Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

পথে হবে দেরি, শঙ্কা

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়ার দিক থেকে ব্যারাজে ওঠার মুখে তিন জায়গায় গাড়ির পথ নিয়ন্ত্রণ করা হবে। ব্যারাজের ৫০০ মিটার দূরে এক বার।

দুর্গাপুর ব্যারাজে।

দুর্গাপুর ব্যারাজে।

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:২৫
Share: Save:

আজ, সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে দুর্গাপুর ব্যারাজের সংস্কার। যাত্রিবাহী গাড়ি একটি লেন দিয়ে যাবে বটে, কিন্তু ধীরে। আর পণ্যবাহী গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া হবে মেজিয়া দিয়ে। ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং পুরুলিয়া জেলা পুলিশকে বাঁকুড়া পুলিশের তরফে বলা হয়েছে, পণ্যবাহী গাড়ি যথাসম্ভব কম এ দিকে ছাড়তে। বাঁকুড়া জেলার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও রবিবার বলেছেন, ‘‘ব্যারাজে যাতে যানজট না হয়, সে জন্য নানা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ কর্মীরাও থাকবেন।’’

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়ার দিক থেকে ব্যারাজে ওঠার মুখে তিন জায়গায় গাড়ির পথ নিয়ন্ত্রণ করা হবে। ব্যারাজের ৫০০ মিটার দূরে এক বার। ২০০ মিটার দূরে আরও এক বার। আর, ব্যারাজের ১০ ফুট দূরে আবার। দুর্গাপুরের দিক থেকে এলে ব্যারাজের ২০০ মিটার দূরে, আর ফুট পনেরো দূরে দু’দফায় গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

সর্বোচ্চ ১০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিতে ব্যারাজের উপরের রাস্তা দিয়ে গাড়ি যাতায়াত করবে। যাত্রী নিয়ে বাস, চার চাকা গাড়ি, মোটরসাইকেল— সব যেতে পারবে। নিষিদ্ধ থাকছে পণ্যবাহী গাড়ির যাতায়াত।

বাঁকুড়া জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যাত্রিবাহী আর পণ্যবাহী গাড়ির পথ আলাদা হয়ে যাবে বাঁকুড়া শহরের হেভির মোড় থেকে । সেখান থেকে পণ্যবাহী গাড়িগুলি বাঁকুড়া-রানিগঞ্জ ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরবে। মেজিয়ার সেতু পেরিয়ে চলে যাবে রানিগঞ্জ। একই পথে পণ্যবাহী গাড়ি আসবে রানিগঞ্জের দিক থেকে বাঁকুড়ায়।

তবে রানিগঞ্জ শহরে রাত দশটার আগে পণ্যবাহী গাড়ি ঢোকার অনুমতি পায় না। সে জন্য, মঙ্গলপুরের কাছে গাড়িগুলিকে রাত পর্যন্ত আটকে রাখা হবে।

পুলিশ জানিয়েছে, পণ্য নিয়ে গাড়ি সোনামুখী হয়ে বর্ধমানের রাস্তাও ধরতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ আছে। সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ওই রাস্তা দিয়ে গাড়িগুলি যেতে পারবে না। এ জন্য বাঁকুড়া সদর থানার তরফে দু’টি জায়গা বাছাই করা হয়েছে। একটি হল রাজারবাগান। অন্যটি, বেলিয়াতোড়ের মারখা। ওই দু’জায়গায় দিনে পণ্যবাহী গাড়ি আটকে রাখা হবে।

বাঁকুড়া আর দুর্গাপুরের মধ্যে প্রচুর মানুষজন রোজ নানা কাজে যাতায়াত করেন। দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে বড়জোড়া আর গঙ্গাজলঘাটির লোক যেমন কাজ করেন, তেমনই বড়জোড়া শিল্পাঞ্চলেও অনেকে আসেন দুর্গাপুরের দিক থেকে। সময়মতো কাজের জায়গায় পৌঁছতে পারবেন কি না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তাঁরা। আবার, দুর্গাপুর থেকে দূরপাল্লার ট্রেন ধরতে বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়ার অনেক মানুষ ব্যারাজ পেরিয়ে যান। গাড়ি চললেও, ব্যারাজ পার হতে যে কতটা সময় লাগবে, ক’দিন না গড়ালে ঠাহর করা মুশকিল। বাঁকুড়ার পাঠকপাড়ার বাসিন্দা সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দুর্গাপুর ব্যারাজে এমনিতেই যানজট নিত্যদিনের সমস্যা। তার উপরে এই ক’দিন গোদের উপরে বিষফোঁড়ার মতো অবস্থা হবে।’’

চিন্তা রয়েছে শিল্পমহলেও। বিভিন্ন কারখানার মালিকেরা জানাচ্ছেন, কাঁচামাল ও উৎপাদিত পণ্য ট্রাকে করে ব্যারাজের উপর দিয়ে যাতায়াত করে। কিন্তু আগামী ক’দিন ঘুরপথে যাতায়াত করায় কাঁচামাল কারখানায় সময়মতো ঢুকবে কি না, এবং তার আঁচ উৎপাদনের উপরে পড়বে কি না— তা নিয়েও প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durgapur Barrage Traffic
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE