শেখ ফারহাদ।
স্কুলপড়ুয়া দুই বন্ধু খেলতে বেরিয়েছিল। ঘণ্টা দুই পরে এক বন্ধু ফিরে এলেও ফেরেনি অন্য জন। দুশ্চিন্তায় ছিল পরিবার। বিকেলে সেচখালের পাড়ে মেলে সাইকেল ও চটি জোড়া। সোমবার সকালে ওই সেচখাল থেকেই উদ্ধার হল বছর দশেকের শেখ ফারহাদ নামে ওই স্কুল পড়ুয়ার দেহ। মৃত ছাত্রের বাড়ি সিউড়ি শহর লাগোয়া গরুঝোরায়। এই ঘটনায় শোকের ছায়া পরিবার ও এলাকায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ বাড়ি থেকে সাইকেল নিয়ে খেলতে বেরোয় সিউড়ির একটি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ফারহাদ। বাড়িতে বলে গিয়েছিল, পড়শি ও ষষ্ঠ শ্রেণি পড়ুয়া এক বন্ধুর সঙ্গে খেলতে যাচ্ছে। ফারহাদের বাবা শোকার্ত নুর মহম্মদ বলেন, ‘‘বেলা দেড়টা নাগাদ বন্ধু ফিরে এলেও ছেলে ফেরেনি। বন্ধুর পরিবার থেকে জেনেছিলাম, বাড়িতে ফেরার সময় ফারহাদকে সে দেখতে পায়নি বলে জানিয়েছিল। তখনই মনে কু’ডাক দিচ্ছিল। কিন্তু, ছেলের যে এমন মর্মান্তিক পরিণতি হবে কে জানত!’’
ছেলে বাড়িতে খেতে আসেনি, কোথায় গেল, কী বিপদ হল—এমন সাত-পাঁচ ভেবে চরম উদ্বেগের মধ্যে ছিলেন ফারহাদের পরিজনেরা। এর পরেই খোঁজ শুরু হয়। চার দিক তন্নতন্ন করেও ফারহাদের কোনও সন্ধান পাচ্ছিলেন না তাঁরা। শেষে বিকেলে বাড়ি থেকে অনেকটা দূরে সেচখালের সেতুর কাছে ফারহাদের সাইকেল এবং সাইকেলের কাছে চটি জোড়া পড়ে থাকতে দেখেই মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল সকলের। অনুমান করেছিলেন, বাচ্চা ছেলে কোনও ভাবে তলিয়ে গিয়েছে। খবর দেওয়া হয় পুলিশ ও দমকলকে।
খোঁজ শুরু হয় রাতেই। কিন্তু তন্নতন্ন করে খুঁজেও ফারহাদের হদিস মেলেনি। সোমবার সকাল ৬টা নাগাদ সেচখাল ধরে এগোতেই দেখা যায়, খালের জলের মধ্যে উঠে থাকা একটি পাথরে আটকে সংজ্ঞাহীন ফারহাদ। যদি বেঁচে থাকে এই ভেবে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, আগেই মৃত্যু হয়েছে ছেলেটির। সন্তান হারানো পরিবারের একটাই আক্ষেপ, ঠিক কী হয়েছে যদি আগে যদি বলতে পারত ফারহাদের বন্ধু, তা হলে হয়তো তাকে বাঁচানো সম্ভব হত।
কিন্তু, ছোট তো সে-ও। তাই জোর করতে পারেননি কেউ। ফারহাদের পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ না হলেও কী ভাবে ঘটল ঘটনাটি, জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। দেহটি ময়না তদন্তের জন্য সিউড়ি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy