পুরুলিয়া জেলা সংশোধনাগার। ফাইল চিত্র
দূষণ এবং নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও বন্দিদের খাবার তৈরির জ্বালানি হিসেবে ডিজেল ব্যবহৃত হচ্ছে পুরুলিয়া জেলা সংশোধনাগারে। যদিও ২০০৮ সাল থেকেই বিভিন্ন সংশোধনাগারে ডিজেলের ব্যবহার বন্ধ করে গ্যাসে (এলপিজি) রান্না চলছে।
প্রশাসনের বক্তব্য, ‘এলপিজি ইনস্টলেশন সিস্টেম’ তৈরির জন্য বারবার ‘টেন্ডার’ ডাকা হয়েছিল। তবে কোনও বারই ‘টেন্ডার’-প্রক্রিয়ায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক ঠিকাদার অংশ দেননি। ফলে, প্রতিবারই ‘টেন্ডার’ বাতিল করে দিতে হয়। সম্প্রতি ওই কাজের জন্য ফের দরপত্র আহ্বান করেছেন সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ।
নিরাপত্তা এবং দূষণের কথা মাথায় রেখে হাতে গোনা কয়েকটি বাদে রাজ্যের সবক’টি সংশোধনাগারেই এখন ‘এলপিজি’ ব্যবহার করা হয়। প্রথমে কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারগুলিতে ওই ব্যবস্থা চালু হয়েছিল। তারপর শুরু হয় জেলা সংশোধনাগারগুলিতে। পুরুলিয়া সংশোধনাগার অবশ্য ব্যতিক্রম।
ডিজি (কারা দফতর) অরুণ গুপ্ত বলেন, ‘‘নিরাপত্তার স্বার্থেই ডিজেলের পরিবর্তে রান্নার কাজে এলপিজির ব্যবহার শুরু হয়েছে। পুরুলিয়া ছাড়া, দু’-একটি সংশোধনাগারে এখনও সেই ব্যবস্থা করা যায়নি। তবে সেখানে দ্রুত এলপিজি-র ব্যবহার শুরু হবে।’’
কারা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরুলিয়া সংশোধনাগারে ৮৪৮ জন বন্দির থাকার জায়গা রয়েছে। তবে বর্তমানে সেখানে রয়েছেন দেড়শোর মতো বন্দি। সংশোধনাগারে ‘এলপিজি ইনস্টলেশন সিস্টেম’ তৈরির জন্য চলতি বছরের মে এবং অগস্টে দু’বার ‘টেন্ডার’ ডাকা হয়েছিল। প্রথম টেন্ডারে সাড়া দেন এক জন। দ্বিতীয়টিতে এক জনও যোগ দেননি। নিয়ম অনুযায়ী, ‘টেন্ডার’-প্রক্রিয়ায় অন্তত তিন জন যোগ না দিলে তা বাতিল করে দিতে হয়। এ ক্ষেত্রেও তা-ই করতে হয়েছে। রাজ্যের এক কারা-কর্তা জানাচ্ছেন, আগের দু’টি ‘টেন্ডার’-এর শর্ত ছিল, দরপত্রের সঙ্গে ‘সিকিওরিটি ডিপোজিট’ বাবদ ১০ হাজার টাকা জমা দিতে হবে। সাম্প্রতিক ‘টেন্ডার’-এর শর্তে বলা হয়েছে, ‘সিকিওরিটি ডিপোজিট’ জমা দিতে হবে কাজ শুরুর আগে।
পুরুলিয়া জেলের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ডিজেলে রান্না বন্ধ করতে চাই। তাই গত সপ্তাহে তৃতীয় বারের জন্য টেন্ডার ডাকা হয়েছে। আশা করছি, ঠিকাদার পাব।’’ তিনি জানাচ্ছেন, রাজ্যের যে সব সংশোধনাগারে ওই কাজ হয়েছে, সেখানে যে সব সংস্থা কাজ করেছে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
তবে ঠিকাদারদের অনাগ্রহই পুরুলিয়া সংশোধনাগারে ‘এলপিজি ইনস্টলেশন সিস্টেম’ তৈরি না হওয়ার একমাত্র কারণ নয় বলে মনে করছেন কারা-কর্তাদের একাংশ।
এক কর্তার কথায়, ‘‘গ্যাস সিলিন্ডার রাখার জন্য যে ঘরের দরকার, তার জন্য অর্থ বরাদ্দেও দেরি হয়েছে। আমরা পূর্ত দফতরের সঙ্গে কথা বলেছি। ওদের দ্রুত ওই ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার কথা। আশা করছি, জেলে দ্রুত এলপিজি-র ব্যবহার শুরু হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy