঞ্চে উঠতে উঠে রাত ১০টা। তখনও ঠাসা ভিড়।
পূর্ণচন্দ্রবাবু বলেন, ‘‘গ্রামঞ্চলে মানুষজনের সিনেমার প্রতি একটা টান থাকে। রাজনীতির কচকচি তো আমরা বলছিই। কিন্তু এ ভাবে বলায় ফলে সবার বুঝতেও সুবিধা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy