Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

এটিএম প্রতারণা করে অনলাইনে কেনাকাটা

ব্যাঙ্ক বা পুলিশের সচেতনতা প্রচারেও ফল হচ্ছে না। ব্যাঙ্ক কর্মীর ভুয়ো পরিচয় দিয়ে গ্রাহকদের কাছে ফোন করে কৌশলে এটিএম-এর গোপন সংখ্যা (পিন) জেনে টাকা তোলার চক্র ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে পুরুলিয়ায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সাঁওতালডিহি শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৭ ১৩:১৫
Share: Save:

ব্যাঙ্ক বা পুলিশের সচেতনতা প্রচারেও ফল হচ্ছে না। ব্যাঙ্ক কর্মীর ভুয়ো পরিচয় দিয়ে গ্রাহকদের কাছে ফোন করে কৌশলে এটিএম-এর গোপন সংখ্যা (পিন) জেনে টাকা তোলার চক্র ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে পুরুলিয়ায়।

গত তিন-চার মাসে পুরুলিয়া জেলায় কয়েকটি এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। তিনটি ক্ষেত্রে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। আরও অন্তত ছ’টি ঘটনায় প্রতারিতরা শেষ পর্যন্ত আর পুলিশের দ্বারস্থ হননি।

পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, জানুয়ারি মাসে রঘুনাথপুরে এক ব্যক্তির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে এই ভাবে লক্ষাধিক টাকা হাতানো হয়। তারপরে একই ঘটনা ঘটেছিল জয়পুর থানা এলাকায়। সম্প্রতি আবার সাঁওতালডিহি থানার এক চাকুরিজীবী দম্পতির দু’টি অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ৯০ হাজার টাকা হাতানো হয়। তিনটি ক্ষেত্রেই পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করলেও কিনারা করতে পারেনি।

পুলিশ সূত্রের খবর, সাঁওতালডিহি বিদ্যুৎকেন্দ্রের এক কর্মী ও তাঁর স্কুল শিক্ষিকা স্ত্রীকে দু’টি নম্বর থেকে ফোন করে পুরুলিয়ারই একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্মীর পরিচয় দিয়ে অ্যাকাউন্ট আপগ্রেড করা হচ্ছে বলে জানানো হয়। সেই জন্য আধার কার্ডের নম্বর-সহ এটিএম কার্ডের পিন জানতে চাওয়া হয়।

পরে দু’জনের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ৯০ হাজার টাকা তুলে অনলাইনে কেনাকাটি করা হয়েছে বলে জানা যায়। রঘুনাথপুর ও জয়পুর থানা এলাকাতেও একই ভাবে টাকা তুলে নেওয়া হয়ছে।

জেলা পুলিশের এক পদস্থ কর্তার কথায়, ‘‘কোনও ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে প্রতারকেরা অন্য অ্যাকাউন্টে টাকা স্থানান্তরিত করলে সেই লেনদেনের তথ্য ব্যাঙ্কের কাছে থেকে যায়। কিন্তু অনলাইনে কেনাকাটার মাধ্যমে টাকা হাতানোয় প্রতারকদের হদিস পেতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।”

সাঁওতালডিহির ঘটনায় ফোন নম্বর ধরে তদন্ত করে পুলিশ এটুকু জানতে পেরেছে, নম্বর দু’টি ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া এলাকার। যে ওয়েবসাইট থেকে কেনাকাটি করা হয়েছিল, তাদের সঙ্গেও পুলিশ যোগাযোগের চেষ্টা করছে।

বিভিন্ন ভাবে ব্যাঙ্ক ও পুলিশ এই ধরনের প্রতারণা সম্পর্কে লোকজনকে সচেতন করার পরেও কেন বার বার এমনটা ঘটছে? পুরুলিয়া জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘কী ভাবে প্রতারণা হচ্ছে, তা লিখে ব্যাঙ্কের সামনে পুলিশ ঝুলিয়ে দিয়েছে। এ ছাড়া আরও নানা ভাবেও সচেতনতার কাজ চলছে। কিন্তু লোকজন নিজে থেকে সজাগ না হলে এটা রোখা যাবে না।’’

কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্মকর্তাও জানাচ্ছেন, ব্যাঙ্ক থেকেও গ্রাহকদের মোবাইলে এসএমএস পাঠিয়ে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে, ব্যাঙ্ক থেকে কেউ কখনই গ্রাহকদের কাছে তাঁদের এটিএম-এর পিন-সহ অ্যাকাউন্টের গোপন তথ্য জানতে চায় না। তারপরেও অনেকে ফোন পেয়ে সব জানিয়ে ফাঁদে পড়ছেন।

পুরুলিয়ার লিড ডিস্ট্রিক্ট ব্যাঙ্ক ম্যানেজার শ্রীকান্ত মাহাতো বলেন, ‘‘প্রতারণা রুখতে আগে গ্রাহকদেরই সজাগ হতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Online shopping Tricker
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE